Part - 23

193 8 2
                                    

23/"মেঘা..."
"আমি বাইরে...."
অভীক ঘর থেকে বেরিয়ে এসে দেখে বারান্দায় ও মেঘা নেই । আবার ডাকে ওকে , মেঘা উত্তর দেয় "আমি ব্যালকনিতে "
অভীক ব্যালকনির দিকে এগিয়ে আসে , সামনেই দেখতে পাও চেরি সরু ফিতের ব্যাকলেস ব্লাউসের সাথে রেড কালারের একটা পাতলা সিল্কের শাড়ি পরে ,  এক হাত ভর্তি লাল চুড়ি, খোলা চুলে মহ ওই রূপে দাঁড়িয়ে আছে মেঘলা । অভীককে  দেখেই নিজের তর্জনীর ইশারায় কাছে ডাকে । মেঘলা এইভাবে দেখে অভীক শুকনো ঢোক গিলে ।
"ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকবে নাকি এগিয়ে আসবে । কতদিন দূরে ছিলাম আমরা একে অপরের থেকে তারাতারি এসো আমার কাছে । "
মেঘলার ডাকে অভীক সারা না দিয়ে পারে , ও পায়ে পায়ে এগিয়ে যায় মেঘলার কাছে । মেঘলা নিজের দুটো হাত দিয়ে অভীকের গলা জড়িয়ে ধরে । অভীক তার পুরুষালি দুইহাত রাখে মেঘলার শাড়ির ফাঁকের উম্মুক্ত কোমরে । মেঘলার লাল লিপস্টিকে  রাঙানো দুটি ঠোঁটে নিজের পুরু ঠোঁটদুটি মিলিয়ে দেয় । কতদিনের অপেক্ষার অবসান হয় । দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে প্রেয়সীর নরম ঠোঁটদুটি নিজের নাগালে পেয়েছে অভীক , প্রাণভরে সেই ঠোঁটের মধুর শুষে নিতে থাকে । মেঘলার ঠোঁট আর জিভ উম্মাদের মত চুষতে থাকে অভীক , নিশ্বাসের  ঘাটতি অনুভব করছে দুজনেই তবু যেনো ছাড়তে ইচ্ছে করছে না । অভীক হাত আরো শক্ত করে চেপে বসছে মেঘলার উম্মুক্ত কোমরে । মেঘলা আরো ভীষণভাবে অবলম্মবন করতে চাইছে অভীককে দুজোড়া ঠোঁট আর দুটি জিভের দ্বন্দ্ব চলছে যেনো । হঠাৎ দরজায় টোকা পরে "গুরু দরজা খোলো..."
দুজনের কেউই শুনতে পায়না যেনো , ওরা একে অপরেই নিমজ্জিত ।
আবার ডাক আসে "গুরু দরজা খোলো .. "
অভীক খানিক বিরক্ত হয় কিন্তু এমন ভাব করে যেনো কিছুই শুনতে পায়নি । এবার আওয়াজটা আরো তীব্র হয় "গুরু ... রাত হয়ে এসেছে ওঠো .... "
অভীক হুড়মুড় করে উঠে বসে । চারিদিকে তাকিয়ে দেখে এটা তো ওদের ইউনিয়ন রুম , মেঘলা কোথায় ? মেঘলা তো নেই । পাশেই দাঁড়িয়ে আছে নিখিল, চন্দন আর চয়ন। নিখিলের মুখের দিকে তাকিয়ে অভীক অস্ফুটে জিজ্ঞেস করে "মেঘলা কোথায় ? এখানেই তো ছিল কোথায় গেল? "।
চন্দন বিষন্ন মুখে বলে "এটা তো ইউনিয়ন রুম গুরু , এখানে মেঘলা তো নেই । তুমি হয়তো স্বপ্ন দেখছিলে । "
