খাবার টেবিলে বসে কুশলাদি বিনিময় হয়। কথায় কথায় জয়নালের ব্যবসায়ের কথা তোলেন শাতিরা বেগম। জাহিন সাহেব বলেন,
– একটু মন্দা চলছে। ঠিক হয়ে যাবে, সময় লাগবে।
– ফতুর হইয়া যাবে তো এদ্দিনে। বিশাল লোকসান দিচ্ছে। লাস্ট চালানে নাকি মালও খারাপ পড়ছে।
বোনের গলায় শঙ্কা টের পান জাহিন সাহেব।
– এখন যেই অবস্থায় আছে, সবকিছু বৌয়ের হাতে।
শ্বাশুড়ির সিরিয়াস গলা শুনে নিজের গলায় ভাত আটকে যাবার যোগার সেতুর।
– কোন হুজুর এটা? নোয়াপুরি?
জাহিন সাহেব জিজ্ঞেস করেন।
– কি নামে ডাকে জানিনা, বড় পীর।
– সামিতুন্নেছা, তোমার হাতেই এখন সব।
মামা বাঁয়ে তাকিয়ে বলেন। তার বলার ধরণে কাঁধে আরো চাপ অনুভব করে সেতু।
– তাও ঠিকনা। সব তো ওনার হাতে, মানুষ অছিলা।
শাতিরা বেগম বলেন।
– তা হইল। কিন্ত খোদা কি বলেছে, যে চেষ্টা করবে তার সঙ্গে আমি আছি। কি বল, বৌমা?
– জ্বি মামা।
নিচু গলায় বলে সেতু।
– কি জানি রে ভাই। বৌ তো পালাইছিল, কাল আনছি ধইরা।
– কি? কার সঙ্গে?
– ওই বাপের বাড়ি গিয়ে বইসা ছিল। আইনা বই-টই পড়তে দিছি, বুঝাইতেছি।
– তাই, সেতু? স্বামী-শ্বাশুড়ির কথার বাইরে যেওনা, লানত পড়বে।
গলা মোটা করে বলেন মামাশ্বশুর।
– ভুল হয়ে গেছে মামা, আর হবেনা।
মিনমিন করে বলে সেতু।
– কথা শুনতেছ এখন?
– জ্বি।
– হুম, দেখব কেমন শুনতেছ।
মাথা নাড়েন মামাশ্বশুর।
– তোর ছোটটারে যে হুজুরেরে দিয়ে করাইছিলি, উনি নাই?
শাতিরা বেগম জিজ্ঞেস করেন।
– উনি তো ঢাকায় আসেনা, খবর পেয়ে খুলনা নিয়ে গিয়েছিলাম। সাতদিন ছিলাম, ফিরে এসেই শুনি শিপমেন্ট চলে গেছে। আট মাসে প্রথম শিপমেন্ট। পুরা লস কাভার।
– হুম, শুনছি অনেক বড় হুজুর। এখন কই উনি?
– ওনার বয়স হয়েছে, রিটায়ার্ড। ছেলে পীরালি নিয়েছে।
– কেমন?
আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞেস করেন শাতিরা বেগম।
– অত ভালনা রেপুটেশন। দশজনে একজনের কাজ হয়। কবিরাজিতেও নাকি সুবিধার না।
– হুমম.. বাপের নাম বেইচ্চা খায় তাইলে।
মাথা ঝাঁকিয়ে বলেন শাতিরা বেগম।
– সালামআলাইকুম মামা, শইলটা ভাল?
দাঁত ভাসানো হাসি দিয়ে হাসুর মা তরকারির বাটি নিয়ে এগিয়ে এসেছে।
– ভাল, কি খবর তোমার?
জাহিন সাহেব হেসে জিজ্ঞেস করেন।
– জ্বে, ভালা।
– খান মামা, চিংড়ি পাতুরী টেস হইছে।
বেড়ে দিতে দিতে বলে হাসুর মা।
– তুমি কেমন করে জানলা, চুরি করে খাইছ?
