Chapter-3 | Part-2

63 1 0
                                    

বিকাশ ঠিক করল একদিন আড্ডার মাঝে বিষয়টা তুলবে, তাতে দেখা যাক সুস্মিতাদি কি বলে? আর যাই হোক মিথ্যে বলবে না, সে বিশ্বাস বিকাশের আছে।

আধঘণ্টার ভিতরে অফিস কনফারেন্স সংক্রান্ত মেল হাওয়ায় ভর করে পৌঁছে গেল সঠিক ঠিকানায়। বিকাশ আগেই জবাব তৈরি করে রেখেছিল, দশ মিনিট অপেক্ষা করে পাঠিয়ে দিল। ফোনে টেক্সট করে জানিয়ে দিল সুস্মিতাকে। তার উত্তরে--সন্ধ্যায় বাড়িতে নিমন্ত্রণ। পাঁচ মিনিটের ভিতর প্রিয়বাবুর জরুরী তলব বিকাশকে, তাঁর ঘরে আসার জন্য। বোঝা যাচ্ছে ঘটনাগুলো ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় চলছে।

বিকাশ দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকতেই প্রিয়বাবুর প্রথম কথা, "এটা তুমি কি করলে?"

প্রশ্নটা যে একেবারে বুঝতে পারেনি বিকাশ তা নয়, তবুও না-বোঝার ভান করে বলল, "কেন? কি হল প্রিয়দা?"

"সিঙ্গাপুর যাওয়া বাতিল করলে কেন?"

"আমার এখানে অন্য কাজ আছে, তাছাড়া ..."

প্রিয় মজুমদার নিজের চেয়ারে একটু উঁচু হয়ে বসে বললেন, "তাছাড়া কি?" বিকাশের দিকে কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকার পর যখন তার উত্তর পেলেন না, তখন ধৈর্য হারিয়ে আবার বললেন, "তোমার জবাব আগে শুনি।"

বিকাশ মাথা নিচু করে বিনয়ের সাথে বলল, "আপনি যখন যাচ্ছেন তখন আমার আর দরকার কি?"

প্রিয়বাবু আক্ষেপ করে বললেন, "আমার সাথে একবার কথা বলার প্রয়োজন মনে করলে না, সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলে!"

বিকাশ প্রিয়বাবুর মুখোমুখি সামনের চেয়ারে বসে আছে। ঘরে এয়ারকন্ডিশনারের হাওয়ায়, খাঁচায় বন্দী পাখীর মৃদু ডানা ঝাপটানোর শব্দ কানে আসছে, তাতে নীরবতার গভীরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগের মতো গল্প বা আড্ডার পরিবেশ এখন আর নেই। কাজের কথা ছাড়া কারও মুখেই কোন কথা থাকে না। কথার কচকচি যে কত জরুরী তা অনুভব করা যায় নৈঃশব্দ্যের মাঝে বসে থাকলে। দু-মিনিটের নীরবতা কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেয়। পরিবেশ ক্রমশ ভারি হয়ে উঠছে, বিকাশের মনে হচ্ছে কোন রেলস্টেশনের ওয়েটিংরুমে বসে আছে। ঘড়ির কাঁটা যেন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে, জোর করে সময়কে স্থির করে রাখা হয়েছে।

সাপলুডোWhere stories live. Discover now