"স্বপ্ন... " অস্ফুটে বলে ওঠে অভীক । পরক্ষনেই ওর মনে পরে যায় বাস্তবটা । SB ম্যামের কথা গুলো । ওর মেঘলার নাকি কিছু মনে নেই । ইংলিশ ডিপার্টমেন্ট থেকে বেরিয়ে এসে এই ইউনিয়ন রুমে এসে বসেছিল , তারপরে কখন ঘুমিয়ে পড়েছে মন নেই । বুকের ভেতরটা খালি খালি লাগছে অভীকের । তবে কি ওর মেঘা ওকে সত্যি ভুলে গিয়েছে । অভীক নিজের মনেই বিড়বিড় করতে করতে বলে "না না , এটা কি করে সম্ভব ।মেঘা আমাকে কি করে ভুলতে পারে । ও তো বলেছে ওনার মনের মধ্যে আমি আছি । ওর তো স্মৃতি মুছে গিয়েছে হৃদয় থেকে তো মুছে যাইনি নিশ্চয় আমি । আর ওর শরীর... ওর শরীরের কোনায় কোনায় যে আমার ছোঁয়া  রয়েছে  সেগুলো নিশ্চয় আমার মেঘা ভুলে যায়নি । ভুলে যেতেই পারেনা । "
অভীক কে নিজের মনে বিড়বিড় করতে থেকে চন্দন ওর ঘাড় ধরে  ওকে ঝাঁকায় "গুরু কি বলছো তুমি একা একা । বাড়ি যাবে না ? "
অভীক শূন্য দৃষ্টিতে চন্দনের মুখের দিকে তাকায় । বুকভরা অভিমান নিয়ে বলে "তোরাও আমাকে ধোকা দিলি, তোরাও সত্যিটা আড়াল করে গেলি আমার থেকে । তোরা তো বলিস তোরা আমাকে খুব ভালোবাসিস । তাহলে কি করে পারলি চন্দন।  "
নিখিল ভয়ে ভয়ে বলে "কি লুকিয়েছিল আমরা গুরু..."
অভীক ভাঙ্গা ভাঙ্গা কণ্ঠে মাতালের মত বলে "আমার মেঘলার অ্যাকসিডেন্ট হয়েছে , ও অনেক কিছু ভুলে গিয়েছে তোরা তো বলিসনি আমায় । তোর আমাকে দিনের পর দিন মিথ্যে বলে গিয়েছিস । "
চন্দন , চয়ন আর নিখিল অভীকের মুখ থেকে এই কথা শুনে ভয় পেয়ে যায় । ওরা ভয়ে ভয়ে বলে "তুমি জেনে গিয়েছ । "
অভীক মাতালের মত টলতে টলতে উঠে দাঁড়ায় "তোরা কি করে ভাবলি আমি জানতে পারবো না । আমার মেঘার এত বড় বিপদে আমি পাশে ছিলাম না । আমি অপরাধী .. "।
এই বলে অভীক এগোতে গেলে পরে যেতে যায় । চন্দন আর চয়ন এগিয়ে এসে ওকে ধরে ফেলে "গুরু সামলে ... নিজেকে সামলাও .. "
অভীক একেবারে ভেঙে পড়েছে বুঝতে পরে ওরা । চন্দন অভীককে  জড়িয়ে ধরে বলে "তুমি নিজেকে  সামলাও  গুরু... বৌদি ভালো হয়ে যাবে । বৌদির সব মনে পড়ে যাবে । এভাবে ভেঙে পোড়ো না । "
অভীক কান্না ভেজা কণ্ঠে বলে "কবে আমার মেঘাকে একটু জড়িয়ে ধরতে পারবো আমি। কখন ওর হাত দুটো ধরে বলতে পারবো তোর ভয় নেই আমি আছি ।   "
অভীক কে কাঁদতে দেখে সবার খুব কষ্ট হয় ।কিন্তু নিজেদের কষ্টটা  আড়াল করে রেখে ওরা অভীক কে সামলায় ।

প্রেমিকা Where stories live. Discover now