অন্য কোনো কাজে আগ্রহ খুঁজে না পেলেও বাগান পরিচর্যার কাজে আদ্রিকার আগ্রহ ভীষণ। বইপত্র ঘাটাঘাটি করে বাগান পরিচর্যা বিষয়ে জ্ঞান আহরণ করে। বাড়িতে রোজ পত্রিকা আসে। যেখানে উদ্ভিদ বিষয়ক যেকোনো ফিচার মনোযোগ দিয়ে পড়ে। ছাদ বাগানে আদ্রিকার মূল্যবান অনেক গাছ রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে একটি বনসাই। গোলাপি, হলুদ, সাদা এবং মেজেন্ডা মোট চার রঙের ফুলের সংমিশ্রণ একটি বাগানবিলাস গাছে। কলম কাটিং এর মাধ্যমে একটি গাছে চারটি ফুল ফোটাতে সক্ষম হয়েছে আদ্রিকা। তারপর সেই বাহারী বাগানবিলাস গাছটিকে ধীরে ধীরে বনসাইয়ে রুপান্তর করেছে। জীবন্ত এই ভাস্কর্যটি আদ্রিকার ভীষণ দামী এবং প্রিয় সম্পদ। আজ ছাদবাগানে দ্রুত চলে এসেছে সে। পরীক্ষা শেষে কলেজ আপাতত বন্ধ। তাই সূর্য পশ্চিমাকাশে হেলতে শুরু করলে আদ্রিকা তার যন্ত্রপাতির বক্সটি সাথে নিয়ে ছাদে এসে আসন পেতে বসলো। আজকে বনসাই এর রিপটিং করবে। এ সময়টাতে বাড়ির কেউ ওকে বিরক্ত করে না। সেই বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খুব যত্নসহকারে সাবধানে মাটির চওড়া একটি পটে বাগানবিলাসটি রোপণ করা শেষে আদ্রিকার মুখে হাসি ফুটলো। সে ঠিক যেমনটি চেয়েছিলো, তার থেকে বেশি সুন্দর দেখাচ্ছে বনসাইটি। ছাদের এককোণে বনসাইটিকে রেখে মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়িয়ে সামনের দিকে তাকাতেই হকচকিয়ে গেলো। সেই বাইকটি দাঁড়িয়ে আছে। বাইকা চালকের দৃষ্টি আদ্রিকার দিকে। আদ্রিকা যে তাকে দেখতে পেয়েছে এবং তার দিকে তাকিয়ে আছে তা বুঝতে পেরেও কোনো ভাবান্তর হলো না বাইক চালকের৷ সে আগের মতোই তাকিয়ে রইলো। ভীষণ রাগ হলো আদ্রিকার। সরু চোখে চোখ মুখ শক্ত করে সেও তাকিয়ে রইলো। চোখে চোখে অনেকক্ষণ লড়াই চলার পর আদ্রিকা নিজেই হেরে গেলো। কালো কাচের আড়ালে থাকা চোখ দুটোর দিকে এভাবে কতোক্ষণই বা তাকিয়ে থাকা যায়! হেরে যাওয়ার রাগে আশেপাশে তাকিয়ে কিছু নুড়ি পাথর দেখতে পেয়ে কয়েকটা তুলে নিয়ে ঢিল ছুড়লো। এতোটা পথ অতিক্রম করে সেই পাথর নিশ্চয়ই বাইক চালক অব্দি পৌছাবে না। তবুও পাথরগুলো দিয়ে ব্যক্তিটিকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়ে নিজের রাগ কমানোর বৃথা চেষ্টা করলো। আদ্রিকার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে হেলমেটের আড়ালে নিশ্চয়ই হাসছে ব্যক্তিটি। আদ্রিকা স্পষ্ট দেখতে পেলো হাসির দাপটে ব্যক্তিটির গা দুলছে। ভীষণ রাগ হলো আদ্রিকার। জিহ্বা বের করে ভেংচি দেখিয়ে ধুপধাপ পায়ে সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে এলো।
YOU ARE READING
নোলককন্যা
Romanceধীরপায়ে সামনে এগিয়ে এলো বিস্ময়। আদ্রিকার খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে ফিসফিসিয়ে বললো, - 'আমার আকাশের একটুকরো নিজস্ব মেঘ।' হঠাৎ কানের কাছে কারো আওয়াজে চমকে পিছনে তাকাতে গিয়েও থেমে গেলো আদ্রিকা। বিস্ময় তার খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে আছে। এতোক্ষণের হারিয়ে যাওয়া ভয়ট...