সকালের ঝলমলে আলোয় চারদিক চিকচিক করছে। মনে হচ্ছে বেলা অনেকখানি গড়িয়ে গেছে, অথচ ঘড়ির কাটা তখনো আট এর ঘর ছুঁইছুঁই। চুপকথার সামনে দাঁড়িয়ে আছে আদ্রিকা। মেইনরোড দিয়ে ব্যস্ত যানবাহন সাঁই সাঁই করে চলে যাচ্ছে। আদ্রিকা কাঁচুমাচু করে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পরও একটা রিক্সা থামাতে পারেনি। মূলত সে চাচ্ছিলো কোনো রিক্সাচালক তাকে দেখে নিজেই জিজ্ঞাসা করুক, আদ্রিকা কোথাও যাবে কিনা? তাহলে আদ্রিকা শুধু স্কুলের নামটা বললেই রিক্সাওয়ালা তাকে স্কুলের গেটে নামিয়ে দিয়ে আসবে। বাড়ি থেকে স্কুল পায়ে হেঁটে দশ মিনিটের পথ। বাজার পেরিয়ে স্কুলে যেতে হয়। আদ্রতা সারারাত জ্বরে কাতরিয়েছে। সকালের দিকে জ্বর কমলেও শরীর ভীষণ দুর্বল। নীহার তাকে ভার্সিটি যেতে বারণ করেছে। কিন্তু আদ্রিকার ক্লাস সবে শুরু হওয়ায় তার কলেজ মিস দেওয়া সম্ভব নয়৷ তবুও আদ্রিকা একবার বলেছিলো, সেও আজকে যাবে না। তাই নিয়ে নীহার বেশ বকাঝকা করে কলেজের জন্য বের হতে বলেছে। অথচ আদ্রিকা বাড়ির গেটের সামনে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে। মন চাইছে একছুটে আদ্রতার কাছে ফিরে যেতে।
বাজারের দিক হতে মোকাররম নার্সারির দিকে আসছিলো, বাড়ির গেটের সামনে আদ্রিকাকে দেখে এগিয়ে এলো। বাজারের পাশে মেইনরোডের সাথেই বাড়ি হওয়ায় বাড়ি থেকেই নার্সারির ব্যবসা সামলায়। রাস্তার সাথে বাড়ির বাইরের দেয়াল ঘেষে সারি করে নার্সারির গাছগুলো রাখা আছে। তাই মোকাররম বেশিরভাগ সময় বাজার এবং বাড়ির আশেপাশেই থাকে। বাবাকে দেখে আদ্রিকার সকল ভয় কেটে গেলো। যদিও বাবার সাথে সখ্যতা নেই বললেই চলে। তবুও বাবা আশেপাশে থাকলেই নির্ভরতা খুঁজে পায়। মোকাররম মজুমদার মেয়েকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে খানিকটা ক্ষিপ্ত হলো। মেয়ে দুটোকে নিয়ে তার কোনো চিন্তাভাবনা না থাকলেও তাদের জন্য নিজের সম্মানে তিল পরিমাণ আঁচ যাতে না লাগে সে ব্যাপারে সদা সতর্ক থাকে। এমনিতেই উঠতি বয়সের দুটো মেয়ে, সবসময় চোখে চোখে রাখতেও পারে না। বাজারের উপরেই বাড়ি, চারিদিকে কতো লোকজন! কে কখন ক্ষতি করার জন্য ওত পেতে থাকে, বলা তো যায় না। মেয়েকে উদ্দেশ্য করে বললো,
ESTÁS LEYENDO
নোলককন্যা
Romanceধীরপায়ে সামনে এগিয়ে এলো বিস্ময়। আদ্রিকার খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে ফিসফিসিয়ে বললো, - 'আমার আকাশের একটুকরো নিজস্ব মেঘ।' হঠাৎ কানের কাছে কারো আওয়াজে চমকে পিছনে তাকাতে গিয়েও থেমে গেলো আদ্রিকা। বিস্ময় তার খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে আছে। এতোক্ষণের হারিয়ে যাওয়া ভয়ট...