চিহ্ন

56 11 5
                                    


আজ সকালে তেই সিওল এসেছে। আজকে এখানে একটা কনফারেন্স হবে সেখানে সকল পুলিশ সুপারকে থাকতে বলা হয়েছে। মোনাকে আনতে চায়নাই । সে জোর করে এসেছে। ওর শরীরটা ভাল নয়। ভুলভাল বকার স্বভাবটা যেন বেড়েছে। এইতো কাল রাতেই সে প্রায় রাত২ টা নাগাদ চিতকার করা শুরু করেছে ঘুমের মধ্যে। বলছিলঃ "মা তুমি তো বলেছিলে ভালবাসার জন্য খুন করাও অপরাধ নয়। তাহলে আমি এখন এতোটা guilty feel  করছি কেন? " 

কনফারেন্স শেষে ঘরে ফিরে তেই। অনেক দিন পর তার পুরানা বাড়িতে। যেখানে এখনো নিঃশ্বাসে জাংকুকের বেবি পাউডারের সুবাস পাওয়া যায়। ঘরে ঢুকতেই মিনজি দৌড়ে এসে ঝাপিয়ে পড়ে বাবার বুকে। এরপর ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদতে শুরু করে। আর বলে " মার কাছে নিয়ে চলো মাকে দেখব" তেই এরও ইচ্ছা ছিল। কিন্তু এখন প্রায় রাত ১০টা বেজে গেছে। কাল বিকালে যাবে। 

আজ চৌঠা এপ্রিল। অর্থাৎ আগামীকাল তার বিবাহবার্ষিকী এবং তার স্ত্রীর মৃত্যুবার্ষিকি। 

সকালে উঠে তেই কে খুজে পাওয়া যায়না। বিকালে বাড়ি ফেরে সে। কারোর সাথে কথা বলেনা কিছুই। খাওয়া দাওয়াও করেনাই হয়ত। চোখ ২ টা ফুলে আছে তার। কিশোরীদের ব্রেকাপ হবার পর যেমন ফুলে থাকে ঠিক তেমন। এরপর মিনজি কে কোলে তুলে নেয়। তারপর সে আবারো যায় তার গত স্ত্রীর পাশে। এবার বাবা ছেলে একসাথে হাউমাউ করে কেঁদে দেয়। দূর থেকে মোনা দেখে তাদের। তারও চোখ বেয়ে পানি পড়ে এবার। জাংকুকের শোকে নাকি মিনজি ও তেইকে কাদতে দেখে নাকি নিজের ভালোবাসা থেকে কোনোদিন এমন স্নেহ পাবার সন্দেহ করে তা কেও বোঝেনা। সবাই ভাবে অন্য সবার মতো হয়ত এখোনো মোনার জীবণে তার বউমণির প্রভাব আছে। সেও হয়ত এখোনো পরীর মতো হাসি টাকে মিস করে। 

এরপর দিন ২ তারা সিওলে ছিল। তারপর তেই আর মোনা ফিরে আসে দাএসংদং এ তেই চেয়েছিল মিনজিকে নিয়ে আসবে। কিন্তু সে আসতে চায়না। বলে স্কুলে পড়া আছে। ৪ বছর বয়সী ছেলের পড়া নিয়ে মাথা ব্যথা দেখে সকলেই হাসলেও তেই দ্বিমত করেনি। যে যাই বলুকনা কেন সে তো তার পুত্রকে চেনে তাইনা? 



আরো ৭ মাস পার হয়ে যায়। মাস ২ হোলো তেই এর দাদী মারা গেছেন। আর তেইয়ের চাচার আমেরিকা থেকে এক কলেজের প্রফেসর হবার চিঠি এসেছে কিছুদিন হলো । এখন সে নিজেকে খুব একা বোধ করে। ঘরে কাওকে যে একটু মন খুলে কথা বলবে তেমন কেও নেই। ইউংগি বা জাঙ্গুক থাকলে হয়ত সে এই একাকীত্ব বোধ করত না। এবার তেই এর মা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে ছেলেকে বিয়ে দিবে। আবার মোনার বাবাও মোনার জন্য পাত্র খুজছে। মেয়েটার যে অবস্থা যত দ্রুত পাত্রস্থ করা যায় তত ভাল। 

