#26

220 16 3
                                    

#Journey

#২৬

জেসমিন,রাইফ আর সেলিম সন্তর্পনে আইসিইউ রুমের সামনে এসে দাঁড়ায়।ওদের দেখলে মনে হবে এখানে কোন শব্দ করলেই জাফারের সমস্যা হবে।জেসমিন আস্তে করে সেলিমকে কোলে নেয়,বাঁ হাত কাঁচের উপর রাখে।স্বচ্ছ কাঁচের ওপারে জাফার শুয়ে আছে,হালকা হালকা চোখ পিটপিট করছে। ডাক্তার তাকে পরীক্ষা করছে,সবকিছু চেক করছে।কয়েক মিনিট পর উনি বেরিয়ে এসে হাতের গ্লাভস খুলতে খুলতে জেসমিনের দিকে তাকান।

"উনি ব্রেনে অনেক আঘাত পেয়েছে।হতে পারে সে প্যারালাইজড হয়ে যাবে,কিংবা সুস্থ হবে,এখনও কিছু বলা যাচ্ছে না।রোগীর অবস্থা স্টেবল,উন্নতি বা অবনতি বলতে এটুকুই যে,উনার জ্ঞান ফিরেছে।উনি আপনাদের খুঁজছে।আপাতত তিনজনই যেতে পারেন,তবে বেশি কথা বলা যাবে না।বিশেষ করে রোগীকে কোনোভাবেই উত্তেজিত করা যাবে না।করলে নিউরোন উত্তেজিত হয়ে বা ব্লাড প্রেশারের আপ ডাউনের ফলে স্ট্রোক করতে পারে।"

ডক্টর চলে যেতেই জেসমিন ধীরে ধীরে দরজা খুলে সেখানে প্রবেশ করে,কোলে তখনও সেলিম,পিছে রাইফ।ভাঙ্গা হাত নিয়ে বেচারা বেশ বেকায়দায় পড়ে গেছে।সেলিম তার পাপাকে দেখার সাথে সাথেই হেচড়ে জেসমিনের কোল থেকে নেমে দৌড় দেয়।নার্স দ্রুত ওকে ধরে ফেলে,তানাহলে বাবার উপর লাফিয়ে পড়ত।সেলিমকে নিয়ে জেসমিন জাফারের পাশে বসে।ওদের কাছে পেয়ে জাফার ছেলের দিকে হাত বাড়ায়।এক ফোঁটা জল ওর চোখের কোণা বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে।সেলিম তার বাবার চোখের পানি মুছে গালে চুমু খায়।এতে জাফারের কষ্টের বেগ আরো বেড়ে যায়।হসপিটালের বিছানায় শুয়ে হাত পা না নাড়তে পারা,কাছের মানুষকে বুকে টানতে না পারার যে কষ্ট,তা যে এই পরিস্থিতিতে ছিল,সে ছাড়া কারো বোঝার সাধ্য নেই।ছেলেকে কোনোমতে কাছে টেনে নেয় জাফার।বাবার খারাপ অবস্থা,এটা এই ছোট মানুষটাও বেশ বুঝতে পারছে।তাই তো চুপচাপ বাবার বুকে মাথা রেখে বাঁকা হয়ে বসে থাকে।

জেসমিনের ওদের দুজনকে দেখে ভেতর ভেঙে কান্না আসছে,কি কষ্টে আছে মানুষ দুটো! এসময় রাইফের হাতের স্পর্শ পায় নিজের কাঁধে,হাতে হাত রেখে ওর রাইফের দিকে ফিরে চোখের পানি লুকায়।ও চায় না ওকে কাঁদতে দেখে জাফার আরো দুর্বল হোক।

Journey (Completed✅)Where stories live. Discover now