চতুর্দশ পর্ব

6 0 0
                                    


- মনতরীর বুকে নতুন নাও এসেছে। ময়ূরপঙ্খী নাও। পুরো নৌকাটি নীল রঙের। মনতরীর স্বচ্ছ জলে পাল তুলে যখন ভেসে বেড়ায় মনে হয় নদীর বুকে নীল আকাশ নেমে এসেছে৷ দেখতে যাবি?

ফোনের এপাশে আদ্রিকা দু চোখ বুঝে কল্পনায় হারিয়ে গেলো। নীল রঙ এর একটা ময়ূরপঙ্খী নৌকা, গাঢ় নীল রঙা বিশাল পাল তুলে মনতরীর স্বচ্ছ জলের মধ্যে ভাসছে। নৌকার কিনারায় দাঁড়িয়ে আছে আদ্রিকা ও বিস্ময়। নৌকায় কোনো মাঝি নেই। হাওয়ার তালে পালের সাহায্যে নৌকা চলছে। বিস্ময়ের হাতে হাত রেখে দাঁড়িয়ে দু চোখ বুজে বাতাসের ঘ্রাণ নিচ্ছে সে। পাশে দাড়ানো বিস্ময়ের চোখ আদ্রিকার দিকে। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য তাকে আকর্ষিত করতে পারছে না৷ পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক টুকরো মেঘের কাছে সৌন্দর্য নস্যি।

- কিরে যাবি?
বিস্ময়ের ডাকে আদ্রিকার ঘোর ভাঙ্গে। খাতায় আঁকা বুকি করা হাতটা থেমে যায়। দাঁতের ফাঁকে কলম কামড়ে ধরে কিছুক্ষণ ভাবে৷

- কীভাবে যাবো? ইমপোর্টেন্ট ক্লাস আছে। কোনোভাবে মিস দেওয়া যাবে না। কলেজ ছুটির পর আপুর সাথে ফিরতে হবে৷

- একদিন না হয় ক্লাস মিস দিলি?

- এভাবে ঘন ঘন ক্লাস মিস দিলে ধরা পরে যাবো৷

- ঘন ঘন মানে? কয়দিন ক্লাস মিস দিয়েছিস তুই? ওই তো সপ্তাহে একদিন৷ তার জন্য এখন আমাকে কথা শোনাচ্ছিস! আমার একার দায় পরেছে না? তোকে আমি জোর করে নিয়ে যাই? শোন, তোর যেতে ইচ্ছে না হলে সরাসরি বলে দিবি৷

- আহা! রাগছেন কেনো?

- কারন আছে তাই৷ সপ্তাহে একটা দিন তোর সাথে সময় কাটানোর সুযোগ পাই। তাও আবার সময় ধরে পয়তাল্লিশ মিনিট৷ এখন তুই এমনভাবে বলতেছিস যেনো আমি তোর পড়াশোনার খুব ক্ষতি করে দিচ্ছি৷ আমার জন্য তোকে বাধ্য হয়ে যেতে হয়৷ সত্যি, বল তো। তোর ইচ্ছে করে না, তাই না?

- আমি এমন কিছু বলতে চাইনি৷ সপ্তাহভর আপনার সাথে দেখা হওয়ার অপেক্ষায় প্রহর গুনি। আমার অবস্থা আপনি বুঝবেন না। থাক সেসব কথা। কালকে ছুটির পরে কোনোভাবে ম্যানেজ করে নিবো। আপনি গেটে অপেক্ষা করিয়েন। আপু আসতেছে এখন রাখি।

নোলককন্যাWhere stories live. Discover now