খাবার টেবিলে আমাদের পরিবারের সবাই খুব কথা বলে । বিশেষ করে আমার মা সারা দিনের যত ঘটনা ঘটে এবং আমাদের পরিবারের কি কি জিনিস তার পছন্দ নয়, এই সব বিষয়ে বিস্তার আলোচনা করে । আরও ভাল করে বললে তিনি বলে যান আমরা, মানে আমি আর বাবা চুপচাপ শুনতে থাকি । আগে বড় আপু যখন ছিল তখন তারা দুজন কথা বলতো, মাঝে মাঝেই মায়ের সাথে কথা কাটাকাটি লেগে যেত । কিন্তু তার বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর থেকে খাবার টেবিলের উপর মায়ের একক আধিপত্য । আমরা কোন কথাই বলতে পারি না । চুপচাপ শুনে যাই । আমি আর বাবা দুজনেই একটা সত্য আবিস্কার করতে পেরেছি যে চুপ করে থাকলেই শান্তিতে থাকা যায় !
কিন্তু আজ দুইদিন ধরে মা যেন হপ করে বসে আছে, চুপচাপ । কোন কথা বলছে না । কালকে বাবাও বলেই ফেলেছিলো যে এমন চুপচাপ কেন, কিছু যেন ঠিক নেই এমন মনে হচ্ছে । মা তার দিকে এমন চোখে তাকালো যে বাবা আর কথা এগোয় নাই । আজকেও চুপচাপই আমাদের রাতের খাওয়া চলছিলো তখনই মা কথাটা আমাকে বলল
-তুই কি এটাই ঠিক করে রেখেছিস ?
-হ্যা । আমি আমার সিদ্ধান্ত ফাইনাল ।
মা যেন কিছু বলতে গিয়েও বলল না । কেবল আমার দিকে কঠিন চোখে তাকিয়ে রইলো । আমি বললাম
-আমার বিয়ের জন্য যে চাপাচাপি করছো সেটা বাদ দিয়ে দাও । আমি যদি বিয়ে করি তাহলে সুপ্তিকেই করবো । ব্যস । সিদ্ধান্ত ফাইনাল !
আমি আর কোন কথা না বলে আমারও খাওয়ায় মন দিলাম । মনে মনে বললাম যাক ঝামেলা আপাতত শেষ । মা মরে গেলেও কোন দিন সুপ্তির সাথে আমার বিয়ে দিতে রাজি হবে না । এদিক দিয়ে আবার বিয়ের জন্য চাপও দিতে পারবে না । আমি মাঝখান দিয়ে ঝামেলা মুক্ত থাকবো !
আসলে আমি আমার পরিচিত দুজন মানুষের বিবাহিত জীবন দেখে দেখে আমার কেন জানি এই ব্যাপারটার উপর একটা ভয় জমে গেছে । কেবল একটা কথাই মনে হয়েছে যে ঝামেলা যত দেরীতে আসে ততই ভাল । তাছাড়া জর্জ বার্নার স বলেছেন "একজন পুরুষের জীবনের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিৎ যেন সে সর্বাধিক সময় পর্যন্ত অবাহিত অবস্থায় থাকতে পারে" । আমি কেবল মহান ব্যক্তির কথা মানার চেষ্টা করতেছি ।
কিন্তু আমার মা আর বড় বোন কোন ভাবেই এই জিনিস টা মেনে নিতে পারছে না । তার আচরন দেখে আমার এখন কেবলই আমার বিয়ে দেওয়া তাদের জীবনের এখন এক মাত্র লক্ষ্য । আমি কত ভাবে যে এই বিয়েটাকে কাটিয়ে চলতেছি সেটা কেবল আমিই জানি । তারপর গত দুই দিন আগে হঠাৎ করেই ঘটনা ঘটে গেল । আমার মাথায় হঠাৎ করেই বুদ্ধিটা এল ।
অফিসে আমাদের ট্রেনিং চলছিল । সেই ট্রেনিংয়ের একটা অংশে সাইন ল্যাঙ্গুয়েজের একটা পার্ট ছিল । আমাদের সেটা শিখতে হচ্ছিলো । বাসায় এসে প্রাক্টিস করছিলাম । তখনই মা ঘরে এসে জিজ্ঞেস করলো
-কদিন থেকে দেখছি কি হাতের ইশারা দিয়ে কি করছিস ?
-মা বোবাদের ভাষায় শিখছি । সাইন-ল্যাঙ্গুয়েজ ।
-কেন ?
