ষষ্ঠদশ পর্ব

9 0 0
                                    

আদ্রিকার পরীক্ষা চলছে। লুকিয়ে প্রেম করার শাস্তিস্বরূপ এখন দিনরাত এক করেও সিলেবাস শেষ করা যাচ্ছে না। সারাক্ষণ বইয়ের পাতায় মুখ গুঁজে থাকলেও রাতে ঘুমানোর আগে নিয়ম করে বিস্ময়ের সাথে কথা হয়। পরীক্ষার কারণে রাত জেগে বই পড়ায় বাড়ির কেউ আপত্তি করেনা। সব গুছিয়ে দিয়ে আদ্রতা ঘুমিয়ে পরে। এদিকে টেবিলে বসে ফিসফিসিয়ে প্রেমালাপ চালিয়ে যায় আদ্রিকা। খুব বেশিক্ষণ কথা হয় না। বড়জোর আধা ঘন্টা। এরমধ্যে বেশির ভাগ সময় আদ্রিকা চুপ করে থাকে। বেশি কথা বললে আদ্রতা টের পেয়ে যায় যদি।

- তোর পরীক্ষা শেষ হতে আর কতোদিন?

- দু সপ্তাহ।

- এর মাঝে একদিন দেখা কর।

- সম্ভব না।

- পরীক্ষা শেষে?

- কলেজ বন্ধ থাকবে। বাড়ি থেকে বের হওয়া নিষেধ।

- দেখা না করে এতোদিন কীভাবে থাকবো?

- পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় দেখা তো হচ্ছেই।

- ওটা দেখা হলো? চোখের সামনে দিয়ে হুশ করে বেরিয়ে যাস। আমার সাথে দেখা করার কোনো আগ্রহই নেই। আমাকে আধাঘন্টা সময় দে। কীভাবে দিবি তোর ব্যাপার।

- আপনি জানেন না, আমার অবস্থা? বাইরে গেলে সারাক্ষণ আপু সাথে থাকে।

- হ্যাঁ, আপনি তো ছোট বাচ্চা। একা ছেড়ে দিলে হারিয়ে যাবেন। যতো সব ন্যাকামি। সবার থেকে এক কাঠি উপরে তোর বাপ। নিজে কোনো দায়িত্ব পালন করবে না কিন্তু সম্মানের বেলায় একচুল পরিমাণ ছাড় দিতে রাজি নয়। যা করবা করো, আমার সম্মানে যেনো সামান্যতম আঘাত না লাগে।

- আমার পরিবার নিয়ে বাজে কথা বলবেন না।

- একশবার বলবো। ওদের জন্য আমাকে ভুগতে হচ্ছে। ন্যাকামির অত্যাচারে গার্লফ্রেন্ডকে পাশে পাচ্ছি না। আমার কপালটাই খারাপ, ন্যাকাষষ্ঠী জুটেছে কপালে।

- এখন খুব আফসোস হচ্ছে আপনার?

- অবশ্যই হচ্ছে। আর হওয়াটাই স্বাভাবিক।

ছুড়ে দেওয়া তীর এবং মুখের কথা একবার বেরিয়ে গেলে আর ফিরিয়ে নেওয়া যায় না। রাগের মাথায় বলা কথাটা বিস্ময়ও আর ফিরিয়ে নিতে পারলো না। ফোনের এপাশে নিশ্চুপ আদ্রিকা। চোখ ভিজে এসেছে মুহুর্তেই। নাক টানার মৃদু শব্দ ভেসে আসতেই হুশ ফিরলো বিস্ময়ের।

নোলককন্যাWhere stories live. Discover now