আমি আবার, আর একটা বার
লেখা #AbiarMaria৮
পরদিন আর জিসান বাসায় আসলো না। বিস্ময়কর ভাবে ইশতিও খুব বেশি যন্ত্রণা দেয়নি। ইকরা ভার্সিটি থেকে এসে ভাতিজাকে নিয়ে ব্যস্ত ছিল। একটা খেলনা ট্রেন কিনে নিয়ে এসেছে সে ভাতিজার জন্য যা দিয়ে দুজনে কুট কুট করে খেলছে। তরীর এসব দেখে স্বস্তি লাগছে। এভাবেই সব চলুক, তাহলে আর চিন্তা করতে হবে না ওর।
পরদিন রাতের খাবারের আগে জিসান বাসায় আসলো। সবাই এক সাথে খাওয়ার পর ইশতিকে জিসান ঘুম পাড়িয়ে কোলে করে তরীর ঘরে নিয়ে আসলো। তরী তখন বিছানা গোছাচ্ছে, জিসানকে দেখে সে মাথায় কাপড় টেনে নিল।
"আপনি কষ্ট করে ওকে আনতে গেলেন কেন? আমিই ওকে নিয়ে আসতাম"
"সমস্যা নেই। কোথায় শোয়াবো?"
তরী হাত দিয়ে বালিশ দেখিয়ে দেয়। ইশতিকে সন্তর্পনে শুইয়ে তরীকে বলল,
"একটা প্রশ্ন করব?"তরীর মনে সাথে সাথে অস্বস্তি আর ভয় ঢুকে গেল যা ওর চোখে মুখে প্রকাশ পাচ্ছে। জিসান হাত তুলে আশ্বস্ত করল।
"এত ভয়ের কিছু নেই। না চাইলে প্রশ্ন করব না!"
"নাহ, প্রশ্ন করুন"
"তোমার আমাকে নিয়ে কি সমস্যা হচ্ছে? আমাকে তুমি বোধহয় পছন্দ করছ না। ঠিক কি কারণে? বিয়ে নিয়ে তো কেউ কিছু বলার কথা না। তাহলে?"
"আমি আসলে চাচ্ছি না ও আপনাকে বাবা ডাকুক। আমাদের তো আর বিয়ে হয়নি যে আপনি ওর বাবা হবেন!"
"তুমিই তো বিয়েতে আপত্তি করলে"
"হ্যাঁ করলাম। আমার জন্য কত কষ্টের, সেটা আমি বারবার বলেছি"
"ওকে!"
"ইশতির জানা দরকার, ওর বাবার নাম ইমরান, ওর বাবা বেঁচে নেই। আপনাকে চাচ্চু ডাকা শিখাতে হবে। আমি চাই না এরকম অকওয়ার্ড সিচুয়েশনে আপনি আর আমি পড়ে যাই! যেভাবে চলছে, মানুষ আমাদের ভুল বুঝবে!"জিসান বুকে হাত ভাঁজ করে ওর দিকে তাকিয়ে আছে, কপালের ভাঁজগুলো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তরী হাত কচলাতে কচলাতে বলল,
"ব্যাপারটা আমার জন্য খুব অস্বস্তিকর। আর আপনার সাথে ওর এত এটাচমেন্টও আমার কাছে ভালো লাগছে না। আমি চাই আপনি কম কম আসুন। তাহলে আমার ছেলেও আপনাকে ছাড়া অভ্যস্ত হয়ে যাবে"
"আর আমাকে ওর থেকে দূরে সরানোর কারণ?"
"আগেই বলেছি, আপনি বিয়ে করলে তখন ও আপনার কাছে এখনের মত গুরুত্ব পাবেনা। আমি ঐ সময় ওকে কিভাবে বুঝাবো? এজন্য এটাই ওর জন্য মঙ্গল যে ও সত্য জানুক। আর সেটা আপনিই ওকে বুঝাবেন"
"তার মানে তুমি চাচ্ছো আমি অন্য কোথাও বিয়ে করে ফেলি?"
"সেটাই তো মঙ্গলজনক হবে, তাই না? আপনার বয়স তো বসে নেই। আমি যতদুর জানি, আপনার বত্রিশ বছর চলছে। এখনই তো উপযুক্ত সময়"
YOU ARE READING
আমি আবার, আর একটা বার
Romanceইমরানের মৃত্যুর বছর খানেক পেরোনোর আগেই ওর ভাসুরের সাথে বিয়ে নিয়ে চাপ আসলো। না, আপন ভাসুর নয়, চাচাতো ভাসুর। ওদের বিয়ের পর খুব বেশিদিন তিনি দেশে থাকেন নি। তরীকে তিনি ভাইয়ের বউ হিসেবেও যথেষ্ট স্নেহ করতেন। অথচ এই লোককে কিনা তরীর বিয়ে করতে হবে? তাও আবার...