#নীরবতা #১৪

449 19 2
                                    



খানিকক্ষন থম ধরে মেসবাহর ফ্ল্যাটের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকার পর মুন্নি সরকার পা বাড়ালো নিজের ফ্ল্যাটের দিকে। বিয়ে তো সে দেবেই দেবে। এতে যা হবে দেখা যাবে। তাছাড়া মেসবাহই বা কে বিয়ের প্রস্তাবে মানা করে দেয়ার? দরকার পড়লে গ্রামে গিয়ে উল্লাসীর বাবামার সাথে কথা বলবে সে। তবুও এই মেয়েকে হাতছাড়া করবে না। গভীর কিছু নিঃশ্বাস ছেড়ে ফোন হাতে নিয়ে মায়ের নাম্বারে ডায়াল করলো মুন্নি সরকার। অস্থির মনে অপেক্ষা করতে লাগলো ওপাশ থেকে মায়ের একটি সাড়ার।
-"আম্মা তুমিই কাল সকাল সকাল রওনা হবা। কাল দুপুরের মাঝে তোমাকে আমার বাসায় আমি দেখতে চাই। তুমি এখনি ভাইয়ারে বলো টিকেট করে রাখতে। নয়তো ঘুম নষ্ট করে ভোরে উঠে তোমাকে বাসে তুলে দেবে না ও।"
একরাশ বিরক্তি প্রকাশ করে ওপাশ থেকে শায়লা বেগম বললেন,
-"সে কী বাড়িতে আছে! পামু কই তারে আমি! রাত একটার আগে বাড়িতে আসে সেই মহারাজা?"
-"ফোন দাও। ফোন দিয়ে বলো।"
-"কেন? এত পারাপারি কিসের? কাল কেন তোর ওইখানে যাওয়া লাগবো?"
-"আরে আম্মা! তোমারে যে মেয়ের কথা বলছিলাম, ওই মেয়েকে দেখার জন্য কাল আসবা তুমি।"
-"কেন? কালকের পর কী ওই মাইয়া উইড়া যাইবো?"
চোখমুখ কুঁচকে ফেললো মুন্নি সরকার। ছটফটিয়ে বললো,
-"উফফ! তুমি বুঝবা না! তোমারে কাল আসতে বলছি তুমি আসবা। ব্যস!"
-"আচ্ছা.. দেখি।"
-"দেখাদেখি না। তোমার আসতেই হবে। আমার পছন্দ করা মেয়েকে একবার দেখলেই তুমি ফিদা হয়ে যাবা। বলবা, এরেই আমার ছেলের বউ হিসেবে চাই।"
মেয়ে যে দুই ডিগ্রি বাড়িয়ে কথা বলে তা অজানা নয়। তাই তাতে একটা পাত্তা দিলেন না শায়লা বেগম। উদ্বিগ্ন গলায় বললেন,
-"সবই বুঝলাম! কিন্তু একা একখান মাইয়া একই বাড়িতে আরেক পোলার লগে থাকে। জিনিসখান কেবা না?"
-"আরে আম্মা! ওরা তো ভাইবোন। তুমি ওভাবে ভাবছো কেনো? তাছাড়া আমি মেয়েকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, পছন্দ টছন্দ আছে নাকি বা গ্রামের কারো সাথে কিছু ছিল নাকি। কিন্তু মেয়ে তো মেয়েই! মাশাল্লাহ.. এসব বোঝেই না ও। প্রেম পিরিত তো দূরের কথা।"
-"ঠিকাছে.. ভালো হইলেই ভালো। তুই তাইলে রাখ। আমি শীতলরে ফোন দেই। দেখি টিকিটের কথা কই।"
-"আচ্ছা, রাখছি তাহলে। তুমি কিন্তু ভোরের বাসের টিকেট কাটাবা।"
ফোন রেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো মুন্নি সরকার। যাক! একটা কাজ তো এগিয়ে রাখা হলো। বাদবাকি গুলো না হয় ধীরেসুস্থে হবে!

নীরবতাWhere stories live. Discover now