অন্তিম পর্ব

20 0 0
                                    

কুয়াশা ভরা দিনের চারপাশে ছড়িয়ে পরেছে সূর্যের আলো। পূর্ব আকাশে সূর্যের উঁকি দেওয়া এবেলা আর দেখা যায় না। প্রায় মধ্য আকাশে যাওয়ার সময় হলে সূর্য্যি মামার তেজ বাড়ে। তখনি পালাই পালাই করে উল্টোপথ ধরে শীতের কুয়াশা৷ গায়ের হুডিটা খুলে কোলের উপর রেখে পরখ উৎসাহহীন কন্ঠে শুধালো,
- বিয়ে হয়েছে ভালো কথা। এখন কাবিননামা নিয়ে এসে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে নিজের অধিকার চাও৷ এখানে ঘুরাঘুরি করে লাভ নেই। বিস্ময় ফিরবে না।

অথৈজলে হাবুডুবু খেতে থাকা আদ্রিকা চোখ বড় করে জানতে চাইলো,
- বিস্ময়ের বাড়ি কোথায় জানেন?
- ঢাকায়। তুমি সত্যি যাবে নাকি?
- দরকার হলে যাবো।

হো হো করে হেসে পরখ বললো,
- বেশ বেশ। এখন বাড়ি যাও। আমাকে অফিসে যেতে হবে।
- কিন্তু কাবিননামা পাবো কোথায়?

পরখ উঠে দাঁড়িয়ে ঘরের দিকে ফিরে যাচ্ছিলো। আদ্রিকার প্রশ্নে পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখলো মেয়েটা এখনো চোখ বড় বড় করে অসহায়ের মতো চেয়ে আছে। খানিকটা মায়া হলেও বিরক্ত জন্মালো অধিক। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,
- বিয়ের পর তোমাকে যে পেপার্স দিয়েছে সেটাই কাবিননামা।
- আমাকে কিছু দেয়নি।
- বিয়ের পরে বর কনে দুজনের কাছেই দুটো কপি দেওয়া হয়। তোমাকে দেয়নি কেনো?
- আমি কি জানি? কাজী বলেছিলো বয়স কম দেখে এখন রেজিস্ট্রি পেপার দিতে পারবে না। কয়েকমাস পরে দিবে।

ভ্রু কুচকে পরখ ফিরে এলো। আদ্রিকার সামনে দাঁড়িয়ে সুক্ষ্ম নজরে চেয়ে জানতে চাইলো,
- তোমার বয়স কতো?
- আঠারো পেরিয়েছে কয়েকদিন আগে।
- তাহলে বয়স হয়নি বললে কেনো?
- সার্টিফিকেটে আম্মু বয়স কমিয়ে দিয়েছে।
- বিয়ের বয়স না হতেই বিয়ে হলো?
- হয়েছে তো।
- কীভাবে?
- কবুল বলেছি, রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করেছি।
- পেপারস কাজীর কাছে?
- হ্যাঁ। 
- তাহলে গিয়ে কাজীর কাছ থেকে কালেক্ট করো। আমাকে কেনো বিরক্ত করছো?
- কাজীর বাড়ি চিনি না।

অপরাধীর মতো মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকা আদ্রিকাকে পরখ হঠাৎ বেশ করে ধমকে উঠলো।
- এই এলাকায় একটাই কাজী আছে। বাড়ি চিনতে হবে কেনো? সোজা কাজী অফিসে যাও। ঘটে এইটুকুও বুদ্ধি নেই। আসছে বিয়ে করে সংসার করতে৷ যাও তো এখান থেকে। অযথা ঝামেলা বাড়িয়ো না।

নোলককন্যাWhere stories live. Discover now