আমি বলতে যাবো যে অফিসে ট্রেনিং চলছে । কিন্তু আমি সেই কথা না বলে অন্য একটা কথা বলে ফেললাম । বলা চলে আমার মনে চট করেই কথাটা আসে । আমি বললাম
-মা বোবাদের ভাষা শিখছি । তুমি তো আমার বিয়ের জন্য উঠে পড়ে লেগেছো তাই ভাবছি সুপ্তিকে বিয়ে করবো ?
-মানে ?
আমি ইয়ার্কির ছলেই বললাম যে হ্যা ! ওকে বিয়ে করবো ঠিক করেছি । ওকে বিয়ে করলে একটা সুবিধা আছে যে আমাকে বাবার মত টাইট হতে হবে না ।
আমার কথা শুনে মায়ের মুখ গম্ভীর হয়ে গেল । আমার দিকে নিশ্চুপ ভাবে কিছু সময় তাকিয়ে রইলো । আর একটা কথা না বলেও তখনই আমার রুম ছেড়ে চলে গেল । আমি মনে মনে হাসতে লাগলাম । প্রথমে আমি ব্যাপারটা হালকা ভাবে নিলেও পরে এই জিনিসটার ভেতরেই আমি একটা চমৎকার সম্ভাবনা দেখতে পেলাম । খুব পরিস্কার ভাবেই বুঝতে পারলাম যে মা কোন দিন সুপ্তিকে আমার সাথে বিয়ে দিতে রাজি হবে না । সেই সুযোগে আমি যদি কোন একটা জোর চালাতে পারি সুপ্তির ব্যাপারে তাহলে মা আমার বিয়ের ব্যাপারেও জোর দেওয়া বন্ধ করে দেবে ।
সুপ্তিকে আমার মা যে অপছন্দ করে, সেটা না । সুপ্তি দেখতে বেশ । তার উপরে আমাদের বাড়িওয়ালার মেয়ে । নম্র ভদ্র খুবই চমৎকার একজন মেয়ে । কিন্তু মেয়েটার একটা সমস্যা আছে । কেবল সমস্যা না, বিরাট সমস্যা । মেয়েটা কথা বলতে পারে না । তাই বলে মেয়েটা জন্ম থেকে বোবা নয় । ছোট বেলায় টনসিল অপারেশন করতে গিয়ে কি একটা ঝামেলা হয়েছিল তারপর থেকেই মেয়েটার মুখ দিয়ে স্বর বের হয়ে না । কেবল এই একটা জিনিস বাদ দিয়ে মেয়েটার বিয়ের জন্য একেবারে আদর্শ একজন মেয়ে । কিন্তু আমি খুব ভাল করেই জানি মা কোন ভাবেই সুপ্তির সাথে রাজি হবে না । এবং এরপর থেকে আমাকে বিয়ের জন্য চাপও দিতে পারবে না ।
সেদিন রাতের বেলা মা আমাকে কথাটা আবার জানতে চাইলো ।
-তুই কি আমার সাথে ইয়ার্কি মারছিস ?
-মা । আমি ইয়ার্কি মারছি না । আমি সিরিয়াস !
মা আমার জবাব শুনে আরও গম্ভীর হয়ে গেল । তারপর থেকেই মায়ের মুখ গম্ভীর হয়েই আছে । আর আমি বিয়ের ঘ্যান ঘ্যান থেকে মুক্তি পেয়ে গেলাম ।
মাস খানেক বেশ ভালই চলতে লাগলো । আমি মহা আনন্দে ঘুরে বেড়াতে লাগলাম । বাসায় বিয়ের জন্য কোন ঝামেলা নেই । মাঝে একদিন বড় আপু এসে খানিকক্ষণ চিৎকার চেঁচামিচি করে চলে গেল তবে আমি সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করলাম না ।
কিন্তু আসল ঝামেলা আমি মাস খানেক পরেই টের পেলাম । একদিন অফিসের জন্য বের হচ্ছি তখনই দেখি বাড়িওয়ালা বাসার সামনে দাড়িয়ে আছে । আমি সালাম দিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিলাম তখনই বাড়িওয়ালা আমাকে ডাক দিলেন । খুবই মোলায়েম কন্ঠে আমার খোজ খবর নিতে লাগলো । আমার বাড়িওয়ালার কন্ঠ শুনেই কেমন জানি সন্দেহ হল । এই বাড়িওয়ালা কন্ঠ হঠাৎ এতো মোলায়েম কেন হল আমি ঠিক বুঝলাম না । আগে তো আমাকে ঠিক দেখেও দেখতো না । অফিস থেকে ফেরার সময় যখন বাড়িওয়ালার বড় ছেলে আমাকে মোড়ের দোকানে ডেকে চা খাওয়ালো আমি তখন আসলেই চিন্তায় পড়ে গেলাম । মনের ভেতরে একটা কু ডাকছিলো সেটা বুঝতে পারছিলাম । কিন্তু কেবলই বারবার মনে হচ্ছিলো যে না, এমনটা কোন ভাবেই সম্ভব না । বাসার খবর বাইরে তো আসার কথা না । তাহলে এরা আমার সাথে এমন আচরন করছে কেন ?
