মতিউরের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির কাতারে রয়েছে ইমরান ভাইয়ের নাম। ইমরানের ভাইয়ের সাথে মতিউরের সেই ছোটবেলা থেকেই ভাব। মতিউর সময় পেলেই ইমরানের ভাইয়ের বাসায় যায়। সম্পর্কে ইমরান ভাই মতিউরের খালাতো ভাই। ছোটবেলা থেকে বড় খালার বাসায় ভালোভাবে যাওয়া বাসা করতো মতিউর এবং এখনো যায়। ইমরানের ভাইয়ের বাসায় মতিউরের রুটিন হল সকাল বেলা যাবে ইমরান ভাইয়ের বাসায়। ইমরান ভাইকে ঘুম থেকে উঠাবে, আড্ডা দিতে দিতে বিকালে বাজাবে। সাধারণ শুক্রবার ইমরান ভাইয়ের বাসায় যায়। কারণ বাকি সব দিনগুলোতে মতিউর টিউশনে থাকে ঠিক একইভাবে ইমরানের ভাইয়েরও টিউশনি ও কোচিং থাকে। প্রায় তিন থেকে চার মাসের মতো হলো আইনের বিষয়ের উপর অনার্স শেষ করে বাহির হয়েছে। উচ্চতার শিক্ষার জন্য এখন ইংল্যান্ডে পড়াশোনা চিন্তা করছে। সবদিক থেকে দুইজনেই ব্যস্ত হওয়ার কারণে আগের মত দেখা করার সুযোগ হয় না। শুক্রবারের মতিউরের মালিবেগে কোচিং থেকে আর ইমরান ভাইয়ের বাসা হচ্ছে যাত্রাবাড়ী।
পৃষ্ঠা - ৪১
জুম্মার নামাজ মতিউর ও ইমরান ভাই একসাথে আদায় করত। রুটিন মোতাবেকে সেই বিকেল বেলা আড্ডা দিয়ে সন্ধ্যার দিকে খেতে যাবে মতিউর ও ইমরান ভাই। যেহেতু ইমরান ভাইয় বয়সে মতিউরের থেকে তিন বছরের বড় এবং সবসময় টাকা পয়সা থাকার কারণে সেই যাতায়াত খরচ এবং খাবারের বিল পরিশোধ করত। তারপর বাসায় আসতে আসতে আনুমানিক রাত ৮ঃ০০ থেকে ৮ঃ৩০ বাজতো। রাত ৯ টার দিকে ইমরান ভাই মশিউর ভাই এবং ইয়াসিন ভাই ও মতিউর রহমান কার্ড খেলতে বসতো। যা প্রায় এগারোটা পর্যন্ত চলত। এখানে বলে রাখা ভালো মশিউর ভাই এবং ইয়াসিন ভাই ইমরান ভাইয়ের আপন দুই বড় ভাই এবং মতিউরের খালাতো ভাই। কার্ড খেলা না হলে ওই দিন ফিফা খেলা হত। ইমরান ভাই অসাধারণ খেলত ফিফা এবং তার সবচেয়ে পছন্দের ভিডিও গেম হলো ফিফা।
পৃষ্ঠা - ৪২
মতিউর মোটামুটি খেলত কিন্তু ইমরান ভাইয়ের সাথে জিতে উঠতে পারতো না। হাতে গোনা কয়েকটি খেলায় মনে হয় মতিউর বিজয় হতে পেরেছিল। মতিউরের হারা নিয়ে কোন সমস্যা ছিল না। মতিউরের শুধু ওই সময়টুকু উপভোগ করত এবং আমি নিশ্চিত ইমরানের ভাই ও মতিউরের সাথে অতিবাহিত সময়টুকু উপভোগ করত। এখন মতিউরের কাছে শুধু এগুলো স্মৃতি।
পুরাতন সময়, পুরাতন দিন সবার কাছে এক হয় না। সবার কাছে স্মৃতি বিজড়িত দিন আছে হয়তো সেটা হতে পারে দুঃসময়ের বা সু - সময়ের। অতীতের দুঃসময়ের স্মৃতি বিজড়িত দিনগুলোর ভোলার জন্যই আমরা সুখে আনন্দের সৃষ্টি করি। যে কোন এক সময় চোখের পানিটাও বলতে পারে দুঃখের না সুখের। হাজারো কষ্টের দিন মতিউর সহ আরো অনেকেই অতিবাহিত করে আসছে। কিন্তু এত কষ্টের মধ্যে হলে ও সামান্য একটা আনন্দের দিন হয়তো অজানা মনে একটু মৃদু হাসি ফুটাতে পারে। মতিউর পাশে পেয়েছে অনেক আপন মানুষ যারা মতিউরের জীবনটাকে তাদের সাথে মিলিয়ে নিয়েছে। এইরকমই একজন মানুষ হল ইমরান ভাই। ইমরানের সাথে মতিউরের দিনগুলো নিয়ে আলাদা একটি বই রচনা করা যাবে। হয়তো কোন দিন ঐরকম ভাবে একটা ধন্যবাদ দেওয়া হয় নিইমরান ভাইকে। কিন্তু সঠিক সময় আসলে মতিউর তা অবশ্যই করবে।
পৃষ্ঠা - ৪৩
STAI LEGGENDO
সত্য দিনের অপেক্ষায়
Saggisticaসোমবার সকাল বেলা ঠিক ছয়টা বাজে। মোবাইলে দেওয়া এলার্ম এর শব্দে চারদিকের মানুষের ঘুম হারাম কিন্তু যার জন্য এলার্ম তার কোন খবর নেই। মা এসে বলল ওই মতিউর উঠবে না নামাজের সময় শেষের দিকে, তোর তো আজ কলেজ ও আছে যাবি না। মতিউর বলল মা আর মাত্র পাঁচটা মিনিট...