বাজারে সর্বপ্রথম যেদিন মৌসুমি ফল আসে, সেদিন বেশ চড়াদামে বিক্রি হয়। তবুও সেগুলো কিনে ফেলেন মোকাররম। চোখের সামনে অপরিচিত, স্বল্প পরিচিত সুস্বাদু কোনো খাবার পরলে সেটা মেয়েদের জন্য কিনে নিতে ভুলেন না। ভূবনভোলার মার্কেটে ব্লাকবেরি খুবই দূর্লভ ফল। যেই পাশ দিয়ে যাচ্ছে, একনজর ফিরে তাকাচ্ছে। কিন্তু কেনার সাহস করছে খুবই অল্প মানুষ। এইটুকু ফলের সেকি দাম! মোকাররম আধা পোয়া কিনে নিয়ে সেই ভরদুপুরে বাড়ি ফিরলেন। ফলগুলো নীহারের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললেন,
- মেয়েরা কই?
- ঘরে।
- ফলগুলো ধুয়ে দেও ওদের।
- বিকালে দেই। এখন ভাত খাবে।
- এখনি দেও।তর্ক করে লাভ হবে না জেনে আদেশ অনুযায়ী ফলগুলো ধুয়ে ঘরে নিয়ে গেলেন নীহার। পড়ার টেবিলে বসে আছে আদ্রতা। একটু আগেই বাজার থেকে ফিরে গোসল করেছে। ভেজা চুলগুলো পিঠ জুড়ে ছড়িয়ে আছে। এতো লম্বা, ঘন কালো সোজা চুল! দেখলেই নীহারের মন ভালো হয়ে যায়। টেবিলের উপর ফলের বাটি রেখে আদ্রিকাকে খুঁজলো।
- আদ্রিকা ফিরেনি এখনো?
- নাহ।
- এতোক্ষণে ফিরে আসার কথা!
- রাস্তাঘাটে একটু আধটু দেরী হতেই পারে।
- ফলগুলো খেয়ে নিস।
- আদ্রি আসুক তারপর খাচ্ছি।কয়েকটা ফল বাটিতে নিয়ে মোকাররম দিতেই সে বিরক্তি নিয়ে বললো,
- নিয়ে যাও। খাবো না।
- কিনে আনলে এখন খাবে না কেনো?
- এতো কথা বলার তোর দরকার নাই। বাচ্চাদের জন্য আনছি, ওদের খাইতে দে।কিছু না বলে চুপচাপ বেরিয়ে এলো নীহার। আদ্রতার বিয়ে উপলক্ষে স্রোতের মতো টাকা খরচ হচ্ছে। কোথায় কিসের খরচ করছে জানে না নীহার। মোকাররম নিজেও সেসবের খোঁজ রাখে না। কেনাকাটার দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়েছে মাহিন। আজকে বাবুর্চিকে টাকা দেওয়া লাগবে, কালকে চেয়ার টেবিলের দোকানে, আরেকদিন ফুলের অর্ডার এমন কতো কতো খাদের কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সেসবের খোঁজ কেউ রাখছে না।
হেলেদুলে বাড়ি ফিরলো আদ্রিকা। বিস্ময়ের ওখানে থ্রি পিজ বদলে কলেজ ড্রেস পরে নিয়েছিলো। বিছানার উপর ব্যাগ রেখে ওয়াশরুমের দিকে চলে গেলো। পেছন থেকে আদ্রতা জানতে চাইলো,
- দেরী হইলো কেনো?
- আইসিটি ল্যাব ছিলো।
YOU ARE READING
নোলককন্যা
Romanceধীরপায়ে সামনে এগিয়ে এলো বিস্ময়। আদ্রিকার খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে ফিসফিসিয়ে বললো, - 'আমার আকাশের একটুকরো নিজস্ব মেঘ।' হঠাৎ কানের কাছে কারো আওয়াজে চমকে পিছনে তাকাতে গিয়েও থেমে গেলো আদ্রিকা। বিস্ময় তার খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে আছে। এতোক্ষণের হারিয়ে যাওয়া ভয়ট...