Chapter-9 | Part-5

40 1 0
                                    


পাল তোলা নৌকোয় ভেসে প্রিয়বাবু চললেন পার্টী করতে। গত রাতের প্রিয়বাবুর সাথে এই মুহূর্তের প্রিয়বাবুর অনেক তফাৎ। গতকাল তাঁর হৃদয় জুড়ে বিরাজ করছিল শুধুই শূন্যতা। শূন্য স্থান ভরাট করতেই হবে, প্রকৃতির অমোঘ নিয়ম; কাজেই কলকাতা থেকে কল্পনার ডানা মেলে উড়ে এসে তাঁর হৃদয় জুড়ে বাস করছে সহধর্মিণীর সুপ্ত, গুপ্ত ভালোবাসা।

প্রত্যেকবারই পার্টী খুব জাঁকজমক করে হয়, তবে এবার আরও বড়ো করে ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিদেশ থেকে আনা সাহেবদের ইমপ্রেস করতেই হয়তো ভাড়া করা হয়েছে সিঙ্গাপুরের সব থেকে নামী হোটেলের ব্যঙ্কোয়েট হল। ঝাঁ চকচকে পরিবেশে পা দিতেই প্রিয়বাবুর বুক একটু হলেও কেঁপে উঠেছিল। আগে সবসময় সুস্মিতা সাথে থাকত তাতে আলাদা আত্মবিশ্বাস পেতেন। যাইহোক, ঢোকার সাথে সাথে সাদর অভ্যর্থনা, ফুলের বাহার, আর মিষ্টি সৌরভে মন মাতোয়ারা।

হলের একদিকে লম্বা টানা বার। লাইভ ব্যান্ড। অপূর্ব আলোর বিন্যাস। মাথার ওপর বিশাল ঝাড়বাতি। অতিথিদের অনেকেই প্রিয়বাবুর পরিচিত কাজেই সহজেই কথাবার্তা শুরু হয়ে গেল। সিঙ্গাপুরের দৈনিক কাগজের বেশ কয়েকজন সাংবাদিক উপস্থিত থাকায় তাদের সাথেও আলাপ জমে উঠল। এক পেশার মানুষ সহজেই মিশে যেতে পারে। হাতে হাতে হুইস্কি, ভডকা, ওয়াইন, শেরী ঘুরছে তার সাথে আছে নানা ককটেল। স্ন্যাক্সের রকমারি ডিশের শেয নেই, যে যার পছন্দ মতো তুলে নাও। সুন্দরি মহিলারও অভাব নেই, তদারকিতে তাঁরাও আছেন। অতিথিরা একে একে এসে পৌঁছলেন। মালিকরাও হাজির সাথে কনসালটেন্সি গ্রুপের কর্তাব্যক্তিরা।

সময়ের সাথে তাল রেখে রাত বাড়তেই পার্টী জমে উঠল। এতক্ষণ কারও কণ্ঠস্বর সেভাবে শোনা যাচ্ছিল না; পানীয়ের প্রভাবে নিজস্বতা ফিরে পাচ্ছে সবাই। রকমারি আলো, মিউজিক, আর নেশার ঠাসবুনটে মেজাজ বাঁধা শুদ্ধ সুরে। মাঝে মাঝেই সুন্দরী মহিলাদের মিষ্টি হাসির মধুর মূর্ছনা ঝাড়বাতিকে দুলিয়ে দিয়ে মনে করিয়ে দিচ্ছিল--'নাইট ইজ ইয়ঙ্গ।' প্রিয়বাবুর তিন নম্বর চলছে, সব মিলিয়ে ভালোই লাগছে। মনে মনে ভাবছেন, 'দ্বিতীয় হানিমুন এখানে করলে কেমন হয়? খরচ নিশ্চিতভাবে অনেক বেশী, কিন্তু নিখরচায় কল্পনা করতে বাধা কোথায়?'

সাপলুডোOpowieści tętniące życiem. Odkryj je teraz