part - 16

241 12 3
                                    

16/মেঘলা ঘুম থেকে উঠে  সাদা চাদরটা নিজের গায়ে জড়িয়ে বুকের কাছে গুঁজে নিয়ে বিছানা  থেকে নেমে দাঁড়ায় । বাইরে থেকে অভীকের গলার আওয়াজ আসছে , কারোর সাথে ফোনে কথা বলছে হয়তো । মেঘলা  চাদর টা ঠিকঠাক করে দরজার কাছে এসে দাঁড়ায় । ফোনটা স্পিকারে দিয়ে পাশে রাখা আর অভীক  ঘরের দরজার দিকে পিঠ করে জুতো পলিশ করছে ।
- অভী, বেটা এত তারাতারি একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া কি ঠিক হলো ? আই মিন তুই তো বলেছিলি আমায় মেঘলার এখনও gradution কমপ্লিট হয়নি । মেয়েটা তো এখনও অনেক ছোট ।
- আমি জানি ড্যাড, ও হয়তো আমার মত mature না , আমি ওর টেক কেয়ার করতে  পারবো বাট কোনো কিছুর বিনিময়ে ওকে হারাতে পারবো না ।
দরজায় দাড়িয়ে মেঘলা শুনছিল,  অভীকের এই কথাটাই ওর চোখে জল নিয়ে আসে । অভীক আবার বলে - মেঘলাকে  তো তুমি শুধু ছবিতে দেখেছো ড্যাড , ওকে একবার সামনে থেকে দেখবে পুরো ডল....
অভীক এর বাবা হাসেন - আমার ছেলের পছন্দের ওপর আমার ভরসা আছে । কিন্তু অভী মেঘলার বাবা মা ?
- সেটা একটা টেনশন আছে ড্যাড... দিল্লি থেকে ফিরে সেই ব্যাপার টা হ্যান্ডেল করবো । তুমি থাকবে তো ড্যাড আমার পাশে ?
- এমন কখনো হয়েছে যে আমার ছেলের পাশে আমি থাকিনি ?
- লাভ ইউ ড্যাড ... রণিত আর তানি কেমন আছে ড্যাড ...
- ওরা খুব ভালো আছে তোকে খুব মিস করে ।
অভীক এর গলার স্বর নিচু  হয়ে যায় , মৃদুস্বরে  জিজ্ঞেস করে "আর ওদের মা কেমন আছে ? "
- "রিনা তো তোরও মা হয় অভী , কতদিন থেকে ওয়েট করে আছে তুই ওকে একবার মা বলে ডাকবি । প্লিজ বেটা , রিনাকে একবার মা বলে ডেকে দেখিস...  ।"
অভীক বলে - তুমি জানো বাবা , মা একটায় হয় , আর আমার মাও একজনই ছিল । এখন যে আছে সে তোমার স্ত্রী  , রনিত আর তানির মা ... আমার কেউ নয় । বাই ড্যাড , টেক কেয়ার ।
অভীক এর বাবার গলাটা ভারী হয়ে আসে , উনি খুব মৃদু স্বরে বলেন "তুইও সাবধানে থাকিস । মেঘলাকে আমার অনেক আশীর্বাদ । টাকা লাগলে অবশ্যয়  জানাস , আমি তবুও কিছু টাকা তোর অ্যাকাউন্টে দিয়ে দিচ্ছি এখন । "
অভীক এর বাবা ফোন কেটে দেয় ।
অভীক ফ্লোরে বসে জুতো পলিশ করছিল ।  মেঘলা পেছন থেকে এসে ওকে জড়িয়ে ধরে ওর গালে সশব্দে চুম্বন করে । অভীক ওর হাত দুটো ধরে চুম্বন করে ওকে পেছন থেকে সামনে নিয়ে এসে কোলের ওপর বসায়।
"গুড মর্নিং ম্যাডাম , ঘুম হলো? "
মেঘলা প্রসন্নতার হাসি হেসে বলে "দারুন.."
অভীক ওর পরনের চাদরটা দেখে , গায়ের সাথে জড়িয়ে গিট্টু করে বুকের কাছে গোঁজা । অভীক চোখ বড়ো বড় করে বলে "এটা কি ? "
মেঘলা বলে "কি করতাম , ঘুম থেকে উঠে দেখি কিছু নেই এই চাদরটা ছাড়া .. "
অভীক একটু ভাবুক হয়ে বলে "আমি ধুয়ে দিয়েছি সব ... "
"কিছু পেলাম না বলেই তো এটা করতে হলো আমায় । "
অভীক দুষ্টু হাসি হেসে বলে "জড়ানোর কি ছিল , না পড়লেও কিছু যায়  আসতো না । "
মেঘলাও কম যায়না ।  চাদরটা খুলতে যায় "তাহলে খুলে দি..."
অভীক ওকে বাঁধা দিয়ে বলে "এই না , এখন এসব না ,  আমায় বেরোতে হবে । "
মেঘলা খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে ।
অভীক মেঘলাকে সোজা হয়ে  বসায় । মেঘলার পিঠটা অভিকের বুকে ঠেকে । অভীক মেঘলার দুইহাতের তলা দিয়ে হাত নিয়ে গিয়ে মেঘলাকে জড়িয়ে ধরে ওর কাঁধে থুতনি রেখে বলে "তাহলে... Birthday তে আমার জান এর কি চায় ? "
মেঘলা দুলতে দুলতে বলে "কিছু না ..."
অভীক অবাক হয়ে বলে "কিছু না ? "
মেঘলা এবার ঘুরে গিয়ে অভীক এর মুখোমুখি বসে ওর গলা জড়িয়ে ধরে বলে "তোমার সাথে আরো পঞ্চাশটা বার্থডে চাই আমি ..."
অভীক মৃদু হেসে মেঘলার চুল থেকে পিঠে হাত বোলাতে বোলাতে বলে "দেবো , I promise..."
মেঘলা অভিকের কপালে কপাল ঠেকিয়ে ওর ঠোঁটটা নিজের মুখে নিয়ে স্মুথলি চুষতে থাকে । কিছুক্ষন পরে ছেড়ে দিয়ে অভীকের গলা জড়িয়ে ধরে বলে "আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না অভী...."
অভীক এর বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে ওঠে । অভীক নিজের আবেগ লোকানোর জন্য বলে "স্নান করে নে গিয়ে , আমাদের বেরোতে হবে  তো..."
মেঘলা বুকের কাছে চাদরটা ধরে উঠে দাঁড়ায় । অভীক এর   ঘড়িতে ওর চাদরের একটা সুতো আটকে গিয়েছে তাই মেঘলাকে যেতে গিয়েও থামতে হয় । অভীক সেটা ছাড়িয়ে দেয় । মেঘলা মৃদু হেসে বলে "আমি এই গেলাম আর এই এলাম । "

