part- 3

360 18 7
                                    

3."অভীক দা ... অভীক দা ....আমাদের ডিপার্টমেন্ট এর করিডোরে মেঘলা অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে । "
সায়ন এর মুখে এ কথা শুনে অভীক দৌড় লাগায় ।
একছুট চলে আসে মেঘলার ডিপার্টমেন্ট এর করিডোরে । কয়েকজন মিলে মেঘলাকে ঘিরে রয়েছে । অভীককে দেখে সবাই সরে যায় । রিভার কোলে মাথা রেখে মেঘলা অচেতন হয়ে পড়েছিল । রিভা ভয়ে ভয়ে বলে
"দেখো না অভীক দা , চোখ খুলছে না তো..."
অভীক রিভার কল থেকে মেঘলার মাথা টা নিয়ে ওর চোখে হালকা হালকা জল ছেটায় "মেঘা এই মেঘা চোখ খোল ,কি হয়েছে তোর । "
অভিক মেঘলার চিবুক ধরে হালকা করে ঝাঁকাতেই ও ধীরে ধীরে চোখ মেলে।
অভীক যেনো দেহে প্রাণ পায় । রিভা সবাইকে বলে "মেঘলা এখন ঠিক আছে তোরা এখন যা। "
সবাই চলে যায় , অভিককে সবাই ভয় পায় আর শ্রদ্ধাও করে । মেঘলা চোখ খুলেই অভীক কে দেখে ।
অভীক রাগী রাগী স্বরে বলে "সকাল থেকে কিছু খাস নি তুই ? "
মেঘলা রুগ্ন কণ্ঠে বলে "খেয়েছিলাম । ঘুম কম হয়েছে বলেই হয়তো . "
অভীক ধমক দিয়ে বলে "ঘুম কেনো কম হবে , ঠিক টাইম ঘুমাতে পারিস না । "
"আজ ইন্টারনাল  exam ছিল তাই ... "
অভীক ওকে থামিয়ে দিয়ে  রিভাকে বলে "রিভা তুই স্কুটি চালাতে পারিস ? "
রিভা মাথা নেড়ে বলে "হ্যাঁ দাদা পারি..."
"এক কাজ কর তো বোন, তুই তো ওর পিজিতেই থাকিস তুই আজ ওর স্কুটিটা নিয়ে যাস । আমি ওকে আমার গড়িয়ে রেখে আসবো । "
রিভা মাথা নেড়ে বলে "আচ্ছা দাদা ..."
রিভা চলে যায় ।অভীক মেঘলা কে ধরে দাঁড় করায় , তার পরে ওকে ধরে ধরে হাঁটতে সাহায্য করে । পারলে কোলেই নিয়ে নিত , কিন্তু কম্পাসের মধ্যে কোলে নেওয়াটা শোভনীয় নয় । মেঘলা হাঁটতে হাঁটতে বারবার পেট চেপে ধরছে বুঝতে পরে অভীক ।
"কি হয়েছে ? পেটে ব্যাথা করছে । "
মেঘলা চুপ করে থাকে ।
অভীক চোয়াল শক্ত করে বলে "পিরিয়ড হয়েছে ??"
মেঘলা ওপর নিচ মাথা নাড়িয়ে বলে "হুমম... একটু বেশিই ব্লিডিং হচ্ছে  তাই শরীরটা দূর্বল লাগছে । "
অভীক চোয়াল শক্ত করে নেয় ।
মেঘলা কে গাড়িতে বসিয়ে অভীক নিজেও বসতে যাবে তখনই পাশ থেকে বিরোধী পার্টির দুজন ছেলে যাচ্ছিল । অভীককে  দেখে টিটকিরি মেরে বলে "দেখরে শেখর দেখ , পার্টির মেরুদন্ড এখন পার্টির কাজ ছেড়ে মেয়েবাজি করছে  "।
আরেকজন বলে "যা বলেছিস ভাই , এবারের ইউনিয়ন  ইলেকশনে গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে ভোট চাইতে বেরোবে । "
অভীক রাগে গাড়িতে এক ঘুষি মারে , ছেলে দুটোর উদ্দ্যেশ্যে তারস্বরে চিৎকার করে বলে "ওই শালা শুয়োরের বাচ্চা , দম থাকে তো সামনে এসে বল...."
মেঘলা অভীকের হাত ধরে করুন চোখে ওর দিকে তাকায় ।
"আমি স্কুটি চালিয়ে চলে যেতে পারতাম , আমার জন্য তোমায় কত কথা শুনতে হচ্ছে । "
