দুই দিন পার হয়ে গেছে। তরী জিসানের সাথে কথা বলছে না, কিন্তু জিসান নানাভাবে ছুতো খুঁজছে কথা বলার। কখনো হাত টেনে ধরছে, কখনো বোনদের দিয়ে ডাকিয়ে নিচ্ছে, কখনো সবার সামনে এটা ওটা বলছে। তরী সবার সামনে স্বাভাবিক থাকলেও ঘরে এসে কথা বলছে না, এক সাথে অফিসেও যাচ্ছে না। জিসান অফিসে বসে কাজের ফাঁকে দুই হাত ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে পেছন থেকে শাহরুখ খান স্টাইলে তোলা একটা ছবি আপলোড দিল ক্যাপশন দিল-
আমি হতাশ,
খাই বাতাশ,
বউ বলে আমি নাকি খাটাশ!নিচে হাসির রোল পড়ে যাচ্ছে, সবাই জিসানের ক্যাপশন নিয়ে হাসাহাসি করছে। তরী স্যারদের সাথে মিটিংয়ে ছিল। সেখানে ওর ভূমিকা মুখ্য নয়, তবে থাকতে হবে। বোর হয়ে ফেসবুকে ঢুকে এই অবস্থা দেখে মুখে হাত চাপা দিল। ওর হাসি আটকানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে, দুম করে উঠে বেরিয়ে আসলো। ওয়াশরুমে ঢুকে কিছুক্ষণ মন ভরে হেসে আবার নিজেকে স্বাভাবিক করে নিল।
কিছু সময় বাদে তরীর ফোনে মেসেজ আসলো,
"একটা মানুষ নিজের ভুল না জেনেই শাস্তি পাচ্ছে। এটা কি ঠিক?"
তরী ফিরতি বার্তা পাঠালো,
"ভুল করেও যারা না বুঝার ভাণ ধরে বসে থাকে, তাদের তো দ্বিগুণ শাস্তি পাওয়া দরকার!"
একটু পর ওর কাছে রিপ্লাই আসে,
"ঠিক আছে, দাও তাহলে। আমি তো খাটাশ"
"হু, অনেক বড় খাটাশ"মিটিং শেষে আজ আর তেমন কোনো কাজ নেই। আজ আগে আগে বাসায় যাওয়া যাবে। কিন্তু তাতে কি? জিসানের সাথে মান অভিমান পর্ব তো শেষ হয়নি। তরীর মাথায় হুট করে একটা বুদ্ধি আসলো। ও আজকের মত ছুটি নিয়ে বাসায় গেল। নিপা গতকাল বাসায় এসেছে। তরী নিপার ঘরে গিয়ে ওকে এক কোণায় টেনে নিল।
"আপু, আমার আপনার সাহায্যের খুব দরকার!"
"কি ব্যাপার? কোনো সমস্যা?"
"আপু আপনি কি জানেন আপনার ভাই যে আমাকে অনেক আগে থেকে পছন্দ করত?"
নিপা বেশ অবাক হয়েছে।
"অনেক আগে থেকে মানে? কত আগে থেকে? আমরা তো জানি ইমরান মারা যাওয়ার পরে এক সময়..."
"আমিও এটাই ভাবতাম। আপনার ভাই অনেক বড় অভিনেতা। এত বছর সে কি করে নিজেকে এভাবে আটকে রাখলো আল্লাহ জানে!"
"মানে? কত বছর?"
"বাদ দিন আপু। এখন আগে বলেন, আমাকে সাহায্য করতে পারবেন?"
"কি সাহায্য লাগবে বলো?"
"আজকে রাতে ইশতি আর তন্দ্রাকে আপনাদের কাছে রাখতে হবে। আর..."
"আর?"
তরী লাজে রাঙা মুখে বলল,
"ছাদের চিলেকোঠার ঘরটা ফুল দিয়ে সুন্দর করে সাজাতে হবে। আমি জানি ঐ ঘরের এক্সট্রা চাবি আপনাদের কাছে থাকে। আমি চাচ্ছিলাম প্রথম বারের মত তাকে তার অধিকার বুঝিয়ে দিতে"
YOU ARE READING
আমি আবার, আর একটা বার
Romanceইমরানের মৃত্যুর বছর খানেক পেরোনোর আগেই ওর ভাসুরের সাথে বিয়ে নিয়ে চাপ আসলো। না, আপন ভাসুর নয়, চাচাতো ভাসুর। ওদের বিয়ের পর খুব বেশিদিন তিনি দেশে থাকেন নি। তরীকে তিনি ভাইয়ের বউ হিসেবেও যথেষ্ট স্নেহ করতেন। অথচ এই লোককে কিনা তরীর বিয়ে করতে হবে? তাও আবার...