Part - 35

181 8 1
                                    

35/মেঘলা বই খুলে সোফার ওপরে বসে আনমনে পাতা ওলটাচ্ছে। অভীক অনেকগুলো কাগজপত্র বগলদাবা করে অফিসার ব্যাগ গলায় ঝুলিয়ে অন্যহাতে ফ্ল্যাটের দরজার চাবি ঘুরিয়ে দরজা খুলে ভেতরে আসে । ভেতরে এসে মেঘলাকে দেখে ঠোঁট ওল্টায় "আরে বাপরে একি দেখছি আমি .... না বলতেই পড়তে বসে গিয়েছে , very good ... "
হাতের জিনিসগুলো টেবিলের ওপরে রেখে মেঘলার দিকে তাকিয়ে দেখে মেঘলা ওর কথার উত্তর তো দিলই না , উল্টে বইয়ের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে । অভীক মনে মনে বলে "ম্যাডামকে না জানিয়ে ক্যাম্পাসে গিয়েছিলাম , তার ওপরে  এত লেট করেছি... ঠিক কতটা রেগে আছে বুঝতে পারছি না তো ... কাল আস্ত হয়ে অফিস যেতে পারলেই  হলো ।  "
অভীক গলা ঝেড়ে নিয়ে  বলে "মেঘা..... ও সোনা... রাগ করেছিস,?"
মেঘলা আনমনা হয়ে বলে "না... "
অভীক ভ্রু কুঞ্চিত করে ওর দিকে তাকায় । মনে মনে বলে "খুশি থাকলে লাফিয়ে এসে জড়িয়ে ধরে , আর রেগে থাকলে কথায় কথায় বোম ব্লাস্ট করে ... আজ তো মনে হচ্ছে পাত্তাই দিচ্ছে না । মুখ দেখেও মনে হচ্ছে না পেটে ব্যাথা করছে বলে । কি এত ভাবছে ও... "
অভীক মুখ কিছু না বলে জামাকাপড় বদলাতে চলে যায় । জামাকাপড় বদলে এসে মেঘলার পাশে বসতেই খুব অদ্ভুতভাবেই মেঘলা  ওর কোলে মাথা  রেখে ওকে জড়িয়ে ধরে  রেখে ।মেঘলার চোখের ভাষা অভীকের ঠিক লাগছে না । অভীক মেঘলার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে বলে "কি হয়েছে তোর বাবু , শরীরটা খারাপ লাগছে ? চারদিন তো কেটে গিয়েছে, এখন  তো পেটে ব্যথা কমে যাওয়ার কথা এখনও কি তোর পেটে ব্যাথা করছে ? "
মেঘলা আনমনে বলে "শরীর খারাপ ও করছে না , পারে ব্যথাও করছে না । "
মেঘলা ওর কোলে মাথা রেখে শুয়েছিল এমন অবস্থায় অভীক ওর গালে চুম্বন করে বলে "তাহলে কি হয়েছে বল আমায় ... না বললে সমাধান কি করে হবে ? "
মেঘলা অস্ফুটে বলে "আমার কিছু হয়নি..  "
অভীক অবাক হয়ে বলে "তাহলে? বাড়ির জন্য মন খারাপ করছে ? বাড়ির সবাইকে মিস করছিস ?"
মেঘলা বলে "একটু আগেই মায়ের সাথে কথা বললাম ।"
অভীক ব্যস্ত হয়ে বলে "তাহলে হয়েছে টা কি? "
তখনই অভীকের চোখ যায় টেবিলের ওপরে রাখা কাটার ওষুধটার অর্থাৎ মলমটার দিকে । অভীক ভয় পেয়ে বলে "এই মেঘা, এখানে মলমটা কেনো ? তোর হাতপা কিছু কেটে যায়নি তো ? দেখি ওঠ একটু... "
অভীক মেঘলার হাত ধরে ওঠায় , পাগলের মত মেঘলার হাত পা মুখ ছেলে করতে থাকে । আর বলতে থাকে "কোথাও কেটে যায়নি তো সোনা ... এটা এখানে কেনো বলনা .. "
মেঘলা অভীকের গলায় মুখ ডুবিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে বলে "শান্ত হও... কিছু হয়নি আমার ... ওটা এমনি রাখা .. "
অভীক অবাক হয়ে বলে "এমনি রাখা মানে ?তুই জানিস আমি কতটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম ।"
মেঘলা অভীকের গলায় মুখ গুঁজে মনে মনে ভাবে "শুধুমাত্র একটা ওষুধ দেখে এত ভয় পেয়ে গেলে তুমি ? সব পুরুষ তোমার মত কেনো হয়না অভি ? "
অভীক মেঘলাকে জড়িয়ে ধরে ওর মাথায় হাত  বোলায় , মেঘলা তখনও অভীকের গলায় মুখ গুঁজে রয়েছে । অভীক থাকতে না পেরে আবার জিজ্ঞেস করে "এই মেঘা , কি হয়েছে বলনা তোর ? "
মেঘলা একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলে "ধর্ষিত হয়ে যাওয়ার পরে একটা মেয়ের শরীর কেমন দেখায় তুমি দেখেছ কখনো ?"
