আজ ছুটির দিন, তাই জিসান আর তরীকে একটু আগে আগেই বের হতে হলো ঘর থেকে। কারণ ছুটির দিন ছাড়াও আজ ওদের বাড়ির অনেকেই দাওয়াত পেয়েছে, সবাই বেড়াতে আসবে দুপুরে। তরী রান্নাঘরে গিয়ে শাশুড়ীকে সাহায্য করছে। ওরা কয়েক মাস পর পর পুরো পরিবার যতজন সম্ভব একত্র হয়। জিসান আর তরীর বিয়ের পর এই প্রথম ওরা এক হচ্ছে। বাচ্চাদের নেহা আর নিসা দেখে রাখছে, তাই তরীর ওদের নিয়ে তেমন ভাবনা নেই।দুপুর হতে না হতেই জিসানের ফুফুরা এক এক করে চলে আসলেন। একটু পর পর সবাই এক হচ্ছে। ইমরানের বাবা মা আর দুই বোনও চলে এসেছে। পুরো বাসা মেহমানে ভরে উঠেছে। ইকরা এসে বলল,
"ভাবী, এটা আপনি কি পরেছেন?"
"কেন? এইটা পরেই কাজ করতে সুবিধা হবে"
"না, শাড়ি পরেন"
"শাড়ি পরলে কাজ করতে পারবো না তো!"
"সব কাজ কি আপনি একা করবেন? কাজের লোক তো আছেই"
"কাজের লোক দিয়ে কি সব হয়?"
"আমরা তো আছি?"
"আমি শাড়ি পরলেই তন্দ্রার আমার কোলে ওঠার শখ হবে, খুব জ্বালাবে। বাদ দাও না!"
"কিচ্ছু হবে না। ওরা বাচ্চা পেয়ে অনেক খুশি থাকবে। আর জ্বালালে আমাকে বলবেন!"পেছন থেকে নিসাও এ ঘরে ঢুকলো। নিজের শাড়ির আঁচল ঠিক করতে করতে বলল,
"আমরা সবাই শাড়ি পরেছি, তুমি কেন পরবে না ভাবি? তোমাকেও পরতে হবে। শেষ কবে শাড়ি পরেছ মনে আছে নাকি?"
নিসা আলমারি খুলে ওর শাড়ি পছন্দ করার কাজে লেগে গেল। সেখানে ইমরানের বড় বোন জুঁই আর নিপাও আসলো, ওরা দুজও শাড়ি পরেছে। পেছনে নেহাও এসে উঁকি দিল,
"আমিও শাড়ি পরেছি ভাবি!"
তরী অবাক হয়ে বলল,
"আজ কি সবাই শাড়ি পরবে?!"নিসা একটা শাড়ি বের করে বলল,
"হ্যাঁ, আজকে স্পেশাল সেলিব্রেশন হবে। তুমি এই জাম রঙের শাড়িটা পরো"
তরী শাড়ির দিকে তাকালো। এই শাড়িটা শখ করে ইমরানকে ইম্প্রেস করার জন্য কিনেছিল। শাড়ির ব্লাউজও স্পেশালভাবে বানিয়েছে, ডিপ নেক ব্লাউজ, পেছনে অনেক খানি পিঠ খোলা আর শর্ট হাতা। তরী এখন এটা পরবে ভেবেই অস্বস্তি শুরু হলো, ও তো এত খোলামেলা কাপড়ে সবার সামনে গিয়ে অভ্যস্ত না। ইতস্তত করে বলল,
"এটার ব্লাউজের গলা অনেক বড়। কিভাবে পরব?"
নিসা দুষ্টুমি করল।
"তুমি এক্সট্রা একটা ওড়না দিয়ে ঢেকে রেখো, শুধু ভাইয়াকে দেখালেই হবে!"
তরীকে লজ্জা গ্রাস করল কয়েক সেকেন্ডের মাঝে। ইকরা ব্লাউজটা হাতে নিয়ে বলল,
"কি হট লাগবে এটা পরলে, ওমা! ঠিক হিন্দি সিরিয়ালের নায়িকাগুলোর মত!"
নিপা এগিয়ে আসলো।
"এমন একটা ব্লাউজ বানানোর শখ আমারও ছিল। কিন্তু চাকরি করে ছেলেমেয়ে সামলে কখন এই জিনিস পরে বরের সামনে যাবো, সেই সময়ই তো পাই না!"
জুঁই মুখে হাত চেপে হেসে বলল,
"আমি এই জিনিস পরলে আমার ছেলে মেয়ে আমার ইজ্জত মেরে দিবে সবার সামনে। ভুল করেও ওদের বাপের সামনে এটা পরে যেতে দেখলে বলবে, আম্মু আব্বুর সামনে উল্টাপাল্টা কাপড় পরে ঘুরো কেন!"
YOU ARE READING
আমি আবার, আর একটা বার
Romanceইমরানের মৃত্যুর বছর খানেক পেরোনোর আগেই ওর ভাসুরের সাথে বিয়ে নিয়ে চাপ আসলো। না, আপন ভাসুর নয়, চাচাতো ভাসুর। ওদের বিয়ের পর খুব বেশিদিন তিনি দেশে থাকেন নি। তরীকে তিনি ভাইয়ের বউ হিসেবেও যথেষ্ট স্নেহ করতেন। অথচ এই লোককে কিনা তরীর বিয়ে করতে হবে? তাও আবার...