বলতে গেলে মোনার আর তেইয়ের বিয়ের জন্য তেইয়ের নানাবাড়ির সকল আত্মীয় দেসংদং এ এসেছে। কিছু আছেন তেই এর বাড়িতে আর কিছু আছেন নানাড়িতে। 

সেদিন মামাবাবু সকলকে নানাবাড়িতে থাকতে অনেক অনুরোধ করায় সেখানে তেই ছিল। নিশুতি রাত। চারিদিকে খালি ঝিঝি পোকার ডাক। কেমন যেন বিরক্তিকর ঠেকছে তেই এর কানে। হঠাত একটা স্পর্শ অনুভন করে সে। একবার নিজের অলক্ষেই ভ্রু কুচকায় সে। এই প্রথম যে সেই এই স্পর্শ পাচ্ছে তা নয়। কিন্তু হঠাত জগতের সব কিছু এমনকি ঝিঝি পোকার ডাক পর্যন্ত বিরক্তিকর ঠেকে তার কাছে। 

সময় নষ্ট করে না সে। পিছে ফিরে দেখে মোনা। 

তেইঃ কিছু বলবে?
মোনাঃ না মানে...
তেইঃ দেখ আমতা আমতা কোরোনা। তুমি খুব ভাল করেই যান গাজার কেসটা কতটা কমপ্লিকেটেড হয়ে যাচ্ছে। আজ ২০ মাস চেষ্টা করেও কোনো সুরাহা করতে পারছিনা। 
মোনাঃ আচ্ছা। শোনো না। আমায় বিয়ে করবে কবে?
তেইঃ হঠাত বিয়ের কথা?
মোনাঃ বাবা যে আমার বিয়ের জন্য মরিয়ে হয়ে উঠেছে তা তো জানই। আর সবাই তোমার বিয়ের জন্যও মরিয়া হয়ে উঠেছে। তুমি ওদের কবে বলবে আমাদের সম্পর্কের কথা? কবে করবে আমায় বিয়ে?
তেইঃ দেখ আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারবনা। 

এবার মাথা গরম হয়ে ওঠে মোনার। চিতকার করে ওঠে।

মোনাঃ বিয়ে করত পারবা না মানে? তাহলে দিনের পর দিন আমি কেন তোমাকে সময় দিয়েছি? কেন আমি আমার সমস্ত effort মিনজির উপর দিয়েছি। কেনই বা জাংকুককে মেরে ফেলেছে? 

বলার সাথে সাথেই সঙ্গবিত ফেরে মোনার। কথায় কথায় কি বলে ফেলছে সে? আজকে ৫ বছর ধরে যে ইনিস সে যক্ষের ধনের মত লুকিয়ে রেখেছে সেটা?

কিন্তু কি আশ্চর্য তেই এর ভাব মুর্তির কোনো পরিবর্তন নেই। যেন সে জানত মোনার জন্যই জাংকুক মারা হেছে। যেন সে বুঝেছিল সকরে চক্ষুর অগচোরে ওর টেবিলের ড্রয়ার থেকে মোনা সেই সিরিঞ্জ টা সরিয়ে নিয়ে জাংকুকের ঘুমের ভিতর বাড়ি খালি পেয়ে সেই  পুশ করেছিল জাংকুকের ধমনির উপর...






আমি আরো রেগুলারলি আপলোড করতাম কিন্তু আমার কলেজে পরীক্ষা চলছে। এই ২২ আগস্ট থেকে আমার এইচ এস সি পরীক্ষা শুরু হবার কথা কিন্তু বন্যার জন্য পিছিয়ে যাবে। যাই হোক আমি চেষ্টা করব যতোটা পারি আপলোড করতে। আর গল্পের একটা বড় টুইস্ট এসেছে। শেষ মেষ পাওয়া গেল জাংকুকের খুনীকে। আসতে আসতে আরো অনেক গোপন কথা জানা যাবে। সেগুলা জানতে বইটাকে ফলো করো। আর পারলে ভোট দিও। ভোট দেওয়া দেখলে লেখার স্পৃহা ১০ গুণ বেড়ে যায়। ধন্যবাদ =) 


শোধ বোধDonde viven las historias. Descúbrelo ahora