Mr. Mystery

0 0 0
                                    

ভয়াতুর অভিব্যক্তিতে বসে নিজের হাতের নখ কামড়াচ্ছে লাল কেশী ও শ্বেতাঙ্গী দায়া। ও খানিকক্ষণ পরপর চঞ্চল চোখ তুলে আমার দিকে সেকেন্ড কয়েকের জন্য তাকাচ্ছে। ওর বিপরীতের চেয়ারটাতে বসে আমি ওর প্রতিটি অঙ্গের চলাচল এবং ওর মুখভঙ্গি দেখছি। টেবিলের উপর থাকা চায়ের কাপের চা ইতোমধ্যে শীতল শরবতে পরিণত হয়েছে নিশ্চয়। অদ্ভুত এক নীরবতা।
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাসের সাথে আমি প্রশ্ন করলাম‚ “কার্টারের সাথে তোমার শেষ যোগাযোগের বিষয়ে বলতে পারবে?”
“হ্যাঁ‚” অল্প শব্দের জবাবের সাথে ওর মাথাও তাল মিলিয়ে নেচে উঠল। “সপ্তাহ খানেক আগে যখন টেড্রস অসুস্থ হয়েছিল।”
আমার কপাল কুঞ্চিত হলো‚ “ট্রেডস?”
“আমাদের ছেলে।” আমি বুঝে মাথা নাড়লে দায়া প্রশ্ন করে‚ “কার্টার…ও কী করেছে?”
যখন দায়া ইতোমধ্যে মৃত কার্টারের নাম উচ্চারণ করল তখন তার উচ্চারণে ঘৃণার স্পষ্ট এক সুর আমি উপেক্ষা করতে পারলাম না। হয়তো আমি কার্টার এবং দায়ার ব্যক্তিগত বিষয় সম্পর্কে অবগত এজন্য এমনটা ঘটছে।
“সফল হয়নি। তবে সে যা করেছিল তার জন্য দুনিয়াতে শাস্তি পেয়েছে। বাকিটা ঈশ্বর জানেন।”
আমার উত্তর শোনার পর দায়া ওর দৃষ্টি সরিয়ে একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলল। আমি যে কার্টারের মৃত্যুর সংবাদ ওকে জানিয়েছি তা বুঝার মতো বুদ্ধিমতী মনে হলো। দায়া নিজেকে সামলে নিতে মিনিট দুয়েক সময় নিল। ওর চোখজোড়া যখন আমার উপর আবারও স্থানান্তরিত হলো তখন ও উপলব্ধি করতে পারল যে আমার দৃষ্টি ওর উপর তখনও স্থির।
“কার্টারের কৃতকর্মের জন্য ট্রেডসকে শাস্তি দিবেন না। আমি—।”
দায়ার কথার মাঝে বিচ্ছেদের সৃষ্টি করে আমি আকষ্মিক রাশভারি কণ্ঠে বললাম‚ “অতোটা নিষ্ঠুর আমি নই যে বারো বছর বয়সী এক নিষ্পাপ ফুলকলি পরিস্ফুটিত হওয়ার আগে আমি উপড়ে ফেলব। প্রকৃতির নিয়মে শুকানো আগ পর্যন্ত ওর পরিচর্যার দায়িত্ব আমি গ্রহণ করলাম। ”
স্থির হলো দায়া‚ স্থির হলো ওর চোখের দৃষ্টি। আশ্বস্ত না করতেও যেন ও আমার কথায় ভরসা খুঁজে পেল। গম্ভীর কণ্ঠস্বরে দায়া ফের প্রশ্ন করল‚
“আমার কাজ?”
দায়ার বুদ্ধিমত্তার আরেক উদাহরণ পেয়ে আমার ঠোঁটের কোণা দুই গালের দিকে স্মিতভাবে প্রসারিত হলো।

You've reached the end of published parts.

⏰ Last updated: Nov 06 ⏰

Add this story to your Library to get notified about new parts!

শ্বাপদসংকুলWhere stories live. Discover now