বিবাহে সমাপ্তি

1K 36 2
                                    

ছুটির দিন গুলোতে সব থেকে বিরক্ত লাগে সকাল বেলা কেউ বাসায় আসলে। সপ্তাহের পাঁচটা দিন খেটে মরি, সকালে ঠিক মত ঘুমাতে পারি না। এই ছুটির দিনেও যদি শান্তিমত ঘুমাতে না পারি তাহলে কেমন লাগে।

কলিংবেলটা সেই কতক্ষণ ধরে বেজেই চলেছে। চোখ মেলে মোবাইল খুজে বের করার চেষ্টা করলাম। প্রায় এগারোটার কাছাকাছি বাজে। এই ছুটির দিনে আবার কে এল?
বুয়া কদিন আগে বাসায় গেছে। বলে গেছে এই মাসে আর আসবে না। আর বুয়ার কাছে ঘরের চাবি আছে। সে বেল বাজাবে না।
তাহলে কে এল?
নাদিমও বাসায় নেই। আর আমার কাছে আসার কথা না কারো। আমি একটু বিরক্ত হয়েই দরজার দিকে এগিয়ে গেলাম। যদি অকাজের কেউ আসে, এমন ধমক দিবো!

হাই তুলতে তুলতে দরজা খুলতেই বিরক্তি প্রবল বিশ্ময়ে রূপান্তর হল। আমি নিজের চোখকে ঠিক মত বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।
বড় চাচা দাঁড়িয়ে আছে।

আমার মনে হল আমি স্বপ্নে দেখছি। এই পৃথিবীতে এখন যদি বড় চাচা কাউকে ঘৃণা করেন, সেটা সম্ভবত আমি নিজে। তিনি বলেছিলেন কোন দিন আর আমার মুখ দেখবেন না। আর সেই মানুষই আমার ঘরের দরজার সামনে। আমি কোন কথা খুজে পেয়ে কেবল তাকিয়ে রইলাম বড় চাচার দিকে। তাকে যে ভেতরে আসতে বলতে হবে সেটাও ভুলে গেছি।
বড় চাচা নিজেই বললেন
-কি এখানে দাঁড়িয়ে রাখবি? ভেতরে আসতে দিবি না?
আমি লজ্জায় পড়ে গেলাম। তারপর জলদি জলদি বললাম
-আরে তা কেন! আসুন!

আমি দরজা ছেড়ে সরে দাড়ালাম। আমার মাথায় তখন কেবল একটাই কথা ঘুরপাক খাচ্ছে। বড় চাচা হঠাৎ আমার বাসায় কেন?
বড় কোন ঝামেলা হয়েছে?
কিংবা অন্য কোন সমস্যা?

গত রাতেও মায়ের সাথে কথা হয়েছে। সমস্যা হলে সেটা আমি ঠিকই জানতে পারতাম। তেমন কোন ঘটনাই ঘটে নি। তাহলে বড় চাচা হঠাৎ আমার বাসায়?

বড় চাচা ঘরের ভেতরে ঢুকলো। আমি দরজা বন্ধ করে তার দিকে ফিরে তাকালাম। চাচা ততক্ষণে সোফার উপর বসে পড়েছে। আমি বললাম
-চা খাবেন?
-কে বানাবে? তুই?
-হ্যা।
-নিয়ে আয়!

আমি টিভির রিমোট টা চাচার হাতে দিয়ে রান্না ঘরের দিকে হাটা দিলাম। আমার এখনও সব কিছু কেমন অবিশ্বাস্য লাগছে। চাচা হঠাৎ করে আমার কাছে কেন? মাকে কি একবার ফোন দিবো?

ভালবাসার অনু-গল্প সমগ্রWhere stories live. Discover now