EIGHTEENTH

742 2 0
                                    

সুদীপা উঠে ঈশানের সাথে ওর নিজের রুমে এলো। দরজা লাগিয়ে ঈশান বললো..
তুমি রাজি হয়ে গেলে?
সুদীপা বললো…
দেখ কোনো কিছুই যখন সাভাবিক নেই আর, তখন এটাতেই বা সমস্যা কোথায়। তোর ম্যাম এর বয়স প্রায় 48/49। আর হয়তো বছর আটেক যৌণ খিদে থাকবে। তাই হয়তো শেষ সময় টা উপভোগ করতে চাইছে। তাছাড়া মাসে দুবার তো। এতে যদি ওদের সম্পর্ক ভালো থাকে তাহলে তো ওদের উপকারও করা হলো। আর ওদের সম্পর্ক ভালো না থাকলে হয়তো মনোজ বাবু আবার আমার কাছে ফিরে আসবে।
ঈশান তাড়াতাড়ি সুদীপা কে জড়িয়ে ধরে বললো…
না না। আমি আর তোমাকে মনোজ বাবুর সাথে ভাগ করে নিতে পারবো না। তুমি শুধু আমার। কিন্তু রিয়া?
সুদীপা বললো…
রিয়া কে তো তুই অনেক আগেই ধোঁকা দিয়ে ফেলেছিস বাবু। আমার সাথে সেক্স করার সময় রিয়ার কথা মনে পড়েনা?
এই বলে সুদীপা হাসলো। ঈশান একটু লজ্জা পেলো ওর কথা শুনে। তারপর বললো…
কিন্তু তুমি ছাড়া আমার যে আর কারো সাথে এসব করতে ইচ্ছা করেনা। আমি একটু ভাবার সময় চাই।
সুদীপা ঈশানের কপালে একটা চুমু খেয়ে বললো..
বেশ। কেও তোকে জোর করছে না। তোর যদি ইচ্ছা না হয়, আমরা ওদের না বলে দেব।
সুদীপা আর ঈশান গেস্ট রুমে এসে ওদের থেকে ভাবার জন্যে সময় চাইলো। নন্দিতা রা তাই মেনে নিয়ে সেদিনের মত চলে গেলো। অনুরোধ করে গেলো যাতে ওরা তাড়াতাড়ি ওদের মতামত জানায়।

এরপর আরো এক সপ্তাহ কেটে গেলো। ঈশান আর সুদিপার সম্পর্ক আরো গভীর হয়েছে। ওরা সারাক্ষণ একে অপরের সাথে লেপ্টে থাকে। যখন ইচ্ছা হয় মিলিত হয়। বিছানায়, বাথরুমে, রান্না ঘরে, ডাইনিং রুমে যেখানে ইচ্ছা হয় দুজন দুজনকে আদরে সোহাগে ভরিয়ে তোলে। রিয়া ঈশানের সাথে রাগারাগি শুরু করে দিলো। রিয়া বুঝতে পারছে না ঈশান কেনো ওকে ওর বাড়ি নিয়ে যেতে চাইছে না আর। ওদিকে নন্দিতাও ঈশান এর থেকে দুবার ওর মতামত জানতে চেয়েছে। ঈশান পরে বলবে বলে এড়িয়ে গেছে। এরকমই একদিন সকালে হঠাৎ রিয়া ঈশানের বাড়িতে এসে হাজির হলো। মুখ থমথমে। ডোর বেল বাজার পর সুদীপা ই গিয়ে দরজা খুলে দিল। ঈশান তখন বাথরুমে স্নান করছে। রিয়া কে দেখে সুদীপা খুশি হলো। ওকে নিয়ে ওপরে এলো। রিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে সুদীপা বললো…
কি রে? তোর কি শরীর খারাপ? চোখ মুখের অবস্থা ওরকম হয়ে আছে কেনো?
রিয়া কিছু বলতে পারলো না। ছুটে ঈশানের রুমে চলে গেল। দেখলো ঈশান নেই। সুদীপা বললো…
তুই বস। ভাই স্নান করছে আমার রুমে। আমি ওকে জানাচ্ছি তুই এসেছিস। আসলে বাইরের বাথরুমে সাওয়ার খারাপ হয়ে গেছে।
মিথ্যে কথাটা সুদীপা কে বলতেই হলো। একটু আগেই যে ঈশান ওকে চটকেছে। ওর যোনি এখনো রসে ভিজে আছে। রিয়া চুপচাপ বসে রইলো। কোনো কথা বললো না। সুদীপা ওর রুমে চলে গেল ঈশান কে জানতে। একটু পর ঈশান আর সুদীপা এলো এই রুমে। ঈশান কে দেখেই রিয়া দুহাতে মুখ চাপা দিয়ে ডুকরে কেঁদে উঠলো। ঈশান আর সুদীপা একটু অবাক হয়ে দুজনের মুখ চাওয়া চাওয়ি করলো। একটু ভয়ও পেলো। রিয়া ওদের ব্যাপারে জেনে যায়নি তো। একটু ইতস্তত করে দুজনে রিয়ার দু পাশে বসলো। ঈশান জিজ্ঞাসা করলো…
কি হয়েছে রে? কাদছিস কেনো?
রিয়া আরো একটু কেঁদে মুখ চাপা দিয়েই বললো..
আমি প্রেগন্যান্ট হয়ে গেছি।
ঈশান সুদীপা দুজনেই একটু চমকে উঠলো ওর কথা শুনে। ঈশান বললো…
মানে…. কি করে?
আমি জানিনা। আমি তো পিল টা খেয়েছিলাম। তারপরেও কি করে হলো আমি জানিনা।
রিয়া কাদতে কাদতে উত্তর দিলো। ঈশান বললো..
তুই বুঝলি কি করে?
আমার এই মাসের পিরিয়ড মিস হয়েছিল। ভাবলাম দেরি করে হবে। কিন্তু হয়নি। ভয় হয়েছিল। একটা প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট কিনে আজ সকালে টেস্ট করে দেখলাম পজিটিভ।
ঈশান রিয়াকে দুহাতে জড়িয়ে ধরলো। কিন্তু কি বলবে বুঝতে পারলো না। সুদীপা রিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো….
কাঁদিস না রিয়া। যা হবার হয়ে গেছে। এরপর কি করা উচিৎ সেটাই ভাবতে হবে আমাদের। খুব দেরি হয়নি এখনও। অ্যাবরসন করাতে হবে।।
রিয়া ভয় পেয়ে গেলো। হাত থেকে মুখ তুলে বলল..
সবাই সব কিছু জেনে যাবে। আমি আর কারো কাছে মুখ দেখাতে পারবো না।
কথাটা সত্যি। যতই গোপনে সব কিছু হোক। ঠিক প্রতিবেশী রা জেনে যাবেই। সবাই চুপ করে বসে রইল কিছুক্ষন। ঈশান মনে মনে ভেবে নিলো অনেক কিছু। তারপর বললো…
কিছু হবেনা সোনা। আমি সব ঠিক করে দেবো।
রিয়া বললো…
ঠিক করে দিবি? কিভাবে?
ঈশান একটু থেমে বললো…
আমি তোকে বিয়ে করবো। আজই আমি তোর সাথে তোর বাড়ি যাবো। তোর বাবা মার সাথে কথা বলবো। ওদের সব সত্যি জানাবো। আমার মনে হয় এই পরিস্থিতিতে ওরা এই বিয়ে মেনে নেবে।
আমাকে মা মেরে ফেলবে যখন জন্যে সাগরের সাথে আমার এরকম সম্পর্ক ছিল। দুই পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক শেষ হয়ে যাবে।
রিয়া কাঁপা কাঁপা গলায় বলল। সুদিপা রিয়ার মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বলল।
এখন তুই তোর কথা ভাব। সাগর কি তোর কথা ভেবেছিল? তুই চিন্তা করিস না। আমি ও যাবো তোদের সাথে। আমি ওনাদের সব বুঝিয়ে বলবো।
রিয়া ঝরঝর করে কেঁদে উঠলো। তারপর সুদিপার গলা জড়িয়ে ধরে বললো…
থ্যাঙ্ক ইউ দিদি। থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ। আমি সত্যি আশা করিনি যে তোমরা আমার সব সত্যি জানার পরও আমাকে মেনে নেবে।
সুদীপা হাসলো। তারপর রিয়াকে নিজের বুকে জড়িয়ে নিলো।

