Chapter-7 | Part-2

36 1 0
                                    

বিকাশের সিঙ্গাপুর না আসার সিদ্ধান্ত যে তার নিজের নয়, তা প্রিয়বাবু শুরু থেকেই আঁচ করেছিলেন। তাঁর বিচক্ষণতা দিয়ে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, এর পিছনে নিশ্চিতভাবে সুস্মিতার বদ বুদ্ধি কাজ করছে। প্রিয়বাবু দাবার চালে এগিয়ে থাকার জন্য কখনো মেয়েকে বাড়িয়ে দিয়েছেন, আবার কখনো বৌ-এর ওপর ভরসা করে নিশ্চিন্ত থেকেছেন। কিন্তু প্রতিপক্ষ যেখানে সুস্মিতা, সেখানে দীপা পেরে উঠবে কি করে? মিতাদেবী একদিন প্রিয়বাবুর ওপর সন্দেহ প্রকাশ করে সরাসরি প্রশ্নও করেছিলেন, "তোমার আসল উদ্দেশ্য কি বলত?"

প্রিয় মজুমদার অবাক হবার ভান করে উত্তর দিয়েছিলেন, "কি বলছ কি? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।"

মিতাদেবী ব্যঙ্গ করে হেসে জবাব দিয়েছিলেন, "জাগা মানুষকে জাগানো যায় না জানি, তবে তোমায় সাবধান করে দিচ্ছি--মেয়ের দিকে হাত বাড়িও না।"

"ছিঃ,ছিঃ,ছিঃ...কি বলছ মিতা? তুমি তোমার কথা ফিরিয়ে নাও।"

"যদি না নি, কি করবে তুমি?"

প্রিয়বাবুর বুক কেঁপে উঠেছিল। স্ত্রীর কাছে ধরা পড়ে গিয়েছেন ভেবে ছলনা করে উত্তরে বলেছিলেন, "তোমার প্রতি আমি অন্যায় করেছি তা মানছি, কিন্তু তার জন্য আমি ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি।"

মিতাদেবী প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে বলেছিলেন, "আর সুস্মিতার সাথে? ভিক্ষার ঝুলি হাতে কার কাছে যাওনি তুমি? তুমি সাধু নও, তুমি ভিখারি। তোমার লোভ দিন দিন বেড়ে চলেছে। আমি বেশ বুঝতে পারছি, যেহেতু তুমি সুস্মিতার সাথে রাজনীতির প্যাঁচানো পথে পেরে উঠছ না, তাই দীপাকে এগিয়ে দিতে চাইছ। সুস্মিতার জায়গায় নিজের মেয়েকে ঠেলে দিতে তোমার হাত কাঁপবে না তা আমি খুব ভালো করে জানি।"

প্রিয় মজুমদার ফিরে এলেন হোটেলের বিছানায়। সাদা ধবধবে চাদরে মোড়া নরম আরাম কিভাবে মুহূর্তের মধ্যে পরিবেশকে পালটে দিয়েছিল তা ভেবে নিজের অবাক লাগল। মনে মনে ঠিক করলেন--শেষ পর্যন্ত খেলে যাবেন তাতে ফল যাই হোক না কেন! জীবনে উন্নতি করতে গেলে চারপাশের সবাইকে সবসময় খুশী করা যায় না—সময়বিশেষে ভুলকে অপ্রিয় সত্য মনে করে মেনে নিতে হয়। জীবন যার কাছে যেভাবে ধরা দেয়, তাকে সেভাবেই সাড়া দিতে হয়। টালবাহানা করে শেষমেশ কোন লাভ হয় না, বরং যন্ত্রণা বাড়ে।

সাপলুডোDonde viven las historias. Descúbrelo ahora