ভিড় ঠেলে ভেতরে পৌঁছুতেই তারান্নুম শাড়ির আঁচলখানা কাঁধের ওপরে এনে দিলো। তার আরো আগেই পৌঁছাবার কথা। কিন্তু শাহনাজের ঘরে গিয়ে সব কাজে সাহায্য করতে গিয়েই দেরী হয়ে গেছে। পরনে তার হালকা কাজ করা পেঁয়াজি শাড়ি, শাড়িটা নন্দিনীর মায়ের। হাতে পড়েছে দুটো বালা, কানে শ্বেত পাথরের দুল। মুখে হালকা প্রসাধনী, সাথে খোঁপায় তার জুড়েছে সুগন্ধি গাঁজরা। তার লাবণ্যতা যে কাউকে ভাবতে বাধ্য করবে সে কেমন ঘরের মেয়ে! এদিক ওদিক একবার তাকিয়ে কাকে যেনো খুঁজলো। কারো দেখা না পেলেও নন্দিনীর চেহারাখানা ঠিকই দেখল সে। হাত উঁচিয়ে নন্দিনী ডাকতেই সে চলে গেল।-"তারান্নুম! তোমায় কি যে ভালো লাগছেনা...ভাষাই নেই বলার।"
নন্দিনীর নাটুকে পংক্তি শুনে তারান্নুম হাসল। একদফা চোখ বুলালো তারান্নুম সামনে থাকা সুন্দরী রমণীর পা থেকে মাথা অব্দি। পরনে তার বেনারসি বর্ডার দেয়া ছাই আর গোলাপি মিশেলের মুগা শাড়ি। শাড়ির সাথে মিল রেখে হাতভর্তি গোলাপি চুড়ি। গলায় সাদাসিধে একটা নেকলেস আর পড়েছে কানেরদুল। কোঁকড়ালো কেশগুলো ছড়িয়ে আছে তার সারা পিঠময়। সেই কেঁশে আটকা দুটোমাত্র লাল গোলাপ। দামী পারফিউমের মিষ্টি ঘ্রাণ ভুরভুর করে ভেসে আসছে নন্দিনীর গত্র থেকে। তারান্নুমের জোর গলায় বলতে ইচ্ছে হল, 'কারো কোনো অধিকার থাকে এতটা সুন্দর লাগার? এসব তো ভালো নয়! একজন মেয়ে হয়েই যে আমি আরেক মেয়ের প্রেমে পড়ে গেছি!' কিন্তু সে বলল না। শুধু নন্দিনীর কাছে এসে বলল,
-"এই বিয়ের চাঁদ যদি শাহনাজ আপু হয়, তাহলে শুকতারা আপনি।"
মিষ্টি লাইনটা নন্দিনীর কানে যেতেই সে লজ্জায় লাল হয়ে জড়িয়ে ধরল তারান্নুমকে। এই শাড়ি নামক বস্তুতে কি আলাদা কিছু থাকে যা একটা নারীকে এতটা মাধুর্যময়ী করে তোলে? থাকে কি কোনো বিশেষ আলাদা কোনো রং,গন্ধ?
নজর তার শুধুই সাফায়েতকে খুঁজছে। নন্দিনীর কি তা জানা নয়? কনুই দিয়ে তারান্নুমের পেটে গুতো মেরে বলল,
-"তোমার সাহেব আজ ভীষণ ব্যাস্ত! বান্ধবীর নিজের ভাই না থাকলে যা হয় আর কি। তিনজনই চুটিয়ে কাজ করছে!"
KAMU SEDANG MEMBACA
দুই মঞ্জিলের গল্প(completed ✅)
Romansaসময়কাল ২০০০ সনের আশে পাশেই। কিছু সুখবতীদের গল্পের মাঝে ঢাকা পড়ে যায় দুঃখবতীদের গল্পগুলো। দুই দুঃখবতীর আপ্রাণ চেষ্টা এক হওয়ার। কিন্তু হায়, কেউ কি এটুকু ও বুঝেনি যে সমাজ ভালোবাসাকে খুনের মত পাপ বানিয়ে দেয়? যতদিন ঘনায়, ততই কেন দুঃখদের ভেলা চেপে বসে দুঃ...