সকাল থেকেই প্রচুর ব্যস্ততার মাঝে সময় কাটাচ্ছে উল্লাসী। অসুস্থতা কাটিয়ে উঠেছে সে দিন পাঁচেক হলো। ঠিক অসুস্থতাও নয়, উনি বলেছেন মাসিক কোনো অসুস্থতা নয়৷ তবে যেটাই হোক সেটি ভেজাল ছাড়া দ্বিতীয় কিছু মনে হয় না তার। তল পেটে ব্যথা, হাটতে অসুবিধা, কোমর টেসে আসা.. এত কিছুর মুখোমুখি হবার পরও এই প্রথমবার নিজেকে বেশ ফুরফুরে লাগছে তার। উৎফুল্ল মনে ব্যাগের সব কাপড়চোপড় বের করে একেএকে আলমারিতে গুছিয়ে রাখলো উল্লাসী। তারপর পা বাড়ালো রান্নাঘরের দিকে। দুপুরের রান্নাটা দ্রুত সেরে মুন্নি ভাবির কাছে যেতে হবে। দুজনে মিলে আজ সিনেমা দেখার কথা রয়েছে। তবে তা মোটেও জানানো যাবে না উনাকে। মুন্নি ভাবির বারণ আছে। সব কথাই নাকি স্বামীকে জানাতে নেই। তাতে স্ত্রীর গুরুত্ব তাদের কাছে কমে যায়। ভাতের চাল ধুয়ে তা চুলোয় দিল উল্লাসী। তারপর ফ্রিজ থেকে মাছের পোটলা বের করে বেসিনের দিকে এগুতেই কানে এল কলিংবেলের শব্দ। নিশ্চিত মুন্নি ভাবি ডাকতে এসেছেন তাকে। তবে রান্নাই তো হয়নি এখনো! সব ফেলে এখন কী করে যাবে সে সিনেমা দেখতে? নিরাশ মনে মাছের পোটলা ভিজিয়ে রেখে দরজার দিকে এগুলো উল্লাসী। তবে দরজা খোলার মাত্র নিমেষেই মুখের ভঙ্গির পরিবর্তন হয়ে এল তার। মুন্নি ভাবি নয়.. মৌমিরা এসেছে!
প্রতি রাতের উল্লাসীর ভিন্ন ভিন্ন আবদারগুলোকে বেশ উপভোগ করে মেসবাহ। তার বলা কথা এবং কার্যক্রমগুলো বেশ আনন্দ দেয় তাকে। মাঝেমাঝে আবদারগুলো নিয়ে কোথাও একটি ভয় কাজ করলেও তা উপেক্ষা করে উল্লাসী বোঝানোর চেষ্টা করে সে। যা কিছুসময় পেরে না উঠে পিচ্চি আদর দিতেই হয় তাকে। তাছাড়া সে নিজে যেখানে শক্ত আছে সেখানে উল্লাসীর ছোট ছোট আবদার পূরণ করাই যায়! তবে সমস্যা সেখানে নয়, সমস্যা অন্যখানে। উল্লাসীকে একা বাসায় ফেলে হাসপাতালে এসেও কাজে মন দিতে পারে না মেসবাহ। উদ্ধত মন সারাক্ষণ আনচান করে মেয়েটির জন্য। কখন রাত হবে সেই প্রহর গুনে। মেয়েটি মায়াজালে যে বেশ শক্তপোক্ত করে আঁটকে পড়েছে সে তা বুঝেও মনকে হাজারটা কারণ দেখিয়ে বুঝ দেয় মেসবাহ। কেনো যেনো বিবেক কোনোভাবেই সায় দেয় না এ কথায়...