বিংশ পর্ব

4 0 0
                                    

শপিং করার পর বিয়ে হলো, তারপর মিষ্টি বিতরণ। সব মিলিয়ে মাত্র দুই ঘন্টায় পাল্টে গেলো আদ্রিকার অনুভূতি। নেকাবের আড়ালে বসে মিটি মিটি হাসছে৷ বুকের ভেতর থেকে অনেক বড় একটা ভার নেমে গেছে৷ ভীষণ হালকা লাগছে। বিস্ময়ের দিকে তাকালেই এক অদ্ভুত ভালো লাগায় ছেয়ে যাচ্ছে ভেতরটা। এই মানুষটা তার স্বামী, ভাবতেই ভীষণ ভীষণ ভালো লাগছে। কাজীর বাড়ির থেকে বেরিয়ে ছোট একটা রেস্টুরেন্টে ওরা ছয়জন খাওয়া দাওয়া করলো। খাওয়া শেষে যে যার মতো ফিরে গেলো আদ্রিকা ও বিস্ময়কে রেখে৷ পার্কিং থেকে নিজের বাইকটা নিয়ে এসে আদ্রিকার সামনে দাঁড়িয়ে বিস্ময় তার মানিব্যাগ থেকে দশ হাজার টাকা আদ্রিকার হাতে তুলে নিলো।
- নেও ধরো। তোমার প্রাপ্য।

আদ্রিকার মুখ জুড়ে প্রাপ্তির হাসি, সুখের আনাগোনা। টাকাগুলো নিয়ে ব্যাগে রেখে দিলো।
- তুই থেকে তুমি হয়ে গেলাম?
- বউকে তুই বললে কেমন জানি শোনায়। এখন থেকে তুমি করে বলবো। গাড়িতে উঠো। তোমাকে দিয়ে আসি।
- এখন কোথায় যাবো?
- কলেজে।
- এই সময়?
- টিফিন পিরিয়ড চলছে। এই ফাঁকে ক্লাসে ঢুকে যাবে।
- তারপর স্কুল শেষে বাড়ি চলে যেতে হবে।
- হ্যাঁ। যাবে। স্বামীর বাড়ি যেতে চাইছো নাকি? তুমি যেতে পারলে আমার নিয়ে যেতে আপত্তি নেই। তারপর তোমার বাপ আবার ছুটতে ছুটতে আমার বাড়িতে চলে আসবে। এটাই সমস্যা আরকি।
- এখন নিয়ে চলো তোমার বাড়িতে।
- পাগল হয়েছো?
- সিরিয়াসলি বলছি। আজকে বিয়ে হলো আমাদের৷ এখনি ফিরে গেলে আজকে আর তোমার সাথে দেখা হবে না। আমাদের বিয়ের প্রথম রাতটা একসাথে কাটাতে না পারি, অন্তত দিনের বেলা দুজনে একান্তে একটু বসতে নিশ্চয়ই পারি৷ নিয়ে চলো না প্লিজ। স্কুল ছুটির সময় হলে চলে আসবো৷
- ভেবে বলছো?
- হুম।
- ঠিক আছে। বউয়ের আবদার ফেলি কি করে! উঠে পরো গাড়িতে৷

বাইকের পেছনে বেশ ঘনিষ্ঠ হয়ে বসলো আদ্রিকা। আজকে আর অপরাধবোধ হচ্ছে না। নেই কোনো আড়ষ্টতা, ভয় ভীতি। বিস্ময়ের কথা মেনে বিয়ে করে ফেলাটা মন্দ মনে হচ্ছে না আর। বিয়ের আগে যেখানে হাত ধরতেই ভয় করতো এখন কাধে হাত রেখে গায়ের সাথে ঘেঁষে বসতে ভালো লাগছে৷
শহর ছেড়ে নিরিবিলিতে বিস্ময়ের বাড়ি। দোতলা ছোট বাড়িটির সামনে মাঝারি একটি আম গাছ। আম গাছের নিচেই প্রবেশ দরজা। নিচতলার গ্যারেজের সামনে বাইক পার্ক করে রেখে ওরা দুজনে নামলো। সিমেন্টের সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে উঠতে বিস্ময় বললো,
- এই বাড়িতে ভাড়া থাকি আমি। আমি বলতে আমরা আরকি। আরেকজন ছেলে থাকে আমার সাথে। এখন ডিউটিতে আছে মনে হয়।

নোলককন্যাWhere stories live. Discover now