রাজনৈতিক নেতা-মন্ত্রীদের সাথে অবাধ মেশামিশির ফলে সুস্মিতার মনেও রাজনীতির ছলাকলা জ্ঞানে বা অজ্ঞানে অনুস্যূত হয়ে গিয়েছে অনেক আগে থেকেই। নিজে খুব ভালো করেই জানেন যে, ইদানীং রাজনীতি মানে দলাদলির চোরাবালি। যে কোনদিন হঠাৎ তলিয়ে যাবার সমূহ সম্ভাবনা। আবার প্রতি মুহূর্তের টানটান উত্তেজনাও বেশ উপভোগ করেন; নেশার উপকরণ বললেও বোধহয় ভুল বলা হবে না। সব থেকে বড়ো কথা--সুস্মিতা ব্যবসাদার, কাজেই খুব ভালো জানেন কখন কার কাছাকাছি থাকতে হয়, আর কখন কাকে সময় বুঝে ঝেড়ে ফেলতে হয়।
দীপাদের বাড়িতে রাতে বিকাশের নিমন্ত্রণ। রাত বারোটায় দীপার জন্মদিনের উৎসবের শুভসূচনা হবে। প্রিয়বাবু কলকাতায় নেই, তার ওপর কাগজে যা লেখা বেরুচ্ছে, তাতে নিঃসন্দেহে তিনি বিরক্ত বোধ করছেন। তার মলিন ছায়া দীপাদের পারিবারিক পরিবেশে পড়তে বাধ্য। সেই আলো-আঁধারিতে আনন্দ উৎসবের রোশনাই চাপা পড়ে যেতে বেশী সময় লাগবে না, তা বিকাশের জানা। সেই গুমোট আবহ থেকে কি করে তাদের রক্ষা করা যায়, এবং দীপার মুখে হাসি ফোটান যায় সেটাই তার কাছে প্রধান চ্যালেঞ্জ। কারও সাথে খোলাখুলি আলোচনা করতে পারছে না বলেই, সে ব্যাকফুটে।
বছরে একবারই জন্মদিন পালন করা হয়, কাজেই সেদিনটা যাতে কিছুতেই বাকী দিনগুলোর ভিড়ে মিলেমিশে একাকার না হয়ে যায়, তা খেয়াল রাখা অবশ্য প্রয়োজন, বিশেষ করে জন্মদিন যখন দীপার। কিছুদিন আগে দামী উপহার কিনে রেখেছে বিকাশ। দীপা ব্র্যান্ড সম্বন্ধে সবিশেষ সচেতন, তাই শহরের সবচেয়ে নামী দোকান থেকেই কিনেছে, বাড়তি কোন ঝুঁকি নেয়নি।
রাত ন'টা অবধি অপেক্ষা করে দীপা ফোন করল বিকাশকে, "ব্যাপার কি? এখানে আসার কথা কি ভুলে গেছ? আমার জন্মদিন, আর আমাকেই বারবার ফোন করে মনে করাতে হবে?"
বিকাশ জানে তখনি দীপাকে শান্ত না করতে পারলে পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যাবে, তাই সাথে সাথে বলল, "আমি অফিসে বসে কল্পনা করার চেষ্টা করছিলাম, তুমি আজ কোন ড্রেসটা পরবে?"
বিকাশ ভাবতেই পারেনি শব্দগুলো ম্যাজিকের মতো কাজ করবে। দীপা বিগলিত হয়ে প্রশ্ন করল, "বল তো কোনটা?"
ESTÁS LEYENDO
সাপলুডো
Ficción GeneralAmbitions and dreams vis-a-vis reality and corporate politics.