#7

307 28 1
                                    

#Journey

#

জাফার চোখ দুটো বড় বড় করে তাকিয়ে আছে,জেসমিনের কথা বলার অপেক্ষা করছে।

"তারপর আর কি!আমি তার মেয়ে হয়েও তার কাছে ধোঁকা খেতে পারি,কিন্তু আমি মেয়ে হয়ে তো মায়ের সাথে তেমন করতে পারি না!ছোটবেলা থেকে একটা জিনিস বাবা আমার ভেতর গেঁথে দিয়েছিলেন,বাবা মা যতই খারাপ হোক,তারা যদি দেহ ব্যবসাও করে,তবুও সন্তান তাদের সাথে টু শব্দটাও করতে পারবে না! ইসলাম আমাকে এসবই শেখায়।তাই তখন যতই রাগ থাকুক,তখন কাজের লোক ডেকে,ড্রাইভারকে ডেকে মাকে নিয়ে হাসপাতালে যাই।মা তখন ইয়াবা খেয়েছিলেন একসাথে পাঁচটা,তার উপর নেশাগ্রস্ত অবস্থায় হতাশ হয়ে হাতের রগ কেটে ফেলেন।যার ফলে হাত থেকে রক্ত তো গেছেই,নাক মুখ দিয়েও রক্ত গেছে অনেক।মাকে নিয়ে ডাক্তাররা দুইদিন অনেক কষ্ট করে,তৃতীয় দিন মায়ের জ্ঞান ফেরে।মায়ের শোচনীয় অবস্থায় ভাইয়াকেও ডেকেছিলাম।ভাইয়া প্রথমে না আসতে চাইলে যখন জানালাম,এ যাত্রায় হয়ত সে আর থাকবে না,তখন চলে আসে।মায়ের জ্ঞান ফেরার পর নার্স এসে বলে,মা নাকি আমাদের খুঁজছে।

কেবিনের ভেতর ঢুকার পর মা আমার আর ভাইয়াকে ইশারা করেন।মাকে দেখে তখন একটা নিরীক্ষা চালানো রোবট মনে হচ্ছিল,নাকে মুখে সহ শরীর কত জাগায় কত তার,নল লাগানো,শরীরে এম্নিতেই তেমন মাংস ছিল না,দুদিনে যা ছিল তাও নাই হয়ে গেছে।মায়ের হাত ধরতেই তার চোখ থেকে পানি ঝরছিল,আর ঠোঁট কাঁপছিল।সে মাফ চেয়েছিল সেদিন আমাদের কাছে।তারপর বলেছে,বাবার সবকিছু যেন আমরা যেটুকু পারি দেখে রাখি,তার মত না হই।তারপর আমাকে কাছে ডেকে কানে কানে বলেছিলেন, তোমার জন্য ব্যাংকের ভল্টে একটা জিনিস আছে,সেটা তুমি নিও।ভেবেছিলাম তোমাকে দিব সেটা তোমার বিয়েতে,কিন্তু তা আর হল না।নিজ হাতে তোমাকে আমি শেষ করে দিলাম।আমাকে ক্ষমা করে দিও।

এগুলোই মায়ের শেষ কথা ছিল।আমার আর ভাইয়ার হাত ধরা অবস্থায় সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে।"

জেসমিন জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে।শেষ বিকেলের শেষ রোদটাও চলে যাচ্ছে,কিছুক্ষন পর সন্ধ্যে নামবে ধুপ করে।জাফার খুঁজে পায় না কি বলবে।জীবন কি এতটাও বিচিত্র হতে পারে?একটা মাও বুঝি এমন হয়?আর সেই মায়ের সন্তানেরাও এত আলাদা হয়?জাফারের খুব খারাপ লাগে,আহ!মেয়েটা মায়ের আদর পেল না কোনোদিন!

Journey (Completed✅)Where stories live. Discover now