মনে একটা অদ্ভুত খুশি অনুভূত হয় সুদীপা র। একটু মলিন হেসে বলে –
আমার বাবা মা অনেক ছোট বেলায় আমাকে ছেড়ে চলে যায়। বড়ো হয়েছি মামার বাড়িতে। মামার দুই ছেলে মেয়ে ছিল। আর্থিক ভাবে খুব সচ্ছল ছিলনা মামার সংসার। মামিমা হয়তো সেই কারণেই আমাকে মেনে নিতে পারেনি। মামার অবহেলা আর মামিমার গঞ্জনা শুনতে শুনতে বড়ো হয়েছি। মামার মেয়ের বিয়ে হয়ে যায় আগে। মামার ছেলেও বিয়ে করে কাজের সূত্রে বউ নিয়ে বাইরে চলে গেলো। সে মা বাবা কে দেখতো না। কখনো সখনো টাকা পাঠাতো মামা কে। আমার বয়স তখন 28। আমার বিয়ে দেওয়ার মত পরিস্থিতি মামার ছিল না। তখনই একদিন মামা এসে বললো একটা ছেলে নাকি আমাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়েছে। আমার কিছু বলার ছিল না। মামা যা ঠিক করবে আমাকে তাই মেনে নিতে হবে। এভাবেই একদিন মন্দিরে তোর বাবার সাথে আমার বিয়ে হয়ে গেলো।
ঈশান চুপ করে সুদীপা র কথা শুনছিল। ওর বাবার কথা উঠতেই প্রশ্ন করলো –
বাবার সাথে তোমার মামার পরিচয় কিভাবে হলো?তোদের একটা বাড়িতে নিচের তলায় আমরা ভাড়া থাকতাম। তোর বাবা ভাড়া আদায় করতে মাসে একবার করে যেত। মামাই তোর বাবাকে আমায় বিয়ে করার জন্যে অনুরোধ করে। তোর বাবা প্রথমে রাজি হয়নি। কিন্তু পরে কোনো ভাবে রাজি হয়। আমাদের বয়সের ব্যবধান অনেকটাই তুই তো জানিস। তোর বাবার তখন প্রায় 52 বছর বয়স।
তোমার মামা মামী এখন থাকে না এখানে?
না। ওরা দাদার কাছে চলে গেছে। ওখানেই থাকে। তোর বাবা ছাড়া এই জগতে আর আর কেও ছিল না আমার।
ঈশানের মনটা ভারী হয়ে গেলো। বুকের ভেতরে যেনো একটা পাথর জমতে শুরু করেছে।
সুদীপা আবার বললো –
তোর বাবা খুব ভালো মানুষ ছিলেন। আমার খুব খেয়াল রাখতেন। কোনোদিন কোনো কষ্ট হতে দেয়নি আমার। ধীরে ধীরে মানুষটাকে যখন ভালোবেসে ফেললাম ঠিক তখনই…
গলা ধরে এলো সুদীপা র। একটু থেমে আবার বললো।
উনি চলে যাবার পর আমি ডিপ্রেসন এ চলে যাই। কেও তো ছিল না পাশে থাকার মত। ধীরে ধীরে ড্রিংক করা শুরু করি।
ঈশানের নিজেকে অপরাধী মনে হয়। অনুসূচনা হচ্ছে ওর। ও তো নিজেও সুদীপা র থেকে দূরে থেকেছে। কথা বলতে চাইলেও বার বার এড়িয়ে গেছে। ঈশানের খুব কান্না পেলো। ঈশান আর ওখানে বসে থাকতে পারলো না। ও বললো –
তুমি আজ একটু রেস্ট নাও। আমার একটু পড়া আছে। আমি কাল কলেজ থেকে ফিরে আবার তোমার কথা শুনবো।
সত্যি শুনবি ঈশান? আমি তোকে সব বলতে চাই। সুদীপা ধরা গলায় বললো।
ঈশান সুদীপা র হাত টা নিজের হতে নিয়ে বললো –
হ্যাঁ শুনবো। আজ আসি। রাতে খাবার খাওয়ার সময় ডেকো।
এই বলে ঈশান চলে গেলো নিজের রুমে।
YOU ARE READING
Half Wives
FantasyIts a insect bold story. Read it own your risk. 18+ গল্পটা একজন অজানা লেখকের, আমার ভালো লেগেছে তাই এখানে সংরক্ষণ করে রাখছি।