ঊনবিংশ পর্ব

5 0 0
                                    

শব্দ এমন একটা অস্ত্র যা দিয়ে মানুষকে ছিন্নভিন্ন করে ফেলা যায়। আবার টুকরো টুকরো হওয়া মানুষকে জুড়েও দিতে পারে অল্প কয়েকটি শব্দ। ঔষধ একই, পার্থক্য শুধু ব্যবহারবিধি-তে।
আদ্রিকার মন-আকাশের মেঘ এতোদিন হাজার চেষ্টা করেও সরাতে পারেনি আদ্রতা এবং নীহার। অথচ আজ বিস্ময়ের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলাতেই মন খারাপ সরে গিয়ে সেখানে এখন সূর্য হাসছে। সামান্য কয়েকটা কথা, একটুখানি আশা ভরসা। তাতেই আদ্রিকার সমস্ত আত্মগ্লানি ধুয়ে মুছে গেলো। বিস্ময় যেহেতু বলেছে, এখন থেকে নিশ্চয়ই সবকিছু ঠিকঠাক চলবে। একদম আগের মতো।
অনেকদিন বাদে আদ্রিকাকে হাসতে দেখে, ওর চঞ্চলতা দেখে ভীষণ ভালো লাগছে আদ্রতার। রাস্তার পাশের আইসক্রিম পার্লার থেকে একটা আইসক্রিম কিনে দিলো ওকে।

অনেকদিন বাদে বিস্ময়ের সাথে ফোনে কথা বলার সুযোগ মিলেছে। কলেজ থেকে ফিরেই বন্ধ ফোনটি চার্জে দিয়েছে আদ্রিকা। এতোদিন চার্জবিহীন পরে ছিলো। কেউ খোঁজও করেনি। তেমন দরকার পরে না। ছাদের রেলিং এ বসে তারাভরা আকাশের দিকে তাকিয়ে গিটারে সুর তুলেছে বিস্ময়। এক কাপ কফি এনে রেলিঙের উপর রাখলো পরখ। বিস্ময়ের দিকে তাকিয়ে জানতে চাইলো,
- মন ভালো?
- অনেক ভালো।
- ঝামেলা মিটেছে?
- হ্যাঁ। তোর বুদ্ধি শুনে আজকে সরাসরি দেখা করেছি। অল্পতেই বুঝে গেলো। তুই ভাবতে পারবি না, কি হয়েছে।
- ভাবার দরকার নেই। তোর মুখেই শুনি।
- কিস করেছি, সেই নিয়ে কান্নাকাটি করছিলো পাগলটা। এই যুগে কে এমন সতীসাবিত্রী হয় কেউ!
- সবাইকে এক পাল্লায় মেপে বিচার করছিস কেনো? অনেকের মোরাল এথিকস এখনো অনেক স্ট্রং। ভালোবাসাকে এখনো অনেকে পবিত্র অনুভূতি হিসেবে মানে। কাছে গিয়ে কলুষিত করতে চায় না। ভালোবাসার শারীরিক ভাষা শুধুমাত্র হালাল সম্পর্কেই সুন্দর, প্রশান্তিময়। তোর গার্লফ্রেন্ড যেহেতু চাইছে না, কী দরকার জোর করার!
- চাওয়ার কথা দূরে রাখ। ও মানতেই পারছে না। যা ভুল হয়েছে শুধু একবারই। আরেকবার চেষ্টা করতে গেলে আমার উপরে না হামলা করে বসে। যা পাগল মেয়ে!

দুজনের কথা মাঝে আদ্রিকার কল এলো। কলার আইডি দেখে বিস্ময়ের মুখে যে আনন্দময় হাসি দেখা গেলো, তা দেখে পরখ বুঝে গেছে ব্যক্তিটি কে। চওড়া হেসে নিজের কফি নিয়ে চলে গেলো ছাদ থেকে।

নোলককন্যাWhere stories live. Discover now