অভীক চোয়াল শক্ত করে বলে "চুপচাপ বস তুই , যে নিজের শরীরের খেয়াল রাখে না সে এসেছে আমাকে জ্ঞান দিতে । কে বলেছিল পিরিয়ড এর সময় এত রাত জাগতে  । আমি একটা ছেলে হয়ে বুঝি পিরিয়ড এর সময় মেয়েদের কোন অসুবিধার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় আর উনি বোঝেন না । সব কথা বলে বলে শেখানো যায়না মেঘলা ।" মেঘলা চুপ করে থাকে ,  চোখের কোনায় জল জমেছে । অভীক  গাড়ি স্টার্ট দেয় আর বলতে থাকে "তুই আর পার্টি , দুটো জিনিস ছাড়া আমি অসহায় মেঘা । যেমন পার্টির দিকে কেও আঙ্গুল তুলে আমি সহ্য করতে পারি না । ঠিক তেমনি তোর একটু শরীর খারাপ হলে আমি নিজেকে ঠিক থাকতে পারি না । নিজের খেয়াল রাখবি তো নাকি ?"
মেঘলা কিছু বলে না । অভীক সামনে তাকিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিল তাই এতক্ষন বোঝেনি যে মেঘলা কাঁদছে , হঠাৎ মেঘলার নাক তোমার শব্দ পেয়ে অভীক ওর দিএক তাকাতেই দেখে ওর চোখে জল ।অভীক তারাতারি করে গাড়ি বড়ো রাস্তা থেকে নীচে নামিয়ে একটা নির্জন জায়গায় এসে থামে । নিজের এবং মেঘলার সিট বেল্টটা খুলে দেয় । অভীক ঘুরে গিয়ে মেঘলার হাত দুটো ধরে বলে "ঐ, কি হলো কাঁদছিস কেনো? আমি বললাম বলে ....আচ্ছা বাবা sorry আর হবে না । "
মেঘলা অভীককে  জড়িয়ে ধরে বলে "আই অ্যাম সরি.... আমার জন্য ক্যাম্পাসে তোমার রেপুটেশন নষ্ট হচ্ছে , সব আমার জন্য ...."
অভি যত্ন করে মেঘলার চোখের জল  মুছিয়ে দিতে দিতে বলে "ধুর পাগলী , আমার রেপুটেশন কি অত সোজা নাকি যে পারবে এসে  নষ্ট করে দেবে । এ জন্য তুই কাঁদছিস ? পাগল কোথাকার । "
অভীক মেঘলার দুই গালে হাত দিয়ে ওকে বলে "আচ্ছা শোননা , পেটে খুব ব্যাথা করছে তোর ? ডক্টরের কাছে যাবি ? "
মেঘলা দুদিকে মাথা নাড়িয়ে না বলে । আর মুখে বলে "মেডিসিন আছে আমার কাছে । "
অভীক মেঘলার কপালে চুম্বন করে বলে "বেশ তাহলে  তো কোনো সমস্যায় না।  "
অভীক মেঘলার গালে আর ঠোঁটে আলতো করে চুম্বন করে মেঘলার গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয় । মেঘলা উত্তেজনায় গাড়ির জানালায় হেলান দিয়ে অভীকের মাথা চেপে ধরে । অভীক মেঘলার গলায় ছোট ছোট করে চুষতে থাকে । কিছুক্ষন পরে মুখ তুলে অভীক বলে "আমার মেঘা অসুস্থ তাই আজকের জন্য এই টুকুই । "
মেঘলা মৃদু হাসে , অভীক ওকে অবাক করে দিয়ে ওর পা টা নিজে কোলের ওপরে তুলে নিয়ে পায়ের তলায় নিজের আঙ্গুল দিয়ে চাপ দিতে থাকে । মেঘলা খুব আরাম পায় । অভীক ভালোবাসায় ভরা কণ্ঠ নিয়ে বলে "পায়ের তলায় এইভাবে টিপে দিলে খুব আরাম হয় আমি জানি , একটু পরে দেখবি অনেকটা আরাম হয়েছে । "
মেঘলা  মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে অভীকের দিকে ।

(ক্রমশ...)

প্রেমিকা Where stories live. Discover now