553 27 0
                                    

আমি আবার, আর একটা বার
লেখা #AbiarMaria

সপ্তাহান্তে বৃহস্পতিবার সকালে তরী সকাল সকাল তৈরি হয়ে নিয়েছে। আজ একটা এনজিওতে ওর ইন্টারভিউ আছে। ফুল টাইম জব যদিও, তরী ভাবছে ম্যানেজ করে নেবে। দুই দিন পর তন্দ্রা চার মাস শেষ করে পাঁচে পা রাখবে। এত ছোট বাচ্চাকে বাসায় রেখে নয়টা পাঁচটা কিভাবে অফিস করবে? তাও আবার ওকে এখনো ফর্মুলা দুধ দেয়া হয়নি, খাবারের জন্য পুরোপুরি মায়ের উপর নির্ভর। তরী সব চিন্তা বাদ দিয়ে নিজেকে মানসিকভাবে তৈরি করেছে। ইন্টারভিউ দিতে থাকুক, দিলেই তো আর চাকরি হয়ে যাবে না, সময় লাগবে। তরী ধীরে ধীরে নিজেকে চাকরির জন্য তৈরি করছে। ও অনেক ভেবে দেখেছে, বাবার অর্থনৈতিক অবস্থা শক্ত হলে কেউ ওকে ভাসুরের সাথে বিয়ের কথা এত অল্প সময়ে বলত না, অন্তত ওর শ্বশুরবাড়ির মানুষ গুলো এতটা অমানবিক নয়। সবচেয়ে বড় কথা, ইশতির জন্য সবাই এভাবে ভাবছে। তরী আগে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে চায়। তখন হয়ত কেউ ওকে বিয়ের জন্য ওভাবে বলবে না। ইশতিও হয়ত ততদিনে অভ্যস্ত হয়ে পড়বে।

দুই ঘন্টার কিছু বেশি সময় লেগে গেল ওর আসা যাওয়ায়। ক্লান্ত পরিশ্রান্ত দেহ নিয়ে ঘরে প্রবেশ করে শ্বাশুড়ির কন্ঠে কানে আসলো। নিজের ঘরের সামনে এসে ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানি বের করে খেতে খেতে বাচ্চাদের তাদের দাদী আর নানীর আদর উপভোগ করতে দেখছে। পানি খেয়ে ঘরে প্রবেশ করে উনাকে সালাম দিল। তরীর শাশুড়ী নাজনীন সুলতানা তাকে ডেকে পাশে বসালেন। এদিক ওদিকে কথা জিগ্যেস করা শেষে সেই গা জ্বলা বিষয়ে প্রশ্ন করলেন,
"জিসানের সাথে কথা হলো তোমার? এভাবে আর কতদিন থাকবা?"

তরীর মা আমেনা এই ভয়টাই পাচ্ছিলেন। ওর শ্বশুরবাড়ির মানুষগুলো আবারও তার মেয়েকে আরেক ছেলের বউ করে নিজেদের কাছে নেয়ার জন্য অস্থির হয়ে গেছে। তরীর মুখের দিকে তাকালেন, ওর ফর্সা গালে রগ গুলো স্পষ্ট হয়ে উঠছে, চোয়াল শক্ত হয়ে গেছে। তরী ছাই চাপা রাগ নিয়ে বলল,
"কি কথা হবে আমাদের? কিভাবে আছি আমরা?"

নাজনীন একটু ভয় পাচ্ছিলেন। তবুও বেয়াইনের দিকে একবার চেয়ে আবার ছেলে বউয়ের দিকে তাকালেন।
"দেখো মা, আমরা যেটা বলছি, তোমার ভালোর জন্যই। আজ হোক বা কাল, তোমাকে তো বিয়ে করতেই হবে..."
"কেন বিয়ে করতে হবে? আব্বা মারা গেলেও তার মানে আপনি বিয়ে করবেন?"

আমি আবার, আর একটা বারWhere stories live. Discover now