আমি আবার, আর একটা বার
লেখা #AbiarMaria৩০
সকাল বেলা তরী তন্দ্রাকে খাইয়ে বারান্দায় ওকে নিয়ে বসে ছিল। সকালের স্নিগ্ধ বাতাস এসে নাক মুখ ছুঁয়ে প্রশান্তি ছড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছে সমস্ত শরীরে। তন্দ্রার আজ ভোরের দিকে ঘুম ভেঙে গিয়েছে। তরী যখন চোখ খুললো, দেখলো, তন্দ্রা দুই আঙুলে ওর চোখের পাতা টেনে খোলার চেষ্টা করছে। তরীকে চোখ মেলে চাইতে দেখে দাঁত বের করে হেসেছে। মেয়েকে বুকে জড়িয়ে খাইয়ে উঠে বসলো। আকাশে তখন সূর্য উঁকি দেয়ার আয়োজন করছে। তরী নামায পড়ে মেয়েকে নিয়ে বারান্দায় একটা চেয়ার এনে বসেছে আর সামনের রেলিঙে পা তুলে দিয়েছে। অনেকে ছোট বেলায় এমন ভোর হওয়া দেখা হতো, কেমন করে সূর্য একটু একটু করে নিজের আলোয় পৃথিবীকে আলোকিত করে তোলে! তরীর মেয়ে ওর বুকে মাথা রেখে শান্ত ভঙ্গিতে বসে আছে। ছোট মানুষটাও বুঝতে পারছে এখন হৈচৈ করার সময় না, এই সময়টা নীরবে অনুভব করতে হয়। তরী গুনগুন করে গান গাইছে।
"তুমি তো সুন্দর গান করো!"
জিসানের কন্ঠে তরী ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো।
"কখন উঠলেন আপনি?"
"এই তো মাত্র। তোমার গান শুনে আসলাম"
"জ্বর আছে এখনো?"
"কি জানি, দেখো তো?"
জিসান নিচু হয়ে কপাল এগিয়ে দিল। তরী কপালে হাত ছোঁয়ালো, তাপ নেই।
"নেই"
তন্দ্রাও মায়ের মত জিসানের কপালে হাত রেখে বলল,
"নাই!"
ওরা দুজন হেসে ফেলল। জিসান ওকে কোলে নিয়ে এলোপাথাড়ি চুমু খেলো, আদুরে কন্ঠে আদর করল ওকে। তন্দ্রা হাসি হাসি মুখে আদর উপভোগ করছে। তরী মুগ্ধ দৃষ্টিতে চেয়ে আছে ওদের দিকে। জিসান মেয়েকে আদর শেষে তরীর দিকে চোখ ছোট ছোট করে চেয়ে বলল,
"তোমারও লাগবে নাকি?"
তরী বিস্মিত হলো, পরমুহূর্তে মুখ ভেঙচে বলল,
"ইশ, জীবনেও না!"
"কেন না? ভালো লাগে না?"
তরী উত্তর দেয়ার আগেই সে বাঁ হাতে তন্দ্রাকে ধরে ডান হাতে তরীর কোমর পেঁচিয়ে নিজের দিকে টেনে আনলো। তরী চোখ বড় বড় করে মৃদু ধমকে দিল।
"ইশ, কি করছেন! সকাল হয়ে গেছে, আশাপাশের মানুষ দেখবে তো! ছাড়ুন!"
"হুম, মানুষ বাইনোকুলার নিয়ে বসে আছে তরী আর জিসানের রোমান্স দেখার জন্য, তাই না?"
"তা কেন থাকবে? কিন্তু দিনের বেলা মানুষের চোখ পড়তে পারে না?"
"পড়লেই বা! তুমি তো আমার স্ত্রী"
"স্ত্রী হলেই কি দিনের আলোয় অসভ্যতা করতে হবে?"
"চুমু খেলে অসভ্যতা হয়?"
"ইশ কি নির্লজ্জ!"
জিসান কন্ঠস্বরকে খাদে নামালো।
"দুই বাচ্চার মা হয়েও লজ্জা লাগে?"
"আশ্চর্য! মা হলে মেয়েরা নির্লজ্জ হয় নাকি?"
YOU ARE READING
আমি আবার, আর একটা বার
Romanceইমরানের মৃত্যুর বছর খানেক পেরোনোর আগেই ওর ভাসুরের সাথে বিয়ে নিয়ে চাপ আসলো। না, আপন ভাসুর নয়, চাচাতো ভাসুর। ওদের বিয়ের পর খুব বেশিদিন তিনি দেশে থাকেন নি। তরীকে তিনি ভাইয়ের বউ হিসেবেও যথেষ্ট স্নেহ করতেন। অথচ এই লোককে কিনা তরীর বিয়ে করতে হবে? তাও আবার...