Part - 42

281 11 2
                                    

42/প্রেমিকের প্রশস্ত বুকে মুখ গুঁজে ঘুমের অপেক্ষা করছিল মেঘলা , কিছু একটা মনে হতেই ওপরে মুখ তুলে চায় । অন্ধকারে কিছু বুঝতে না পারলেও চাদরের তলা হাত বের করে অভীকের মুখের ওপরে রাখতেই চমকে ওঠে মেঘলা । অভীকের চোখে জল? তাড়াহুড়ো করে উঠে বসে মেঘলা । অভীকের গায়ে হাত দিয়ে ডাকে "অভি... এই অভি ... কি হয়েছে তোমার... "
বেড সুইচের দিকে হাত বাড়িয়ে মেঘলা উজ্জ্বল আলোটা জ্বালায়। চাদর ত বুকের সাথে জড়িয়ে নিয়ে শুয়ে থাকা অভীকের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে "কি হয়েছে বাবু ... হঠাৎ এমন করছ কেনো তুমি ? তোমার চোখে জল কেনো .. "
অভীক কোমরের কাছে চাদরটা ঠিক করে উঠে বসেই মেঘলাকে জড়িয়ে ধরে । মেঘলা ওর পিঠে হাত রেখে বলে "কি হলো বলো আমায় , ভালই তো ছিলে ... বলোনা অভি... "
মেঘলার চোখেও জল আসার উপক্রম ... অভীক মেঘলাকে জড়িয়ে ধরে থাকা অবস্থাতেই কান্না মিশ্রিত কণ্ঠে বলে "তুই আমার থেকে দূরে চলে গেলে আমি বাঁচবো না মেঘ... তোর অভি তোকে ছাড়া মরে যাবে বিশ্বাস কর । তুই কোনোদিনও ছেড়ে চলে যাবি না তো  আমায় ।  আগের মত ভুলে যাবি না তো আমায়  ? বলনা মেঘ বলনা ... "
মেঘলার চোখেও জল চলে এসেছে । মেঘলা অভীকের দুই গালে হাত রেখে ওর চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে বলে "এত সুন্দর একটা সময় কাটানোর পরে তুমি কোথায় ঘুমিয়ে ভালো স্বপ্ন দেখবে তা না, overthinking করে কান্নাকাটি করছো । আচ্ছা অভি তোমার থেকে দূরে গিয়ে আমি কি বাঁচতে পারবো তুমি বলো । কিছুদিন আগে যেটা হয়েছে সেটা অ্যাকসিডেন্ট ছিল , সেরকম আর হবে না । আমরা হতে দেবো না । তুমি তো আমার স্ট্রং হিরো... তুমি এমন ভুলভাল চিন্তা করে কান্না করলে কি করে হবে বলো । এখনও আমাদের পুরো লাইফ বাকি ... জীবনের শেষদিন দিন অবধি আমি তোমার ঘাড়ে চেপে বসে থাকবো । এখন কান্না করে না ।  শুয়ে পরো ... দেখি মুখটা হাসো একবার । "
অভীক মৃদুস্বরে বলে "যাদেরকে আমি খুব ভালোবাসি তারা সবাই আমাকে ছেড়ে চলে যায়... তুই যাবি না তো বলনা বাবু "
মেঘলা অভীকের কপালে কপাল ঠেকিয়ে ম্যাচিওর প্রেমিকার মত বলে " যাবো না , কথা দিলাম । "
এই বলে অভীকের ঠোঁটে আলতো করে চুম্বন করে বলে "অনেক overthinking হয়েছে এবার ঘুমাবে এসো । "
মেঘলা শুয়ে ডানহাতটা বাড়িয়ে দেয় , অভীক ওর ডান হাতের ওপরে মাথাটা রেখে মেঘলার উম্মুক্ত বুকে মুখ গুঁজে শুয়ে পড়ে । মেঘলা খুব যত্নে ওর চুলের মধ্যে হাত বোলায় । মেঘলার বুকে শিশুর মত মুখ গুঁজে অভীক ধীরে ধীরে ঘুমের দিকে এগিয়ে যায় । আর অভীকের মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে মেঘলা ভাবে "এই পর্যায়ে ,সাধারণত ছেলেরা ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে... কিন্তু আমার অভি, যাকে আমি  এত  স্ট্রং ম্যান হিসেবে জানি , সে এত সুন্দর মুহূর্তের পরেও কেবলমাত্র আমাকে হারানোর ভয়ে  এইভাবে শিশুর মত কান্না করছে । এতটা ভালোও কেউ বাসতে পারে ? আমি কি এতটাই লাকি ?  মাঝে মাঝে আমার নিজের ওপরেই হিংসে হয় । তাহলে অন্যকারো হওয়াটা তো স্বাভাবিক । পৃথিবীতে একটাই এমন একটাই অভীক আছে যে কেবল আমাকেই ভালোবাসে ।  আমি জানি , আমার অভীক আমাকে ছাড়া আর কারোর দিকে তাকাবেও না ।  "
এইসব সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে  মেঘলাও ঘুমিয়ে পড়ে ।