– আমি রানছি, জানুমনা?
– তাই বলো।
হাসেন জাহিন সাহেব।
– শাক-মাছ খান, শইল্লে তাকাত হইবো। ভাবীসাব তো কিছুই খায়না। মামার লগে বইয়া শরম পাইছে।
সেতু মুখ তুলে হাসুর মায়ের দিকে চেয়ে লাজুক হাসে।
– লন, লালশাক লন। এক্কেবারে খালি পেডে ছেঁচা পড়লে লইতে পারবেন না!
অদ্ভুত শোনায় কথাটা। চোখ তুলে আবার তাকায় সেতু। হাড় বেরোনো গাল উদ্ভাসিত করে তার দিকে চেয়ে আছে মহিলা।
– হইছে, লইয়া খাইতে দে। দুপুর বেলা গরমের মধ্যে ভরা পেটে শরীল চলবেনা পরে।
শাতিরা বেগম হাসুর মার খাবার ঠেলা থামিয়ে বলেন।
– হ, তাও ঠিক।
পিছিয়ে যায় গৃহকর্মী।
– জাহিন গেছে ঘরে?
খাওয়া শেষ হলে বাসনপত্র ধুয়ে ড্রইংরুমে ফিরতে শাতিরা বেগম বৌকে জিজ্ঞেস করেন।
– জ্বি, শুয়ে রেস্ট নিচ্ছে দেখেছিলাম।
– যাও তাইলে, ভিতরে যাও। দরজা লাগাইয়া দিও।
– আমি যাব? কারেন্ট আছে তো, ফ্যান চলছে।
– না, তোমার পাংখা বাওয়া লাগবেনা। তুমি গিয়া একপাশে শুইয়া পড়। মামা জানে কি করা লাগবে।
– বিছানায়? মামা তো ঘুমিয়ে পড়েছে মনে হয়।
– না না, ঘুমালে হবে কেমনে? আগে ডাক দিয়ে তুলে নিও। একসপ্তা নাই বাকি, প্রস্ততির সময় অল্প। মামা যা যা শিখায় মনে করে শিখে নিবা।
– কি শিখাবে মামা?
– সময় কম, একদিনে যা পারে। তুমি কথা শুনবা, তাহইলে আগাবে। হাতে-কলমে না শিখলে টাইম মত পারবানা।
– হাতে-কলমে? আম্মা, আমি তো বই দেখে শিখছি।
– বই পড়া ভাল। দোয়া-দুরুদগুলা পড়বা, দেখবা মনে আছে নাকি। খালি বই পড়ে শিখা যায়? বই পড়ে কেউ সাতার শিখছে কোনদিন?
– বইটা নিয়ে যাব?
– না, ওইটা নিজে নিজে পইড়ো। মামা যা বলে শুনবা। এই কাইৎ হইতে বললে এই কাইৎ, ওই পাও উচা করতে বললে ওই পাও। বুঝছ?
সেতু নার্ভাসভাবে দাঁতে শাড়ির আঁচল কাটতে কাটতে মাথা নাড়ে।
– আসো, তোমার কাপড়-চোপড় ঠিক করে দেই।
শাতিরা বেগম বৌকে নিয়ে রুমে চলে যান। সেতু শঙ্কা নিয়ে জিজ্ঞেস করে,
– মামা কি গায়ে হাত দিবে?
শাতিরা বেগম সন্তস্ত্র সেতুর দিকে একবার চোখ তুলে তাকান। দৃঢ় গলায় বলেন,
– সব দিবে। হাসুর মা বালতি ভইরা রাখবে। বাইর হয়ে গায়ে পানি ঢাইলা নিবা!
YOU ARE READING
কমিউনিটি সার্ভিস (১৮+)
Fantasy🔥🔥বোম্ব🔥🔥 তৈরি হয়ে যান এক অন্যরকম যৌন জগতে ভ্রমনের জন্য। যতই ভেতরে প্রবেশ করবেন ততই আশ্চর্য হয়ে যাবেন, একদম নিশ্চিত।