মিতু আমাকে দেখে হাসলো। জানতাম ওকে এখানেই পাওয়া যাবে। তাই নামাজ পড়ে সোজা এখানেই চলে এলাম। বাসায় গিয়ে লাভ নেই, কারন সেখানে কেউ নেই। একা একা ঈদ কাটানোর থেকে দিনের শুরুটা মিতুর সাথেই হোক।
আমার দিকে তাকিয়ে মিতু হাত তুলে পাঁচ মিনিট সময় চেয়ে নিল। আমি কেবল হাসি মুখে সম্মতি জানালাম।মিতুর সাথে আমার পরিচয় ফেসবুকে। আমি বরাবরই ডাক্তারদের বেশ পছন্দ করি। বাবার খুব ইচ্ছে ছিল আমাকে ডাক্তার বানানোর কিন্তু আমার এতো পরিশ্রম করার কোন ইচ্ছেই ছিল না, তবে ওদের কাজ কর্ম আমার কাছে বরাবরই ভাল লাগতো। সেই সুবাধেই ওর সাথে পরিচয়। তারপর যখন জানতে পারলাম ওর হাসপাতালটা আমার বাসার কাছেই তখন একদিন চলে এলাম অফিস শেষ করে। মিতু বেশ একটা মেয়ে। টুকটাক কথা বলে বেশ ভাল লাগলো। কেন জানি মনে হল মিতুরও বেশ ভালই লেগেছে আমার সাথে কথা বলে। তারপর থেকেই আমাদের যোগাযোগ খানিকটা বাড়তে লাগলো। যদিও এখনও তুমিতে নামতে পারি নি। আপনিতেই আছি।
রাউন্ড শেষ করে মিতু আমার সামনে এসে দাড়ালো।
-চলুন, কেবিনে গিয়ে বসি।
-এখানকার কাজ শেষ?
-আপাতত। ইমার্জেন্সী রোগী নেই আপাতত। কাজও তেমন নেই।আমি আস্তে আস্তে মিতুর পেছন পেছন হাটতে লাগলাম। আজকে বাসা থেকে ঠিক করেই এসেছি যে মিতুকে মনের কথা বলে দিব। ওকে বিয়ের কথা বলব। দেখি ও রাজি হয় কি না!
কেবিনে বসতে বসতে মিতু একটা বাটি এগিয়ে দিল। তাকিয়ে দেখি সেখানে সেমাই রান্না করা।
মিতু বলল
-আপনার জন্য বানিয়ে এনেছি।
-সত্যি?
-হুম। যখন বললেন যে আপনি বাসায় যাবেন না তখন মনে হল নিয়ে আসি।
-থ্যাংকস।
আমার মনটা আরও একটু ভাল হয়ে গেল। আমি বুকে একটু বল পেলাম। মনে হল কথাটা আজকে বলতেই হবে।
মিতু বলল
-একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
আমি সেমাই মুখে দিতে দিতে বললাম
-হ্যা বলুন।
-আপনার বাসায় তো জানি সবাই আছে। তাহলে বাসায় যান নি কেন?
বললাম
-শুধু এই ঈদে না, গত তিন বছর ধরে যাই না।
মিতু বেশ অবাক হয়ে বলল
-সেকি কেন?
-বাবার সাথে একটা বিষয় নিয়ে আমার একটু ঝামেলা হয়েছিল। সেও জেদি আমিও তাই। তাই....
মিতু খানিকটা সময় চুপ করে থেকে বলল
-কি হয়েছিল? বলা যাবে আমাকে?
-হ্যা। যাবে না কেন! আসলে সেই সময়ে আমি সবে মাত্র চাকরিটা পেয়েছি। তখনও প্রোভেশনাল পিরিয়ডও শেষ হয় নি। বাবা বললেন যে সে আমার জন্য মেয়ে ঠিক করেছে। আমাকে বিয়ে করতে হবে।
-তো আপনার মেয়ে পছন্দ হয় নি?
-ঠিক তা না। আসলে আমি মেয়েকে দেখিই নি। নাম পর্যন্ত জানি না।
-না দেখেই রিজেক্ট করে দিলেন।
-বললাম না, ব্যাপারটা সেরকম ছিল না। আসলে তখন আমি বিয়ের জন্য মানষিক ভাবে প্রস্তুত ছিলাম না। বাবাকে বললাম যে আমি বিয়ে করবো, তুমি যে মেয়েকে পছন্দ করেছ তাকেই করবো কিন্তু এখন না। কিছুদিন পরে। বাবা কিছুতেই শুনতে চাইলো না।
-তারপর?
-তখনও ঠিকই ছিল। একদিন বাবা ফোন করে আমাকে বলে যে মায়ের নাকি শরীর খারাপ। আমি যেন তখনই চলে আসি। বাসায় এসে দেখি মায়ের শরীর ঠিকই আছে, তার বদলে আমাদের বাসা ভর্তি আত্মীয় স্বজন। বাবা আমাকে না জানিয়ে আমাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য ডেকে নিয়ে এসেছে। আমি সোজাসুজি মানা করে দিলাম। বাবাও রেগে গেল। বলল বিয়ে না করলে তার সাথে আমার কোন সম্পর্ক থাকবে না। তখনই ব্যাগ নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে এলাম।
-তারপর?
-তার আর কোন পর নেই। আর কি হয়েছে জানি না। বাবা ফোন দেয় নি আমিও দেই নি।
ŞİMDİ OKUDUĞUN
ভালবাসার অনু-গল্প সমগ্র
Romantizmআমি সব সময় ভালবাসার গল্প লিখতেই পছন্দ করি । ছোট ছোট এক দুই দৃশ্যের গল্প গুলো পড়তে এবং লিখতে খুবই ভাল লাগে । এইখানে তেমন গল্প গুলোই পোস্ট হবে । প্রত্যেক পর্বে আসবে নতুন নতুন গল্প । ছোট ছোট ভালবাসার গল্প । যখনই লিখবো তখনই পোস্ট করা হবে ! ছোট ছোট গল্প...