অভীক বিস্মিত হয়ে বলে "মানে? এসব কি প্রশ্ন.... তোর মাথায় কি ঘুরছে বলবি আমায়? "
মেঘলা নির্বিকার হয়ে বলে "বলো না দেখেছো কি ? টিভিতে বা সিনেমায় দেখেছো নিশ্চয় , বাস্তবে দেখেছো ? "
অভীক চিন্তিত সুরে বলে "ন না.. "
মেঘলা আনমনা হয়ে বলে "আমি দেখেছি জানো...  একটা সুন্দর চেহারার মেয়েকে  ভালোবাসার নামে যখন ধর্ষণ করা হয় তখন তার ফর্সা মুখটা কালচে হয়ে যায় , চুম্বনের নামে যখন তার ঠোঁট দুটোতে পাশবিক ভাবে আক্রমণ করা হয় তখন মেয়েটার গোলাপের পাঁপড়ির  মত ঠোঁট দুটো ফুলে যায় , কেটে যায় রক্তাক্ত হয়ে যায় , মেয়েটার শরীরের যেই নরম অংশ কখনো কেও দেখেনি সেই কোমল অংশ অর্থাৎ মেয়েটার ব্রেস্ট এ সেই প্রেমিকের মুখোশধারী ধর্ষকের আঁচড়ে কামড়ে রক্তাক্ত হয়ে যায়   । ফর্সা সেই অঙ্গে রক্ত জমাট বেঁধে বেঁধে বিচ্ছিরি রূপ ধারণ করে । হয়তো আরো অনেক ক্ষতি হয়েছে , হয়তো এমন জায়গায় হয়েছে যেটা ও কাওকে দেখতে পারবে না । কিন্তু আমি ওর হাঁটা  দেখেছি , আমি বুঝেছি আমি চোখে যেটুকু দেখেছি ওর যন্ত্রণা সেই টুকুতেই সীমিত নেই, ওর শরীরের যন্ত্রণা এর থেকে আরো গভীরে...  ।  "
অভীক ভ্রু কুঞ্চিত করে মেঘলার দিকে তাকায় । ওর দুই গালে হাত রেখে বলে "কর কথা বলছিস তুই মেঘা , কর সাথে হয়েছে এমন ? "
মেঘলা সোফা থেকে নেমে দাঁড়ায় । অভীক হাতটা ধরে ওর সাথে নিয়ে যায় । যেই ঘরটায় অভীক আর মেঘলা থাকে তার পাশের ঘরের দরজা খুলতেই অভীক দেখতে পায় অঞ্জনা শুয়ে আছে , ঠোঁটে গালে গলায় কালচে কালচে দাগ , ঠোঁট ভুলে আছে , চোখের তলায় কালি ...
। অঞ্জনা ঘুমিয়ে আছে । অভীক ওকে দেখে মেঘলার দিকে তাকায় , মেঘলা অভীককে বাইরে নিয়ে এসে দরজাটা ঠেকিয়ে দেয় । অভীক নির্বাক হয়ে গিয়েছে , মেঘলা মৃদুস্বরে বলে "সুজয় নামক ছেলেটা অঞ্জনার ব্রেন ওয়াশ করে ওর শরীরের সাথে যা নয় তাই করেছে অভি... অঞ্জনা প্রেমে অন্ধ হয়ে বাঁধাও দেয়নি , একবার অবধি ঠিক ছিল , কিন্তু ছেলেটার চেপে ওরা দুইবার মিলিত হয় আর অঞ্জনা সেটা সহ্য করতে না পেরে জ্ঞান হারিয়েছিল ... ছেলেটা অঞ্জনাকে এই অবস্থায় রেখে পালিয়েছে অভীক... "
অভীক এর চোয়াল শক্ত হাতের মুঠোয় বন্ধ হয়ে এসেছে । দাঁতে দাঁত চেপে বলে "আমি আগেই  সাবধান করেছিলাম , ও শুনলনা আমার কথা .... নিজেকে বিলিয়ে দিলো তো ওই নোংরা ছেলেটার কাছে । এবার যদি ছেলেটা আর ওকে পাত্তা না দেয় তখন... আর পাত্তা দিলেও বা এমন একটা ছেলের সাথে জীবন কাটানো তো সম্ভব না যে নিজের শারীরিক চাহিদা মেটানোর জন্য ওর শরীরটাকে খুবলে খেতেও  দ্বিধাবোধ করে না । "
অভীক রেগে যাচ্ছে দেখে মেঘলা ওকে জড়িয়ে ধরে বলে "শান্ত হও... রাগের মাথায় কিছু ঠিক হয়না । আমাদের ভেবে স্টেপ নিতে হবে ...."
