“মোবাইলটা ব্যাগে রেখে সামনে তাকিয়ে চল‚ সেরেন। লোকজনের সাথে ধাক্কা লাগবে এভাবে।”
মায়ের সতর্কতামূলক কথাতে আমি খানিকটা বিরক্ত হলাম। ঠোঁটের ডান কোণা ডান গালের দিকে খানিকটা এগিয়ে যদৃচ্ছভাবে অস্পষ্ট বিরক্তির শব্দ করলাম। কিন্তু ইনস্টাগ্রামে স্ক্রলিং করা বন্ধ করলাম না। দৃষ্টি মোবাইলের স্ক্রিনে থাকলেও আশেপাশে অথবা সামনে কেউ আসছে কিনা তা ঠিক'ই অনুমান করতে পারছি।
“সেরেন‚ মোবাইল ব্যাগে রাখো।”
এবার মায়ের বজ্রকণ্ঠ শুনতে পেলাম। একই শব্দে চোখ অক্ষিপল্লবের ভেতরের দিকে খানিকটা উলটে তাঁর কথানুযায়ী মোবাইল ব্যাগে রেখে দিলাম। আমি অসন্তোষ অভিব্যক্তিতে মায়ের মুখপানে তাকালাম।
“এবার খুশি? অতিরিক্ত!”
আমি খানিকটা কঠোরভাবে মা-কে জিজ্ঞাসা করলাম। রাগান্বিত মনোভাবে তাঁকে অতিক্রম করে সম্মুখে হাঁটতে লাগলাম। আশেপাশের দোকানগুলোতে দৃষ্টির নড়াচড়া করতে থেকে ধীর গতিতে হাঁটতে লাগলাম। আকষ্মিক হাতের কনুইতে নরম ও উষ্ণ এক হাতের ছোঁয়া পেলাম। সেদিকে তাকালাম না। প্রয়োজনবোধ করিনি। কারণ হাতের মালিক আমার নিজের মা সে সম্পর্কে আমি নিশ্চিত।
“সুইটহার্ট‚ রাগ করার আগে একটিবার চিন্তা করো। হঠাৎ যদি কেউ মোবাইলটা টান দিয়ে নিয়ে চলে যেত তখন কি করতে?”
মায়ের মিষ্টি কণ্ঠস্বর সবসময় আমার বরফের ন্যায় রাগকে নিমিষেই তরলে পরিণত করে। এবং মা এই সুযোগের ব্যবহার সবসময়-ই করে থাকেন।
“মম্! তুমিও নেতিবাচক চিন্তাভাবনার আগে একটিবার আশেপাশে তো তাকিয়ে দেখো।”
আমার কথাতে এখনো অবধি বিরক্তিভাব প্রকাশ পেল। আমি মায়ের দিকে তাকিয়ে আমার বাম দিকে হাতের ইশারায় একটি মেয়েকে দেখালাম। সে ইনস্টাগ্রামের রিলস্ বানাতে ব্যস্ত। তার মোবাইলটি একটি পিলারের সাথে হেলান দিয়ে রাখা। মেয়েটি এবং তার মোবাইলের মাঝে মিটার খানেকের মতো দূরত্ব।
“দেখছ? সে কীভাবে বেখেয়ালে মোবাইল এতটা দূরে রেখে রিলস্ বানাচ্ছে? সে তো চুরি হবার ভয় পাচ্ছে না। তাহলে আমার হাত থেকে কীভাবে নিবে?”
YOU ARE READING
শ্বাপদসংকুল
Mystery / Thrillerঅপরিচিত নাম্বার থেকে একের পর এক ম্যাসেজ পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ে সেরেন। ম্যাসেজে অজ্ঞাত ব্যক্তি অদ্ভুত তাকে সম্বোধন করতে একটি নাম ব্যবহার করে। এরপর পরিচিতদের সাথে একের পর এক অপ্রত্যাশিত দূর্ঘটনা ঘটলে সেরেন দুশ্চিন্তায় জর্জরিত হয়ে উঠে। কিন্তু ভয়ার্ত নয়।...