দ্বিতীয় পর্ব

28 0 0
                                    

প্রধান সড়কের সাথে ইটের দেয়াল ঘেরা বাড়িটায় মস্ত একটা লাল রঙের লোহার গেট। লাল রঙা ইটগুলো শ্যাওলা, ধুলো-ময়লা জমে আর লাল নেই। কালচে রঙ ধারণ করেছে। কালোর সাথে লাল রঙের দরজা, একটু বেশিই ফুটে ওঠে। দরজার পাশেই দেয়ালে সাদা নেমপ্লেটে‌ কালো গোটা গোটা অক্ষরে লেখা " চুপকথা "।

লিখাটায় হাত বুলাতেই তাচ্ছিল্যের হাসি দেখা গেলো আদ্রিকার মুখে। গেট পেরিয়েই বিশাল উঠোন। উঠোনের মাঝে ইট বিছানো রাস্তা সোজা চলে গিয়ে ঠেকেছে সামনের একতলা ভবনে। আদ্রিকা ইট বিছানো রাস্তায় খুব ধীরে ধীরে হাঁটছে। ওর চোখ দুটো আলতো বুজানো। নাক টেনে লম্বা শ্বাসের সাথে বাতাসে ভেসে বেড়ানো মিষ্টি ঘ্রাণ নিচ্ছে। ইট বিছানো রাস্তার দুপাশে যেনো সবুজ ঘাসের মাদুর বিছানো। সবুজের মাঝে লাল, সাদা, হলুদ নানান রঙের ফুল ফুটে আছে। ইটের রাস্তার দুধারে এই বাগান আদ্রিকার খুবই পছন্দের। পুরো বাড়ির মধ্যে এই জায়গাটি এবং ছাদে শান্তি খুঁজে পায় সে।

একতলা ভবনের সামনের অংশটুকু বারান্দার মতো। বারান্দায় দুটো বেতের চেয়ার রাখা আছে। আদ্রিকার বাবা মোকাররম মজুমদার দিন-রাতের বেশির সময় এখানেই কাটায়। বারান্দা পেরিয়ে কাঠের সদর দরজা। দরজার সামনে দাঁড়াতেই আদ্রিকা নিজের পায়ের দিকে তাকালো। স্যান্ডেল না পরায় পা ধুলোয় মাখামাখি হয়ে গেছে। দরজা থেকে বাগানের দিকে ফিরে এলো। বাগানে গাছে পানি দেওয়ার জন্য একটি পানির লাইনের ব্যবস্থা করা আছে সেখানে দাঁড়িয়ে পা দুটো ধুয়ে নিলো। তারপর খুব সতর্কতার সাথে পা টিপে টিপে দরজা পেরিয়ে ভেতরে ঢুকলো। দরজা পেরিয়ে ড্রইংরুমের একপাশে কিচেন এবং খাবার টেবিল। অপরপাশে কয়েকটি সোফা এবং সামনের টেবিলে একটি টিভি রাখা। ড্রইং রুমের সামনে দুটি বেডরুম, একটি গেস্টরুম। আদ্রিকা বাম পাশের রুমের দরজা খুলে ভেতরে তাকালো।‌ রুমের লাইট বন্ধ তবে সন্ধ্যার হালকা আলোয় বিছানায় কাউকে শুয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। পা থেকে মাথা অব্দি কম্বল মুড়ে শুয়ে থাকায় মানুষটিকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। আদ্রিকা খুব সাবধানে পা টিপে টিপে বিছানার কাছে গিয়ে নিজেও কম্বলের ভিতরে ঢুকে শুয়ে পড়ল। এক হাত, এক পা মানুষটির শরীরের উপর উঠিয়ে দিয়ে মানুষটিকে জাপটে ধরলো। তারপর আহ্লাদী কন্ঠে বলল,

নোলককন্যাWhere stories live. Discover now