দরজায় টোকা পড়ার শব্দে অভীকের ঘুম ভাঙে , ঘুম ভাঙতেই নিজেকে আবিষ্কার করে প্রেয়সীর নরম আলিঙ্গনের মাঝে , চোখের সামনেই প্রেয়সীর ফুলের মতো সুডৌল নরম বক্ষাংশ । ধবধবে ফর্সা স্তনযুগলে অভীকের ভালোবাসার চিহ্ন জ্বলজ্বল করছে । অভীক মৃদু হেসে মনে মনে বলে "কাল রাতে একটু বেশিই হয়ে গিয়েছিল । তবু পাগলীটা আমার কিচ্ছু বলেনি । "
অভীক ঘুমন্ত প্রেয়সীর দুই স্তনবৃন্তকে একবার করে দুই ঠোঁটের মাঝে নিয়ে আদর করে দেয় । দরজায় আবার টোকা পড়তেই অভীক বিরক্ত হয়ে উঠে বলে "ধুর.... "
অভীক বিছানা ছাড়ার আগে মেঘলার মুখের ওপরে ছড়িয়ে থাকা চুলগুলো কানের পাশে গুঁজে দিয়ে , ওর গায়ের চাদরটা ঠিক করে দিয়ে বিছানা থেকে নেমে দাঁড়ায় ।
"জামাকাপড় কোথায় আমার? " বিছানায় পা ঝুলিয়ে নিজেকে চাদরে আড়াল করে মনে মনে বলে অভীক।
অভীক পড়েছে বিপাকে । ওদিকে দরজায় নক পড়তেই আছে । অভীক নিজের কপালে হাত মেরে বলে " দাঁড়া রে ভাই , আমার বউটা ক্লান্ত আছে ওর ঘুম ভেংগে যাবে । কিসের এত দরকার যে  এত সকাল সকাল নক করে যাচ্ছিস । "
অভীক নিজের জামাকাপড় খুঁজে পায় না । তাড়াতাড়ি ফ্লোর থেকে শুধু নীচে পড়ার জিনিস গুলো তাড়াতাড়ি খুঁজে পরে নেয় । পড়তে পড়তে বলে "পাগলীটা কাল কি যে করেছে ও নিজেই জানেনা মনে হয় । পাগল করে দিয়েছিল আমায় । "
অভীক দরজা খুলতে গিয়ে আয়নার দিকে তাকিয়ে থেমে যায় । ওর গলায় বুকে বিভিন্ন জায়গায় লাভ বাইটের চিহ্ন ।মুখে লিপস্টিক এর দাগ পর্যন্ত লেগে আছে।  অভীক আয়নায় নিজেকে দেখে মুচকি হেসে বলে "কখনো কখনো শরীরে দাগ লেগে থাকা ভালো । "
মেঘলার ঘুম অনেক আগেই ভেঙেছে ।তবু ঘুমানোর নাটক করছিল ও , পিটপিট করে একটা চোখ খুলে অভীকের কাণ্ড দেখছিল ও । অভীক আয়নায় নিজের বডি দেখছে আর কি যেনো বিড়বিড় করছে, মেঘলা বালিশে মুখ গুঁজে হাসে  । দরজায় আবার নক পরে , মেঘলা শুয়ে শুয়েই বলে "এই মেয়েটার সমস্যা কি ?"
অভীক দরজা খুলে দেখে অঞ্জনা দাঁড়িয়ে । অভীক একটু রাগান্বিত স্বরেই বলে "বললাম তো আসছি ,এত ডাকার কি আছে ? এতক্ষন ধরে নক করছিস যখন নিশ্চয় খুব দরকার কি কাজ বলে ফেল । "
অঞ্জনা চোখের সামনে অভীককে এইভাবে দেখে পুরো অবাক । ওর শরীরের উপরিভাগে একটা সুতোও নেই , গলায় বুকে লাল লাল চিহ্ন । কপালে ,নাকের পাশে লালচে কিছু লেপটে আছে , মনে হচ্ছে লিপস্টিক ।
অঞ্জনাকে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে অভীক ওর মুখের সামনে হাত নেড়ে বলে "কি দরকার বল ?"
অঞ্জনার হুঁশ ফিরে,আমতা আমতা করতে করতে বলে "মাথা যন্ত্রণার ওষুধ আছে? মাথাটা খুব ধরেছে থাকতে পারছি না ... "
অভীক ভ্রু কুঞ্চিত করে বলে "এই টুকু ব্যাপারের জন্য এত তোলপাড়.. টিভির নিচের ড্রয়ারে আছে ।"
অঞ্জনা দুদিকে মাথা নেড়ে বলে " আচ্ছা .."
অঞ্জনা যেতে গেলে অভীক বলে "আচ্ছা শোন না ..."
"হুমম বলো ... "
"আমরা কিছুক্ষন, ঘুমাবো বুঝলি , এত জোড়ে নক করিস না । মেঘের ঘুম ভেঙ্গে যাবে । আমি চাই ও একটি রেস্ট নিক, ওর রেস্ট দরকার  । তোর কিছু দরকার হলে একটু অ্যারেঞ্জ করে নিস প্লিজ ... কিচেনে সব জিনিস আছে ।.   "
অঞ্জনা মাথা নেড়ে বলে আচ্ছা । অঞ্জনা ঘুরে যেতেই অভীক আবার দরজাটা লাগিয়ে দেয় ।মেঘলা এতক্ষন এক চোখ খুলে সব দেখছিল , অভীকের কথা গুলো শুনে ও খুব মজা পায় , অভীক কে আসতে দেখেই চোখ বন্ধ করে নেয় ।