অভীক বলে " শালা শুয়োরটা যদি কলকাতার হতো ওকে রাস্তায় ফেলে মারতাম কিন্তু ব্যাঙ্গালোর থেকে ওকে কি করে হাতে পাবো আমি। কিছু না করতে পারলেও তো শান্তি পাবো না ।  "
মেঘলা বলে " সে সব ভাবার সময় আছে , অভিস থেকে ফিরে কিছু খাওয়া হয়নি তোমার । আগে খেয়ে নাও অঞ্জনা উঠলে একসাথে কথা বলবো ।  "
মেঘলা অভীকের হাত ধরে  ওকে নিয়ে যেতে গেলে অভীক দাঁড়িয়ে পড়ে । মেঘলা ঘুরে বলে "কি হলো খেতে যাবে না ? "
অভীক অস্ফুটে বলে "খুব রাগ হচ্ছে আমার মেঘা , নিজেকে সামলাতে পারছি না আমি ... "
মেঘলা জানে ওর একটা চুম্বনই পারে অভীকের আগ্নেয়গিরি সমান রাগকে  ঠান্ডা করে দিতে । মেঘলা এগিয়ে এসে অভীকের সামনে দাঁড়ায় , অভীকের হাত দুটি নিজের  কোমরে  জড়িয়ে নিয়ে একটা হাত অভীকের মাথার পেছনে রেখে আরেকটা হাত অভীকের কাঁধে রেখে গোড়ালি তুলে প্রেমিকের ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দেয় । দুজনে চোখ বন্ধ করে নেয় অভীকের হাত মেঘলার টি শার্টের ভেতরে মেঘলার উম্মুক্ত পিঠে জায়গা করে নিয়েছে ,মেঘলা অভীকের ঠোঁট দুটোকে  আলতো করে চুষতে থাকে । প্রেয়সীর এমন প্রয়াসে অভীক নিজের ঠোঁটের মাধ্যমে মেঘলার ঠোঁট দুটো ফাঁক করে মেঘলার জিভটা নিজের দুই ঠোঁটের মাঝে চেপে ধরে । দুই জিভের দ্বন্দ্ব চলতে থেকে দুজোড়া ঠোঁট একে অপরকে আয়ত্বে রাখতে চাই । চুম্বন যত গভীর  হচ্ছে শব্দ তত  জোরালো হচ্ছে প্রেয়সীর মধুরস নিতে  ব্যস্ত অভীক, অভীকের ঠোঁটের খেলায় নিজেকে উজাড় করে দিয়েছে মেঘলা । অঞ্জনার ঘুম ভেঙেে গিয়েছে খাট থেকে নেমে দরজা খুলে বেরিয়ে আসতে গিয়ে দেখে সামনেই একে অপরের ঠোঁটের মাঝে বিলীন হয়ে আছে অভীক আর মেঘলা । অভীক যে কতটা অ্যাগ্রেসিভ সেটা জানে অঞ্জনা কিন্তু এখন অভীককে দেখে মনে হচ্ছে ছেলেটা যেনো বরফের চেয়েও ঠান্ডা , সুজয়ের সাথে এর কোন মিল নেই । আর মেঘলা, তাকে দেখে তো মনে হচ্ছে এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ সে । অভীক মেঘলার ঠোঁট থেকে গলায় নেমে আসে , মেঘলা নিজের মাথাটা সামান্য পেছন দিকে  ঝুঁকিয়ে অভিক্কে নিজের গলায় জায়গা করে দেয় ,  নিজের গলায় অভীকের ঠোঁট  আর জিভের ছোঁয়া  পেতেই মেঘলা অভীকের মাথার চুল খামচে ধরে মৃদু শিৎকার করে ওঠে "আহহহ...  "।
অঞ্জনা দরজাটা বন্ধ করতে গিয়েও  পুরোটা বন্ধ করে না , দরজাটা একটু  ফাঁক করে উঁকি দিয়ে ওদের দেখে । অভীক আর মেঘলার এই ভালোবাসা  ভরা মুহুর্ত দেখা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারেনা । এমনভালবাসা দেখতেও ভালোলাগে ।

প্রেমিকা Where stories live. Discover now