আমি বাসায় এসে খবর শুনে একেবারে ঠান্ডা হয়ে গেলাম । বাসায় এক মাস ধরে আমি মাকে বলে যাচ্ছিলাম যে সুপ্তিকে পছন্দ করি ওকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করবো না, এটা কোন ভাবে আমার বাসার বুয়া শুনেছে এবং খবর বাড়িওয়ালার কানেও দিয়ে দিয়েছে । আমার সাথে বাড়িওয়ালা এবং বাড়িওয়ালার বড় ছেলে এতো চমৎকার আর মধুর ব্যবহার করার কারনটা আমি বুঝতে পারলাম !
এবং সব থেকে বড় ঝামেলার কথা হচ্ছে আজকে আমি অফিস যাওয়ার পরে বাড়িওয়ালারা আমাদের বাসায় এসেছিলো । আর সব থেকে বড় বিপদ আর ঝামেলার কথা হচ্ছে আমার মা নাকি বিয়ের জন্য নিমরাজি হয়ে গেছে । সুপ্তিকে দেখেই নাকি মায়ের মন অনেকটাই গলে গেছে ! কি যে বিপদে আমি পড়তে যাচ্ছি কিংবা পড়ে গেছি সেটা বুঝতে কষ্ট হল না !
মাই গড !
এখন কি হবে আমার !!
মা কেবল আমার দিকে তাকিয়ে বলল যে সে আগে ঠিক বুঝতে পারে নি কিন্তু মেয়েটাকে খুব কাছ থেকে দেখে মায়ের মন নাকি গলে গেছে । চিন্তায় অস্থির হয়ে গেলাম । কি করবো না করবো । নিজের চুপ ছিড়তে ইচ্ছে করলো নিজের কাটা খালে আমি নিজেই পড়তে যাচ্ছি দেখে । কেন যে তখন ঐ কথাটা বলেছিলাম আমি নিজেই জানি না । এভাবে ভয়ে ভয়েই সপ্তাহ খানেক কেটে গেল । আমার প্রতিদিনই কারো না কারো সাথে দেখা হতে লাগলো আর আমি চিন্তায় অস্থির হয়ে গেলাম কি করবো না করবো । কিভাবে এই ঝামেলা কাটাবো !
পরের দিনের কথা । অফিস শেষ করে বের হয়েছি । ঠিক তখন আমাদের অফিসের ডান দিকে চোখ গেল । রাস্তা পার হয়ে চোখ ওপাশে যেতেই মনে হল কি যেন একটা ঠিক নেই । একবার চোখ সরিয়ে নিয়ে আবারও যখন ফিরে তাকালাম তখনই সাদা রংয়ের গাড়িটা চোখে পড়লো । খুব বেশি পরিচিত । বাড়িওয়ালার গাড়ি । আমি আরেকটু চোখ ঘোড়াতেই সুপ্তিকে দেখতে পেলাম । ফুটপাতের উপর এক কোনে দাড়িয়ে আছে । আমার দিকেই তাকিয়ে আছে । ধক করে উঠলো বুকটা ! মেয়েটা সাদা রংয়ের একটা সেলোয়ার কামিজ পরেছে । লম্বা কালো চুল আর স্নিগ্ধ চেহারায় মেয়েটাকে প্রতিমার মত লাগছে !
