ড্রয়িংরুমের মেঝেতে উলের কার্পেট বিছানো, তার উপরে পা দিতেই মনে হবে তুলোর মধ্যে পা ডুবে যাচ্ছে। বিদেশের নামীদামী ব্র্যান্ডের আরামদায়ক সোফা সেট, দেয়ালজুড়ে বিশালাকার টিভি। যার সামনে বসলে থিয়েটারের অভাব অনুভব হবে না৷ কর্ণার টেবিলে চিনামাটির ফুলদানিতে তাজা ফুল। গোলাপ, রজনীগন্ধা, বিভিন্ন ধরনের অর্কিড একেকদিন একেক ফুল শোভা পায় ফুলদানিতে। সকাল হতেই বাসী ফুল সরিয়ে নতুন ফুল রাখার কাজটি বাড়ির ভৃত্যদের আয়ত্তে নেই। এই কাজটি গৃহকর্ত্রী নিজেই করেন। ফুলের মার্কেট থেকে বাছাইকৃত তাজা ফুল নিয়ে আসে বাড়ির পুরনো ভৃত্য। আলো আঁধারের খেলা চলে ড্রয়িংরুম জুড়ে৷ জানালার ভারী পর্দা গুলো বাতাসে দুলতে থাকে। লুকোচুরির মাঝে কখনো মিষ্টিরোদ পর্দার আড়ালে উঁকি দেয়। এমনই পরিবেশে বড় হয়েছে পরখ। সেই ছেলে আজ কোথায় পরে আছে!
ইবনূল ইবতেহাজ আরেকবার ড্রয়িংরুমের চারদিকে চোখ বুলিয়ে নিলেন। খুবই সাদামাটা বাড়িটির ড্রয়িংরুমের বেশিরভাগ স্থান ফাঁকা। একপাশে কিচেন এবং বাথরুম৷ ইবনূল ইবতেহাজ বসে আছেন ড্রয়িংরুমের একটি সোফার উপর৷ ডাবল সীটের এই সোফাটিকে আসলে চেয়ার বলাই বোধহয় ভালো হবে৷ কাঠের উপর কোনোরকম গদি বসানো। সামনে একটি ছোট্ট কাঠের টেবিল। ড্রয়িংরুমের আরেকপাশের দেয়ালজুড়ে বিশালাকার জানালা। বন্ধ জানালার থাইগ্লাস ভেদ করে বাইরে তাকিয়ে দেখলেন ধু ধু মাঠ৷ সন্তপর্ণে দীর্ঘশ্বাস ফেলে হাতঘড়িতে সময় দেখে নিলেন। অফিসের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। ঠিক তখনই পাশের ঘর থেকে পরখ বেরিয়ে এলো। হাতের বীন ব্যাগটি সোফা থেকে একটু দূরে রেখে সেখানে বসলো। ইবনূল ইবতেহাজ নিজের পাশের ফাঁকা স্থানটির দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। বাবার পাশে বসতেও ছেলের অনীহা। ছেলের উদ্দেশ্যে কড়া কিছু কথা বলা উচিত কিন্তু স্পষ্টবাদী, বদমেজাজি ইবনূল ইবতেহাজ একমাত্র ছেলের সামনে দাঁড়িয়ে আত্মবিশ্বাস, মনোবল হারিয়ে ফেলেন। অনেক ভেবেচিন্তে কথা গুছিয়ে তারপর শব্দ উচ্চারিত হয়। অন্যদিকে পরখ মেরুদণ্ড সোজা করে বসে মাথা উঁচু করে বাবার দিকে তাকিয়ে আছে৷ একদম স্বাভাবিক, আত্মবিশ্বাস, আত্ম অহংকারে ভরা। শীতল কন্ঠে বললো,
- কি প্রয়োজন, বলো।
YOU ARE READING
নোলককন্যা
Romanceধীরপায়ে সামনে এগিয়ে এলো বিস্ময়। আদ্রিকার খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে ফিসফিসিয়ে বললো, - 'আমার আকাশের একটুকরো নিজস্ব মেঘ।' হঠাৎ কানের কাছে কারো আওয়াজে চমকে পিছনে তাকাতে গিয়েও থেমে গেলো আদ্রিকা। বিস্ময় তার খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে আছে। এতোক্ষণের হারিয়ে যাওয়া ভয়ট...