পর্ব ১০

162 12 0
                                    

বিকেল বেলার রোদ এত মিষ্টি লাগে কেন? এই রোদে যেনো শান্তি বসবাস করে। তারান্নুম হাঁটুর উপর মাথাটা এলিয়ে দিলো। পাশের বাড়ির ছাদে বাচ্চারা ছুটোছুটি করছে। মোহাম্মদপুরের সবথেকে বড় ময়দানে ছেলেরা ক্রিকেট খেলছে প্রতিদিনের মত। শীতের দিনগুলো বিদায় নিতে শুরু করেছে। চারিদিকে লেগেছে বসন্তের ছোঁয়া। গাছে গাছে ফুটতে শুরু করেছে রঙ বেরঙী ফুলের কলি। মনে মনে লাগছে নতুন নতুন রঙের স্পর্শ, হচ্ছে অনুভূতিদের কথপোকথন।

মৃদু মৃদু পদধ্বনিদের শব্দে চমকে গিয়ে পেছনে ফিরে তাকালো তারান্নুম। তৃণা আর সাফায়েত এসেছে। তৃণার হাতের ছোট্ট ট্রেতে তিনটা কাপ। তারান্নুম দু'জনের দিকে তাকিয়ে হাসলো। দাঁড়িয়ে গিয়ে বললো,

-"আজ হঠাৎ ছাদে এলেন যে সাফায়েত ভাই?"
-"দেখতে এলাম।"

সাফায়েতের কথায় তারান্নুমের চোখজোড়া পিরিচের আকার ধারণ করলো। কোনোমতে বললো,

-"বু-বুঝলাম না৷ কী দেখতে এসেছেন?"

সাফায়েত তার হৃদয়ে গেঁথে যাওয়া হাসি হাসলো। অবাক নয়নে তারান্নুম বেহায়ার মত চেয়ে থাকলো সাফায়েতের দিকে বোনের উপস্থিতি অগ্রাহ্য করে। জগৎ যেনো থমকে গেছে তার জন্য। তার নিজস্ব জগতে হারিয়ে যায় সে এই ছেলের মায়াভরা মুখ দেখে, প্রতিনিয়ত তার কথা ভেবে ভেবে। সাফায়েত অতিব নম্র সুরে বলে উঠলো,

-"প্রকৃতি দেখতে এলাম তারান্নুম।"
-"ওহ আচ্ছা।"
-"কেন? তুমি কি ভেবেছিলে?"
-"কিচ্ছু ভাবিনি সাফায়েত ভাই। আপনিই একটু বেশী ভাবেন।"
-"তাই নাকি? আমার জানামতে আমি কিছুই ভাবছিলাম না। তবে এখন ভাবতে বাধ্য হচ্ছি।"
-"কি?"
-"অনেক কিছু।"

লজ্জায় তারান্নুম অন্যপাশ ফিরে গেলো। দু'জনের ঠোঁটের কোণ থেকে তখন ও হাসি যেতে চাইছেনা। এই অনুভূতি কেমন অনুভূতি? কেন এই অনুভূতি হাসায় কাঁদায় মানুষকে প্রতিনিয়ত? কতটা ক্ষমতা আছে এই বোবা অনুভূতিদের মানুষের জীবন এভাবে নিয়ন্ত্রণ করার?

তৃণা দু'জনের কাণ্ড দেখে হাসছে একদিকে দাঁড়িয়ে। তার হাসিতে যেনো মুক্তা ঝড়ছে৷ বিকেলের পড়ন্ত রোদে তার এলোমেলো সোনালী চুল চিকচিক করছে। আস্তে আস্তে হেঁটে গিয়ে রেলিঙের ওপর ট্রে রেখে নিজের জন্য একটা কাপ তুলে নিলো। কিছুটা দূরে এসে হালকা চেঁচিয়ে বললো,

দুই মঞ্জিলের গল্প(completed ✅)Opowieści tętniące życiem. Odkryj je teraz