ভালোবাসার নীড় : ১২

71 5 0
                                    

হিমাদ্রি সিড়ি দিয়ে নিচে নামতে নামতেই দেখলো। তার শশ্বুর-শ্বাশুরি বসে গল্প করছে। হিমাদ্রি নিচে নামতেই আসফাক সাহেব বললো কী রে মা তুই এতো সকালেই উঠে পড়লি? আবির কী ঘুমাচ্ছে? - আসলে বাবা ঘুম ভেঙে গেছিলো তাই ভাবলাম আজ নাহয় একটু তাড়াতাড়িই উঠি। আর আবির ঘুমাচ্ছে, ওনার তো আবার বেলা না হলে ঘুম ভাঙে না। আর কেউ ডেকে জাগিয়ে দিলেও নাকি মেজাজ বিগড়ে যায়।দাদিমা বলেছিলো, তাই আর ডাকি নী।আশফাক সাহেব আর তার স্ত্রী একসঙ্গে হেসে উঠলেন। আসফাক সাহেব বললো, মেয়ে তো আমার ছেলের দায়িত্ব বেশ ভালো ভাবেই নিয়েছে দেখছি। হিমাদ্রি এবার একটু আলহাদি হয়েই বললো, নিতে হবে না কার পুত্রবধু দেখতে হবে তো। এবার একসাথেই হেসে উঠলো সবাই। তারপর হিমাদ্রি আর তার শ্বশুর-শ্বাশুরি চা খেতে খেতে কিছুক্ষন গল্প-গুজব করলো। হিমাদ্রির চোখ ঘড়ির দিকে পড়লো সাড়ে নয় টা বাজে। হিমাদ্রি তার শ্বাশুরিকে জিজ্ঞেস করলো। আম্মু,আবির ঘুম থেকে ওঠে কয়টায়? একেবার ১১-১২ করে ওঠে। এতোদিন তো বাড়িতেও থাকতো না, খেয়ে অফিস যেতো নাকি কে জানে? হিমাদ্রি বললো, আরে আম্মু এতো চিন্তা কীসের? আমি আসছি না? আচ্ছা দাড়াও এখন নাস্তা করবা তো তোমরা? আমি তোমাদের ছেলেকে নিয়ে আসছি একসাথে নাস্তা করবো সবাই। আশফাক সাহেব আর তার স্ত্রী তো বেশ অবাক, আসফাক সাহেব বললো। না রে, মা সকাল সকাল চিল্লা-চিল্লি করবে তোর উপর। কিছুদিন সময় দে ও আরেকটু স্বাভাবিক হোক। ৬-৭ বছরের অভ্যাস তো, আমি চাচ্ছি না তুই সকাল সকাল বকা শুনিস ওর কাছে। আমাদের একসাথে নাস্তা করার শখ নাহয় আরো কয়েকটাদিন পরে পূরন করিস। একয়টা বছর তো ওকে ছারাই করেছি,আরো নাহয় কয়েকটা দিন অপেক্ষা করবো।হিমাদ্রি একদম আসফাক সাহেবকে আশ্বস্ত করে বললো, না আব্বু ও আজকে তোমাদের সাথেই নাস্তা করবে। আমি ওকে ছাড়া নাস্তা করবো না। আর কে চিল্লা-চিল্লি করবে? কে বকা দিবে আমায়? আমিও চিল্লাইতে পারি, আমিও বকা দিতে পারি। ও বকলে আমিও বকবো, আর আমি একা না পাড়লে আমার দলে তো তোমরা দুজন আছোই। কথা বলেই হেসে উঠলো সবাই। আসফাক সাহেব বললো, আবার কী? আমি আমার আম্মুর দলে সব-সময়।

হিমাদ্রি রুমে চলে গেলো। গিয়ে কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে আছে, কীভাবে জাগাবে আবিরকে? বক্সে গান চালিয়ে দিবে? গ্লাস দিয়ে গায়ে পানি ঢেলে দিবো নাকি? পা টেনে নিচে নামিয়ে দেই? সুর-সুরি দিবো? এসব ভাবতে ভাবতে হিমাদ্রির মাথায় আসলো সহজ উপায়টাই তো মাথায় আসে নী। ধুর আবিরকে ডাকলেই তো হচ্ছে!তারপর না উঠলে নাহয় এর থেকে একটা উপায় প্রোয়োগ করা যাবে।

ভালোবাসার নীড়Where stories live. Discover now