আবির যেনো আজ একটু প্রানখুলে শ্বাস নিতে পারছে। এক অদ্ভুত তৃপ্তি পাচ্ছে আবির। এ তৃপ্তি নিজেকে নতুন করে খুজে পাবার তৃপ্তি।আবির এই ৬ বছরে কখনও গান শোনেনি কারন গান ওর কাছে তিক্ত লাগতো!যে আবির কখনো কলেজের ক্যাম্পাসে গিটার বাজিয়ে বাজিয়ে গান গাইতো আর সবাই মুগ্ধ হয়ে আবিরের গান শুনতো, আবিরের গানের সাথে তাল মেলাতো সেই আবির ই এই ছয় বছরে গিটার হাতে নেওয়া তো দূরের কথা গান গাওয়া তো দূরের কথা গান শোনেই নী।বাস্তবতা কতটা কঠিন হতে পারে সেটা নিজে অনুভব না করলে কেউ উপলব্ধি করতে পারে না আসলে।আবিরের আজ একটু গুনগুন করতে ইচ্ছা করছে, গানের সুর উঠবে নাকি সেটা নিয়ে আবির সন্দিহান কিন্তু চেষ্টা করতে দোষ কোথায়?আবির গেলো গিটার টা ধুলো পড়ে অবস্থা বেহাল হয়ে আছে। আবিরের এতো সময় নেই গিটার পরিষ্কার করার গিটার টা ধরেই খাটের মধ্যে ঝেড়ে দিলো পরিষ্কার চাদরটা মুহূর্তেই ধুলোতে ভরে গেলো।আবির একটু মুচকি হাসলো, এই হাসি কীসের?গিটারের ধুলো পরিষ্কার হয়ে গেছে তার জন্য?আবির গিটার বাজাবে তার জন্য? নাকি আবির আবার জীবনের মানে বুঝতে শিখছে তার জন্য!
আবির গিটার বাজানো শুরু করলো,কিন্তু না আসছে না। আগের মতো সেই স্নিগ্ধ আর মুখর সুর উঠছে না।গিটার ছেড়ে ভাবলো, মিউজিক সিস্টেম দিয়ে একটা গান ই না হয় শুনে নিক।তারপর উঠে প্লে করলো প্রথম একটু ঘ্যার ঘ্যার আওয়াজ করলেও! তারপর মিউজিক প্লেয়ার টা বাজা শুরু করে। গান শুনছে আবির! হয়তো মনে মনে গান গাইছেও এই গানের আওয়াজে অনেকদিন পর যেনো আপন নিবাস তার প্রান ফিরে পাচ্ছে। আজ আবিরের বাবা-মা মহাখুশি কারন তাদের একমাত্র ছেলে আবির স্বাভাবিক হচ্ছে!
খানিকবাদে আবিরে বাবা আশফাক চৌধুরি রুমে আসে। বাবাকে দেখেই আবির গানটা অফ করে দেয়,আশফাক চৌধুরি বলেন শোন বাবা শোন তুই যে এতো তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক হতে থাকবি ভাবতে পারি নাই। আবির মুচকি হাসে! তারপর আশফাক চৌধুরি বলে বিকালে বিয়ে তোর শেরওয়ানি আর শপিং লাগবেতো?যা না গিয়ে নিয়ে আয় সব।আবির কিছুটা স্বাভাবিক থেকেই বলে আমার এখন শপিং করতে ভালো লাগছে না তুমি নিয়ে আসো নয়তো আমি জামিলকে বলে দিচ্ছি ও নিয়া আসবে। আবিরের বাবা হতাশ হয়ে বলে বিয়ের শপিংটা অন্তত কর?
-না বাবা,ভালো লাগছে না এখন শপিং!
আবিরের বাবা একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে বলে আচ্ছা আমিই ব্যাবস্থা করছি।তারপর নিরব হয়ে আশফাক সাহেব ওখানে কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থাকে হয়তো ছেলের মুখে হ্যা শব্দ টা শোনার জন্য।কিন্তু আবির কিছু না বলেই বাইরে তাকিয়ে থাকে। অতএব আশফাক চৌধুরি নিরুপায় হয়ে রুম থেকে চলে যায়!
YOU ARE READING
ভালোবাসার নীড়
Romanceউপরওয়ালা সবার জন্যই সর্বোত্তম কিছু ঠিক করে রেখেছেন। কিন্তু আমরা খানিক মরীচিকার পেছনে ছুটে জীবিনের রঙ হারিয়ে ফেলি। তারজন্য কিন্তু আমরা নিজেরাই দায়ী অধিকাংশে। তাই নিজের জীবন নিজের, নিজের জীবনের রঙ এর দায়িত্ব নিজের। নিজের জীবনকে রঙিন রাখার দায়িত্বও আমা...