আজ সারাদিন দুজনেরই অনেক কাজ ছিল । মেঘলার ক্লাস আর অভীকের ফাইনাল প্রেজেন্টেশন । মেঘলার ক্লাস শেষে অভীক ওকে নিয়ে শপিংয়ে যায় । রাস্তায় যেতে যেতে মেঘলা বলে "তুমি তো দিল্লি যাবে , শুধু শুধু ট্রেন এ যাওয়ার কি ছিল ? ফ্লাইটে গেলে তারাতারি যেতে পারতে..  আমার কাছ থেকে তিনদিন আগে বেরোতে হতো না তাহলে । "
অভীক ওর দিকে তাকিয়ে বলে "ফ্লাইটে তো একটা স্পেসিফিক  ওজনের জিনিস নিয়ে যাওয়া যায় আর আমি অনেক জিনিস নিয়ে যাবো , আর মিডিল এর কিছু স্টেশনে লোক থাকবে তাদের থেকে আমায় কিছু জিনিস নিতেও হবে । ফ্লাইটে তো সেটা  সম্ভব না তাই না ..." মেঘলা সুর ধরে বলে "ও ও ও ও ও ও ও
অভীক হেসে বলে "বুঝলি ?"
মেঘলা বলে "হ্যাঁ...., জানোতো... বার্থডেতে বন্ধুদের খাওয়ানোর জন্য বাবা টাকা পাঠিয়েছে আমায় ।  "।
"তাই নাকি ? কাকে কাকে ট্রিট দিবি শুনি ? "
মেঘলা বলে "রিভা দিকে আর আমাদের ক্লাসের অঞ্জনাকে... আর কাওকে না ..."
অভীক ভ্রু কুঞ্চিত করে বলে "মাত্র দুজন ? আর কেউ না ? "
মেঘলা দুদিকে মাথা নেড়ে বলে "উম হুম...  নীলা কে বলা যেত কিন্তু ?  "
"কিন্তু কি ? "
মেঘলা বাচ্চাদের মত করে বলে "ক্লাসে সব সময় অভীকদা অভীকদা করে, অভীক দা এই অভীক দা ওই ..   আমার ভালো লাগে না "
অভীক হা হা করে হেসে ওঠে ,"আমার নামে  কথা বলে তাই তোর রাগ হয় ?  ..."
" কেনো হবে না রাগ ? তোমাকে কি কালারের জামা পড়লে মানাবে সেটা আমি দেখবো ও কেনো দেখবে , তুমি কতটা হ্যান্ডসাম সেটা আমি সবাইকে এক্সপ্লেন করবো ও কেনো করবে । তোমার বেয়ার বডি দেখতে কেমন সেটা আমি জানি ও কেনো  সেটা নিয়ে স্বপ্ন দেখবে...... তুমি শুধু আমার ..."
অভীক মেঘলার দিকে তাকিয়ে হাসে  আর বলে "একদম ঠিক... আমি জড়িয়ে ধরলে কেমন লাগে সেটা তো কেবল তুই জানবি "
মেঘলা মাথা নাড়িয়ে বলে "হ্যাঁ তো... "
অভীক হেসে বলে "আমার ঠোঁটের স্বাদ কেমন সেটা তো কেবল আমার মেঘা জানে ...."
মেঘলা হ্যাঁ বলতে গিয়ে থেমে গিয়ে লাজুক হাসে । অভীক ওর দিকে তাকিয়ে দুষ্টু হেসে  বলে "থেমে গেলি কেনো বল..."
মেঘলা অভীক এর গায়ে আলতো চাপর মেরে বলে "তুমি খুব বাজে ... "
অভীক গাড়ি চালানোয় মন দিয়ে বলে "অভীকের ব্যাপারে মেঘলা , মেঘলার ব্যাপারে অভীক আরো অনেক কিছু জানে যেটা পৃথিবীর কেউ জানেনা । আর কোনোদিন জানবেও না তাই না মেঘা । "
মেঘলা আলতো করে মাথা নেড়ে বলে "হুমম..."।

প্রেমিকা Where stories live. Discover now