আমি আবার, আর একটা বার
লেখা #AbiarMaria৭
তরী গোসল করে টয়লেট থেকে বের হলো। মা মানেই সারাক্ষণ দৌড়ের উপর থাকা। গোসলেও এত তাড়াহুড়ো করতে হয় যে বেশিরভাগ সময় শ্যাম্পু করার সময়ও পাওয়া যায়না। তরী দুই সন্তানকে গোসল করিয়ে নিজে দুই মিনিটে গায়ে পানি ঢেলে বেরিয়েছে। ঘর থেকে বের হয়ে দেখল ওর ননদ ইকরা তন্দ্রাকে নিয়ে খেলছে। তন্দ্রা এটুকু বয়সে খুব ভালভাবে ফুফুর কোল চিনে নিয়েছে। হাতের কাপড় গুলো বারান্দায় ছড়িয়ে দিতে দিতে ইকরাকে প্রশ্ন করল,
"কখন এসছ ভার্সিটি থেকে?"
"এইতো ভাবি, একটু আগে। দেখো, তোমার মেয়েটা একেবারে তোমার মত করে হাসে। এই যে, হাসলে গালে টোল পড়ে!"তরী স্মিত হাসলো। ওদের পাশে বসে বলল,
"তোমার ভাইয়ার ঘরটা ঠিক আগের মতই করে রেখেছ। আমি যদি কিছু বদলাই, আম্মা কি রাগ করবে?"
"তা তো জানি না। কিন্তু কি বদলাবেন ভাবি?"
"এখনও জানি না। কিন্তু মনে হচ্ছে একটু চেঞ্জ আনা দরকার। চেঞ্জ আনলে ঘরটা আরও বড় লাগবে। ফার্নিচার সেটিং এর কারণে ঘরটা ছোট লাগে একটু"
"চেঞ্জ করতে পারেন, আম্মা কিছু বলবে না। আপনারই তো ঘর এটা"তরী ভাবছে, আসলেই কি তার? কতদিনের জন্য তার? এখানে ঠিক কত দিন টিকতে পারবে? নিজের একটা চাকরি না হলে অবস্থান শক্ত হবে না, ভয় থেকেই যাবে। জিসান ওকে চাকরির ব্যবস্থা করে দিবে তো? যদি না দেয়, তখন? সিলেটের তেমন কিছু তো ওর চেনা নেই। একা একা কিভাবে সব সামলাবে?
নানান চিন্তায় যখন সে বিভোর, তখন ইশতি নাচতে নাচতে ওর কাছে এসে বলল,
"আম্মু, আব্বু আসছে! আব্বু বলছে আজকে আমার সাথে সারাদিন থাকবে! ইয়ে এ এ এ এ!"জিসান এসেছে? এক্ষুনি? ওরা এসে পৌঁছেছে দুই ঘন্টাও হবে না, এর মাঝেই হাজির? তর সইছিল না নাকি? তরী বিরক্ত হয়। এই মানুষটাকে আগে বেশ ভালো লাগত তার ব্যক্তিত্বের কারণে। মূলত তরী মানুষকে পছন্দ করে চেহারা নয়, ব্যক্তিত্ব দিয়ে। ব্যক্তিত্বহীন মানুষদের সাথে তরী বেশিক্ষণ কথাও বলতে পারে না, বিরক্তিতে শরীর রী রী করে। আর আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের মানুষ পেলে সে একেবারে হাঁ করে তাকিয়ে থাকে, সে যেই হোক। তরীর আগে জিসানকে যেমন ভালো লাগত, এখন বিয়ের কথা শুরু হওয়ার পর থেকে ভালো লাগার স্থান বদলে বিরক্তি যায়গা করে নিয়েছে। আসার আগে কিছু দিন ধরে খেয়া কানের কাছে এটাই বারবার ঘ্যানর ঘ্যানর করে বুঝিয়েছে, জিসান ওকে পছন্দ করে। কারণ ওদের টিকেট কাটা থেকে শুরু করে ড্রাইভার পাঠিয়ে বাসায় পৌঁছে দেয়া- সব কাজ জিসান করেছে। তাছাড়া কয়েকবার ওদের ফোনেও কথা হয়েছে। তরী যখন কল রিসিভ করত, তখন খেয়া ফোনের অন্যপাশে কান লাগিয়ে বসে থাকত। জিসানের কথার টোন, কেয়ারিং, সব কিছুতে পছন্দ করার একটা আভাস পাওয়া যায়। খেয়া হাতে কিল মেরে বলেছে,
"আমি জানি এই লোক এখন তোমার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে! আমি কিছুতেই ভুল হতে পারি না! নিশ্চিত থাকো, উনি তোমাকে ঠিক ঠিক প্রপোজ করবে!"
YOU ARE READING
আমি আবার, আর একটা বার
Romanceইমরানের মৃত্যুর বছর খানেক পেরোনোর আগেই ওর ভাসুরের সাথে বিয়ে নিয়ে চাপ আসলো। না, আপন ভাসুর নয়, চাচাতো ভাসুর। ওদের বিয়ের পর খুব বেশিদিন তিনি দেশে থাকেন নি। তরীকে তিনি ভাইয়ের বউ হিসেবেও যথেষ্ট স্নেহ করতেন। অথচ এই লোককে কিনা তরীর বিয়ে করতে হবে? তাও আবার...