অভীক আবারও  দরজা লাগিয়ে দেবে এটা ভাবেনি অঞ্জনা । ওর মনে একটাই প্রশ্ন জাগে "খালি মেঘলার কপালেই এত সুখ কেনো ? মেঘলা কি এমন করেছে যে অভীক ওকে এত ভালবাসে ।"।
ভাবতে ভাবতে অঞ্জনা সোফায় এসে বসে ।মাথা যন্ত্রণার ওষুধ ওর এমনিতেও দরকার নেই ,ওটা কেবল বাহানা মাত্র । কাল সারারাত  বারান্দায় কাটিয়েছে অঞ্জনা , মেঘলার সুখের শীৎকার কিছুটা হলেও ওর কানে এসেছে যা ওকে সারারাত ঘুমোতে দেয়নি , যা ওর শরীরে ঈর্ষার আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে , আর আজ সকালে অভীকের  উম্মুক্ত পুরুষালি শরীরের নিখুঁত উপরিভাগে মেঘলার চিহ্ন এই ঈর্ষার আগুনে আরো ঘী ঢেলেছে ।
অঞ্জনা সোফায় গা এলিয়ে ঈর্ষার আগুনে জ্বলতে থাকে। ওর কানে এখনও মেঘলার তৃপ্তি ভরা শীৎকার বাজছে। 

অভীক দরজা বন্ধ করে  এসে আবার চাদরের মধ্যে ঢুকে পড়ে প্রেয়সীর বুকে মুখ গুঁজে দেয় , কিছুটা আদর খাওয়া এখনও বাকি , কিছুটা আদর করা এখনও বাকি । অভীক চাদরের তলায় মুখ ঢুকিয়ে মেঘলা ঘুমাচ্ছে ভেবে ওর স্তনে জিভ দিয়ে আর ঠোঁট দিয়ে আদর করতে থাকে, হাত বোলাতে থাকে  । আর মেঘলা ঘুমনোর নাটক করে তা উপভোগ করতে থাকে ।

প্রেমিকা Where stories live. Discover now