সেদিনই ওরা সবাই রিয়ার বাড়ি গেলো। সব কথা বলার পর সাভাবিক ভাবেই যা হবার তাই হলো। রিয়ার বাবা খুব রেগে গেলেন। রিয়ার মা কাদতে লাগলেন। খুব বকাবকি করলেন রিয়াকে। রিয়ার বাবা বললেন..
ঈশানের সাথে সম্পর্কে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তুই যদি বলটিস এটা ঈশানের জন্যে হয়েছে তাহলেও এতটা কষ্ট পেতাম না। কিন্তু সাগরের সাথে…. ছি….
যাই হোক অনেক রাগারাগি বকাবকির পর ওনারা মেনে নিলেন। ঈশান ওদের বললো কেও যদি জানতেও পারে তাহলে যেনো ওনারা বলেন এটা ওর আর রিয়ার বাচ্চা। ঈশান দের যা ইনকাম সেটাই অনেক। ঈশান এর চাকরি করার কোনো দরকার নেই। তাই এখনি বিয়ে দিতেও রিয়ার বাবার কেনো আপত্তি হল না। বরং রিয়া ঈশানের বাড়িতে থাকলেই সাগরের থেকে, প্রতিবেশী দের থেকে, আত্মীয় দের থেকে দূরে থাকবে। সত্যি বলতে কি রিয়ার বাবা ঈশান আর সুদিপার ওপর কৃতজ্ঞই হলো এই পরিস্থিতি থেকে ওদের উদ্ধার করার জন্য। সুদীপা কে অনেক করে ধন্যবাদ জানালো।
তবে সব ঠিক হবার পর একটা সমস্যা হলো। রিয়ার বাবা মা কেউই কোনো ক্লিনিকে যেতে চাইলো না লোক জানাজানির ভয়ে। কে কোথা থেকে দেখে ফেলবে কে বলতে পারে। সুদীপা বুঝলো ব্যাপার টা। ও ওনাদের থেকে সেই দিনটা চেয়ে নিলো। ও জানালো রাতের মধ্যে ঠিক কিছু একটা ব্যবস্থা করবে। এই বলে ওনাদের অস্বস্ত করল। তারপর সব কথা বার্তা হলে সুদীপা আর ঈশান বিকাল বেলা বাড়ি ফিরে এলো।


















Half WivesWhere stories live. Discover now