ওদের গল্প শুরু এখন থেকেই

951 22 2
                                    

-বল মা কবুল!

মাওলানা সাহেব আরও দুইবার কথাটা বলল। আলমগীর হোসেন তার স্ত্রী নীলুফারকে চোখের ইশারা করলেন। তিনি আগে থেকেই স্ত্রীকে খানিকটা বুঝিয়ে রেখেছিলেন। নীলু যদি মুখ দিয়ে কোন কথা বলতে না চায়, কবুল বলতে দেরি করে তাহলে যেন নীলুফার এই কথা উচু কন্ঠে বলে যে মেয়ে কবুল বলেছে।
তাদের সময় এই রকম ঘটনা প্রায়ই ঘটতো। বিয়ের কনেরা মুখ দিয়ে কোন কথাই বলতে পারতো না। তখন পাশে বসে থাকা মা খালারা উচু কন্ঠে বলে দিতো যে মেয়ে কবুল বলেছে। তারা শুনেছে৷
আলমগীর হোসেন তার স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে আছেন। সে খানিকটা মাথা নিচু করে আছে। যেন মেয়ের কথা শোনার চেষ্টা করছে। তিনি তৈরি হয়ে আছেন। নীলুফার যখনই বলবে মেয়ে কবুল বলেছে তখনই তিনি সাথে সাথে আলহামদুলিল্লাহ বলে ফেলবেন। বিয়ে হয়ে যাবে। আর একবার বিয়ে হয়ে গেলে আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে।
এই তো তার স্ত্রী মাথা তুলেছে। তিনি মনে মনে প্রস্তুতি নিলেন। তার স্ত্রী মুখ দিয়ে আওয়াজ বের করতে যাবে তখনই তাকে অবাক করে দিয়ে তার মেয়ে নীতু কথা বলে উঠলো। মাথার ঘোমটাটা একটু উঠিয়ে মাওলানা সাহেবের দিকে তাকিয়ে বলল, আমি এই বিয়েতে রাজি না।

মাওলানা সাহেবের চেহারা দেখে মনে হচ্ছে তিনি যেন নীতুর কথাটা ঠিক বুঝতে পারে নি। তার ৫০ বছরের বিয়ে পড়ানোর ইতিহাসে এমন ঘটনা এর আগে তিনি আর দেখেন নি। বিয়ে পড়ানোর এই সময়ে কোন কনে বলছে সে বিয়েতে রাজি না।
মাওলানা খানিকটা সময় পার করে বলল, মা তুমি বিয়েতে রাজি না?
নীতু শান্ত কন্ঠে বলল, জি না রাজি না৷ আমাকে এখানে জোর করে বসানো হয়েছে।

মাওলানা সাহেব কিছু বলতে যাবে তার আগেই আলমগীর হোসেন হুংকার দিয়ে বলল, বেয়াদব মেয়ে! এক চড় মেরে তোর দাত খুলে ফেলবো৷ কবুল বল।

নীতু এবার সরাসরি নিজের বাবার দিকে তাকালো। আলমগীর হোসেন এবার সত্যিই খানিকটা চমকে গেলেন। নীতু তার পুরো জীবনে কোন দিন তার অবাধ্য হয় নি। তিনি যা বলেছেন তাই শুনেছে। তার দিকে চোখ তুলে পর্যন্ত তাকায় নি৷ আর আজকে তার দিকে শান্ত চোখে তাকিয়ে রইলো। তার চোখে ভয়ের রেস মাত্র নেই।

ভালবাসার অনু-গল্প সমগ্রOnde histórias criam vida. Descubra agora