উর্মি

695 1 0
                                    

দেবাংশু বেরিয়ে যাওয়ার পরেই বিছানা ছাড়ে উর্মি। তার আগে দেবাংশুর বানিয়ে দেওয়া চা বিছানায় বসে বসেই খায়। দেবাংশু হোস্টেলে ছিলো, তা ছাড়া চাকরী জীবনেও অনেকদিন একলা একলা ছিলো, ফলে অনেকটাই self-dependent. দেবাংশু সকালে ঘুম থেকে ওঠে সাড়ে ছটায়। টয়লেট থেকে ফিরে একটু free hand exercise, yoga, meditation করে। সাড়ে সাতটার মধ্যে স্নান সেরে জামাকাপড় পড়ে নেয়। এরপর কোনোদিন টোস্টারে দুটো পাওরুটী টোস্ট করে একটু পরিজ লাগিয়ে খেয়ে নিলো আবার কোনোদিন দুধ গরম করে কেলগ্স দিয়ে মেরে দিলো। এরপর দুকাপ জল গরম করে দুটো গ্রীন টিএর পাউচ ফেলে একটা উর্মিকে দিয়ে আরেকটা দু'তিন চুমুকে মেরে দৌড়ে নেমে যায়। এখনো অফিস থেকে গাড়ী পায় নি। হয়তো খুব শীঘ্রই পেয়ে যাবে। ততদিন পাবলিক ট্র্যান্সপোর্টই ভরসা।
বিয়ের পর দু'এক বছর অফিস বেরোনোর সময় খুব সোহাগ চলতো। দরজারআড়ালে দু-চারটে চুমু চুরি, একটু বুকে হাত রাখা, একটু পাছা টিপে দেওয়া, তারপর ব্যালকনি থেকে বাই বাই করা এবং চুমু ছুঁড়ে দেওয়া। এখন ওসব পাট চুকে-বুকে গেছে। তাই দেবাংশু বেরোনো অবধি বিছানায় গড়িয়েই কাটায় সে। তারপরই লাফিয়ে উঠে প্রথমে সায়নকে ঘুম থেকে তোলে। সে এক লম্বা লড়াই চলে, প্রতিদিন। সারাদিন দুষ্টুমি করে তখনো ঘুমিয়ে কাদা ছোট্ট সায়ন। সেই অবস্থায় তাকে মুখে ব্রাশ গুঁজে কমোডে বসিয়ে দেয় উর্মি। প্রতিদিন পটি করার অভ্যাস করাতে বলেছেন ডক্টর।
ব্রেকফাস্টের ব্যাপারটা উর্মি খুব সিম্পল করে দিয়েছে। ছেলেকে ওটসের অভ্যাস করিয়ে দিয়েছে। দুধ গরম করে ঢেলে দিলেই হলো। ছেলেকৈ এক বাওলে ওটস দিয়ে, টিভি চালিয়ে কার্টুন চ্যানেল খুলে দেয়। ছেলেকে জামা জুতো পরাতে পরাতে ভাবে, আজ সে জিন্স পরবেই। দু' মাস হয়ে গেলো কলকাতায় এসেছে সে। সতীলক্ষী সেজে রয়েছে। হয় সালোয়ার কামিজ নয় সারা শরীর ঢাকা শাড়ী। আজ সে ফিরে যাবে তার ব্যাঙ্গালুরুর জীবনে, যেখানে উর্মি জিন্স থেকে শুরু করে ক্যাপরী, মিডি, লং স্কার্ট সবই পরতো। আজ আবার ফিরে পাবে সেই মুক্ত জীবন, সেই স্বাধীনতা। এ কি বললো, ও কি ভাবলো, এসব নিয়ে আর চিন্তা করবে না সে। তাড়াতাড়ি ওয়ার্ড্রব খুঁজে একটা wrangler jeans বার করলো উর্মি। তারপর ঢুকে গেলো টয়লেটে।

ফুলের গন্ধে আসে ভ্রমর ১৮+Where stories live. Discover now