আমি এর আগে কোন দিনই সুপ্তিকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখি নি আমার দিকে । সত্যি বলতে কি ওর চোখে অন্য কিছু একটা ছিল । আমি যন্ত্রের মত রাস্তার পার হয়ে ওর দিকে এগিয়ে গেলাম । আমি জানি না আমি কি করছি তবুও আমি এগিয়ে গেলাম ওর দিকে । আমার মন কেন জানি বলে উঠলো যে মেয়েটার কাছে যাওয়ার জন্য । আমি নিজের মনভাব দেখে নিজেই খানিকটা অবাক হয়ে গেলাম ।
ওর কাছে এসে দেখি ও লজ্জায় একে বারে লাল হয়ে গেছে । হাতের ইশারায় আমাকে বোঝালো যে ও এদিক দিয়ে যাচ্ছিলো তাই একটু থেমেছে ।
আমি হেসে ফেললাম । বললাম
-সত্যি কি তাই ?
সুপ্তি মাথা নাড়লো । বললাম
-আচ্ছা তুমি যদি আমার সাথে দেখা না করতে আসো তাহলে চলে যেতে পারো । আমিও চলে যাচ্ছি । আর যদি আমার সাথে দেখা করতে আসো তাহলে আমরা ঐ রেস্টুরেন্ট টাতে বসতে পারি ।
তারপরেই আমার মনে হল
আমি কি বলছি ! আর কেনই বা বলছি !
এমন তো কোন ভাবেই বলা উচিৎ হচ্ছে না আমার , কোন ভাবেই এসব কথা বলা ঠিক না হচ্ছে না ।
সুপ্তির চেহারা আমার কথা শুনে আরও বেশি লাল হয়ে গেল । তবে ওর চোখে মুখে যে আনন্দ ফুটে ওঠেছে সেটা স্পষ্ট করেই বুঝতে পালমা । আমি ওদের ড্রাইভার কে বললাম গাড়ি নিয়ে চলে যেতে । আমি ওকে বাসায় নিয়ে আসবো ।
রেস্টুরেন্টে ওকে নিয়ে যখন বললাম সুপ্তি আমার দিকে কেমন চোখে তাকিয়ে রইলো সারাটা সময় । ঘোর লাগা চোখে, আমার নিজের ভেতরেও কেমন একটা পরিবর্তন হয়ে গেল মুহুর্তেই । আমার কেবলই মনে হল এই মেয়েটা কোন ভাবে জানতে পেরেছে আমি ওকে পছন্দ করি, এই মেয়েটার সাথে কথা বলার জন্য সাইণ ল্যাঙ্গুয়েজ শিখেছি । আসল কথা যাই হোক না কেন কিন্তু এমন একটা কথা যে কোন মেয়ে জানতে পারলে বিশেষ করে সুপ্তির মত কেউ জানতে পারলে নিশ্চিত ভাবেই মেয়েটা আমাকে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে ।
আমার ঐ একটা মিথ্যা মেয়েটার চোখে মুখে কি পরিমান আনন্দ এনে দিয়েছে সেটা আমি বুঝতে পারছি খুব ভাল ভাবেই । এখন যদি আমি মেয়েটাকে সত্যি কথাটা বলে দেই তাহলে তাহলে সেই আনন্দ টা ভেঙ্গে চৌরির হয়ে যাবে । সবার উপর মেয়েটা কি পরিমান কষ্ট পাবে সেটা আমি অনুমানও করতে পারছি না । খাওয়া দাওয়া শেষ করে সুপ্তি আমাকে একটা খাম বাড়িয়ে দিল । হাতের ইশারায় বলল আমি যেন রাতের বেলা এটা খুলে পড়ি !
ফেরার পথে রিক্সা করে আসলাম । সুপ্তি আমার পাশে বসে রইলো । একটা সময়ে মনে হল ও যেন খানিকটা কাঁদছে । জিজ্ঞাসা করতেই মানা নেড়ে মানা করলো । কিন্তু ল্যাম্প পোস্টের আলোতে সেই অশ্রু বিন্দু আমার চোখের আড়াল হল না ।
রাতের বেলা ওর খাম খুলে পড়লাম । খুব অল্প কয়েকটা লাইণ । কোন সম্মোধন নেই । হঠাৎ করেই শুরু আবার হঠাৎ করেই শেষ ।
"আমি কোন দিন ভাবিও নি কেউ আমাকে কেবল আমার জন্যই পছন্দ করবে । বাবা তো আমার বিয়ের জন্য ব্যাংকে আলাদা করে টাকা জমা করে রেখেছে । বোবা মেয়েকে কি কেউ টাকা ছাড়া ঘরে তুলবে ?
