part - 19

214 9 2
                                    

19/"মেঘা... এদিকে আয় দেখে যা আমায় তোর জন্য কি বানিয়েছি । "
পেছন থেকে অভীকের আওয়াজ আসতেই মেঘলা নিজের চোখের জল মুছে নেয় । রাত্রি সাড়ে দশটা বাজে । অভীক রান্নাঘর  থেকে সদ্য বানানো ফ্রাইড রাইস আর গার্লিক চিকেনটা এনে টেবিলের ওপরে রাখে । মেঘলা ব্যালকনিতেতে দাঁড়িয়ে ছিল । পরশুদিন অভীক চলে যাবে ভেবেই কান্না পাচ্ছে ওর । শুনতে একটু ন্যাকা ন্যাকা লাগলেও মেঘলা এরকমই , একদম বাচ্চাদের মত । অভীক মেঘলার সাড়া না পেয়ে ব্যালকনির দিকে আসে পেছন থেকে মেঘলাকে জড়িয়ে ধরে বলে "চলো বেবী , খাবার ঠান্ডা হয়ে যাবে তো । "
মেঘলা ধরা গলায় বলে "যাচ্ছি।"
মেঘলার ধরে আসা গলার স্বর শুনে অভীকের সন্দেহ হয় । মেঘলা নিজের দিকে ঘুরিয়ে ওর থুতনি ধরে মুখটা ওপরে তুলে বলে "তুই কাঁদছিস ? "
মেঘলা দুইদিকে  মাথা নাড়িয়ে বলে "কই না তো ... "
অভীক চোয়াল শক্ত করে বলে "দৃষ্টি এড়াচ্ছিস কেনো ? আমার চোখের দিকে তাকা... "
মেঘলা তবুও অভীকের চোখের দিকে তাকাতে পারে না । অভীক ঠান্ডা স্বরে বলে "আমার থেকে নিজের চোখের জল আড়াল করতে পারবি ভেবেছিস ? তুই আমাকে কি ভাবিস মেঘা ? আমি তোর কান্নার রঙ চিনি না ? You are my life megha... তুই আমার হার্টবিট... তোর জন্মদিনের দিন তুই এইভাবে কাঁদছিস আমার ভালো লাগছে ?... "
মেঘলা অভীককে  জড়িয়ে ধরে হু হু করে কেঁদে ওঠে "যেও না প্লিজ ... আমি থাকতে পারবো না পনেরো দিন তোমায় ছাড়া এখানে ? "
অভীক এরও কি কম কষ্ট হচ্ছে ? ও কেবল দেখতে পারছে না ওর ভেতরের কষ্টটা  । মেঘলাকে নিজে বুকের সাথে জাপটে ধরে ওর মাথার ওপরে নিজের গাল স্পর্শ করে । আজ অভীকের চোখেও জল কিন্তু সেই জল মেঘলাকে দেখতে দেয় না ।
রাতের খাওয়া দাওয়া শেষে মেঘলা ঘরে আসে । অভীক বিছানার ওপর অনেক জিনিসপত্র ছড়িয়ে বসে আছে । মেঘলাকে দেখে বলে "তারাতারি আয় ,"
মেঘলা বলে "কেনো কি হলো ? "
"আরে এত্তোগুলো গিফট আনপ্যাক করতে হবে তো ... "
"ইচ্ছে করছে না এখন..."
"ইচ্ছে করছে না বললে হবে , আমি যাওয়ার আগে দেখে যাবো না আমার মেঘাকে কে কি দিলো ... "
মেঘলা মুখ ভার করে খাটে এসে বসে । অভীক ওর হাতটা ধরে ওকে নিজের কাছে টেনে ওকে একহাতে জড়িয়ে ধরে বলে "প্রথমে রিভার দেওয়া গিফট ... দেখিতো রিভা কি দিয়েছে ...  একটু হাস না মেঘা ... "
মেঘলার মুখে হাসি নেই দেখে অভীক ওকে জোর করে কাতুকুতু দেয় । রিভার দেওয়া গিফট টা আনপ্যাক করা হয় । একে একে সবার গিফট আনপ্যাক করা হয় । মেঘলার মন খারাপ একটু ঠিক হয়েছে । কারণ চন্দন আর নিলয় মিলে ওকে একটা অনেক বড়ো ফটোফ্রেম গিফট করেছে সেখানে ওর আর অভীকের অনেক দুষ্টুমি ভরা মিষ্টি মিষ্টি মুহূর্তের ছবি কোলাজ করে বাঁধানো । মেঘলা ফটোফ্রেম এর ওপরে হাত বুলিয়ে বলে "এই ছবি গুলো ওদের তুমি দিয়েছো ? "
অভীক বলে "আমি না দিলে ওরা এইসব ছবি কোথায় পাবে ? "
মেঘলা মৃদু হেসে অভীকের বুকে মাথা রাখে । অভীক মেঘলার কপালে চুম্বন করে বলে "আমি যদি দিল্লি গিয়ে তোকে রেগুলার ফোন না করতে পারি তোর কি খুব কষ্ট হবে মেঘা । "
মেঘলা বলে "কষ্ট তো একটু হবে কিন্তু তোমার যদি খুব অসুবিধে হয় রোজ রোজ ফোন করার দরকার নেই । "
"এইতো আমার সোনাটা বড়ো হয়ে গিয়েছে । কিরকম বুঝতে শিখে গিয়েছে । "
মেঘলা অভীককে আরেকটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে " আমি তো বড়োই । "
দুজনে গিফট গুলো বিছানার ওপর থেকে তুলে সোফার ওপরে রাখে । তারপরে দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে । সকাল বেলা যখন মেঘলার ঘুম ভাঙ্গলো তখন অভীক ওকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে । মেঘলার পিঠ অভীকের বুকে ঠেকে আর অভীকের মুখ মেঘলার কাঁধের কাছে আর অভীকের একটা হাত মেঘলার নাইট স্যুট এর শার্টের ভেতরে । ঘুম ভাঙতেই নিজের জামার ভেতরে  অভীকের হাতের স্পর্শ অনুভব করে মেঘলা । অভীক এর এখন এটা রোজকার অভ্যেস । ঘুমের ঘোরেও ওর হাত ঠিক জায়গায় করে নেয় মেঘলার নরম বক্ষাংশে ।

প্রেমিকা Where stories live. Discover now