নিকিতার গল্প

1.3K 45 1
                                    

রুমের চাবিটা হাতে নিয়ে নিকিতা যখন লবির কাছে গেল, আমি ওকে থামালাম। আমাদের পেছনে হোটেলের বয় দাঁড়িয়ে। নিকিতা তাকে ব্যাগ আর চাবি দিয়ে আগে যেতে বলল। আমি খানিকটা বিরক্ত মুখে ওর দিকে তাকিয়ে আছি। ওর ঠোঁটের কালো লিপস্টিক টা আমার বিরক্তিটা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
আমি কিছু বলব, তার আগেই নিকিতা বলল
-রুমে ডাবল বেড। সমস্যা নেই। আমার সাথে ঘুমাতে হবে না তোমার।
-আলাদা রুম নিলে সমস্যা ছিল কি শুনি?
নিকিতা বলল
-আমার রাতে একা ঘুমাতে ভয় লাগে।

আমাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে নিকিতা হাটা শুরু করলো। আমি কিছু সময় বোকার মত লবিতে দাঁড়িয়ে রইলাম। বারবার মনে হচ্ছে যে এই কক্সবাজার ট্যুরে আসা একদম ঠিক হয় নাই। নিকিতার সাথে আসা তো আরও ঠিক হয় নাই।

নিকিতাকে আমি কোন দিনই ঠিক পছন্দ করি নি। পছন্দ না করার কারন ওর উগ্র মেকাপ দেওয়ার অভ্যাস। ঠোঁটে গাঢ় লিপস্টিক যা আমার খুবই অপছন্দ। আর অন্যতম প্রধান কারনটা হচ্ছে ও একজন স্মোকার। বলা যায় চেইন স্মোকার। আমি নিজে সিগারেট খাই না, অন্যের খাওয়াটাও ঠিক আমার পছন্দ না। কিন্তু আমি ওকে পছন্দ না করলে কি হবে, নিকিতা কি এক অদ্ভুদ কারনে আমাকে পছন্দ করে এবং এটা সে আমার কাছ থেকে লুকায় না।

তাই যখন ও জানতে পারলো যে আমি কক্সবাজার আসবো, ও আমার সাথে আসতে চাইলো। মানা করতে পারলাম না কারন ওর কাছে আমি খুব ভাল ভাবে ঋণী ছিলাম। নিকিতা ফিফথ সেমিস্টারে থাকতে আমার খুব বড় একটা উপকার করেছিল। যে কারনে আমি ওর কথাটা ফেলতে পারলাম না। যদিও জানি আমি যদি ওকে নিতে রাজি নাও হই ও ঠিকই আমার সাথে চলে আসবে। সেই ব্যবস্থা করার ক্ষমতা ওর আছে। আইমিন ওর বাবার আছে। তাই মানা করে লাভ হত না। আমি তবুও বললাম
-আমি সিগারেটের গন্ধ একদম সহ্য করতে পারি না। আমার সাথে যেতে হলে সিগারেট খাওয়া চলবে না।
নিকিতা খানিকটা মুখ ভেঙ্গিয়ে বলল
-তাহলে প্রতি সিগারেটের বদলে আমাকে একটা করে চুমু খেও। তাহলে আমি খাবো না সিগারেট। ডিল।

অবশ্য পুরো রাস্তায় ও একটা সিগারেটও খাই নি। মোটামুটি ভালই ছিল জার্নি কিন্তু এখন দুজনের জন্য একটা রুম নিতে দেখে মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল। এমনিতেই আমাদের নিয়ে কম কানাঘুষা চলে না ক্লাসে। এখন যদি জানতে পারে আমরা একই রুমে আছি তাহলে কি কি রিউমার চালু হবে কে জানে!

ভালবাসার অনু-গল্প সমগ্রOpowieści tętniące życiem. Odkryj je teraz