যখন থেকে জানতে পারলাম যে তুমি আমাকে পছন্দ কর, এই জন্য বিয়ের অন্য সব প্রস্তাব ফিরিয়ে দিচ্ছো আমার সাথে কথা বলার জন্য সাইণ ল্যাঙ্গুয়েজ শিখছো, একটা স্বাভাবিক মেয়েকে বিয়ে করছো না আমাকে বিয়ে করার জন্য তখন .......
সুমন, আমি ঘুমাতে পারছি না । তোমাকে না ভেবে থাকতেও পারছি না । আমি জানি না আমাদের বিয়ে হবে কি না, তোমার মা রাজি হবে না তাও জানি না তবে একটা কথা বলতে পারি যে জীবনে প্রথম আর শেষ বারের মত আমি কেবল তোমাকেই ভালবেসে ফেলেছি । পুরো জীবন ধরেই বাসবো"
চিঠিটা পড়ে কি করবো বুঝলাম না । কেবল নিজেকে ঝামেলা মুক্ত রাখতে আমি যে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছিলাম সেই মিথ্যাটাই সুপ্তিকে এভাবে স্বপ্ন দেখাবে আমি ভাবতে পারি নি কোন দিন । আর এখন যদি এই স্বপ্ন আমি ভাঙ্গি তাহলে এই পাপ আমাকে সারা জীবন তাড়া করে বেড়াবে !
পরিশিষ্টঃ
চোখ না খুলেি বুঝতে পারলাম সুপ্তি বিছানা ছেড়ে উঠে যাচ্ছে । আমি খপ করে ওর হাত চেপে ধরলাম । তারপর এক টান দিয়ে আবারও নিজের কাছে নিয়ে এলাম । চোখ খুলে দেখি আমার দিকে সেই ঘোর লাগা চোখে তাকিয়ে আছে ।
আমাদের বিয়ের প্রায় বছর খানেক হতে চলল অথচ ওর এই চোখের দৃষ্টি এখনও বদলায় নি । আমি এখনও বেশি সময় তাকিয়ে থাকতে পারি না । আমি বললাম
-কই যাও ?
হাত টা ছাড়িয়ে নিলো ও । তারপর হাতের ইশারায় আমাকে বলল যে বেলা হয়ে যাচ্ছে । সকালের রান্না করতে হবে ।
-রাখো তোমার রান্না । মা বাবা গেছে গ্রামের বাসায় । এতো চিন্তা করতে হবে না । আজকে আমরা বাইরে খাবো । আর এখন তুমি আমার সাথে শুয়ে থাকবে । আজ আমাদের ছুটির দিন ।
ও খানিকটা চোখ বড় বড় করে রাগ করার চেষ্টা করলো । বলতে চাইলো যে এখনই ওকে ছেড়ে দিতে হবে কিন্তু কাজ হল না । আমার সাথে কিছু সময় জোড়াজুড়ি করে হাল ছেড়ে দিল ।
তারপর আমার দিকে তাকিয়ে রইলো সেই চোখ নিয়ে । এখন আর ওর হাতের ইশারায় কিছু বলা লাগে না । কেবল চোখ চোখ রেখে থাকলেই হয় । আমি খুব ভাল করেই বুঝতে পারি ওর কথা । চোখে চোখেই আমার অনেক কথা হয়ে যায় ।
আগে যে বিয়ে নিয়ে যে ভয় আমি পেতাম, সুপ্তিকে বিয়ে করে কেবল মনে হয়েছে এতো দিন কেন বিয়ে করে নি । হয়তো ওর সাথে বিয়ে হয়েছে বলেই এমনটা মনে হচ্ছে । আর আমার ভাগ্যেই মনে হয় এমনটা লেখা ছিল । সব কিছুই এমন ভাবেই লেখা থাকে হয়তো !
(কিছু বানান ভুল থাকবে, এই জন্য ক্ষমা প্রার্থী)
BẠN ĐANG ĐỌC
ভালবাসার অনু-গল্প সমগ্র
Lãng mạnআমি সব সময় ভালবাসার গল্প লিখতেই পছন্দ করি । ছোট ছোট এক দুই দৃশ্যের গল্প গুলো পড়তে এবং লিখতে খুবই ভাল লাগে । এইখানে তেমন গল্প গুলোই পোস্ট হবে । প্রত্যেক পর্বে আসবে নতুন নতুন গল্প । ছোট ছোট ভালবাসার গল্প । যখনই লিখবো তখনই পোস্ট করা হবে ! ছোট ছোট গল্প...