কোনদিকে দিন যাচ্ছে কোনদিকে রাত যাচ্ছে তার হুশ নেই তারান্নুমের। সে হয়ে আছে বন্দী এই চার দেয়ালের ঘরে। হ্যাংলা গড়নের মেয়েটা শুকিয়ে এ ক'দিনে যেনো আরো কাঠ হয়ে গেছে। তার মনে প্রাণে বসবাস সাফায়েতের বছরের পর বছর ধরে। এ কথা এতদিন শুধুই তৃণা জানত। কিন্তু শাহেদুল আলম জানার পর থেকে তার জীবন আর যেনো জীবনের দশায় নেই।
যে মেয়েকে না দেখলে দিন যেতো না শাহেদুল আলমের, সেই মেয়ের থেকেই পুরোপুরি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন তিনি আজ। তার মেয়েটা ভেতরে ভেতরে মরছে। কিন্তু এখন দয়া মায়ার ছিটেফোঁটা দেখা যাচ্ছেনা মানুষটার মনে বা মুখে। দিনের পর দিন ঘরের কোনো এক অবহেলিত আসবাবপত্রের মত ফেলে রেখেছেন মেয়েটাকে ঘরে বন্দী করে। না দেখতে পারছে সে খোলা আকাশ, না বলতে পারছে কারো সাথে মুখ ফুটে দু'টো কথা। তৃণা ও খুব বেশী থাকতে পারেনা ইদানীং বোনের পাশে। থাকার অনুমতি নেই তার। আজকাল শাহেদুল আলম আগের মত দেরী করে বাড়ি ফেরেন না। হুটহাট যেকোনো সময় ঘরে চলে আসেন নিজ থেকে দরজা খুলে। দুই কন্যাকে এক সাথে দেখে ফেললে ভারী বিপদ এসে পড়ে তাদের ঘাড়ে।.
সাতটা দিন চলে গেল আজ মিলিয়ে। কিন্তু দেখা মিললো না তারান্নুমের। অস্থিরতা জায়গা করে নিয়েছে সাফায়েতের মাথায় আর মনে। এই সাতদিনে এমন একটা দিন ও যায়নি যেদিন সে বাড়ির সামনে যায়নি। বরং চ সে ওখানে ঘড়ি ধরে প্রতিদিন এক ঘণ্টা মেয়েটার অপেক্ষা ও করেছে। এভাবে কি আর দিন যায়? ভালোবাসার মানুষটিকে না দেখে ক'দিনই বা থাকা যায়?
কাটা মুরগির মতো ছটফট করা সাফায়েত পরদিনই বিকেল বেলায় পৌঁছে গেল পুরাতন ঠিকানায়। কাকতালীয় ভাবে তখনই সেখানে দেখা মিললো তৃণার। কাঁধে ব্যাগ, মাথায় ওড়না পেঁচানো। সাফায়েতের ভ্রু-জোড়া কুঁচকে গেল দৃশ্যটা দেখা মাত্রই। তারান্নুম মাথায় কাপড় দিলেও, তার ছোটবোনকে আজ অব্দি সাফায়েত বা বিল্ডিং এর কেউই ত্তজর দিতে দেখেনি। ভীষণ অপরিচিত ঠেকলো ব্যাপারটা তার কাছে। বিলম্ব না করে সে তৃণাকে ডাকল। ঘাড় ঘুড়িয়ে বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে আছে সে। তার মনে হচ্ছে বিরাট বড় এক ভ্রমের মাঝে আছে সে। নিজের মনে ফোঁড়ন কেটে বলল, 'এসেছেন অমবস্যার চাঁদ! এদিকে নদী ভেঙে সমুদ্র হয়ে গেছে অথচ উনার খেয়ালই নেই!' সাফায়েত আবারো ডাকলো তাকে হাতের ইশারায়। ডানে বামে একবার তাকিয়ে নিয়ে গপগপিয়ে পা চালিয়ে চলে এলো। মেয়েটা সাফায়েতকে অবাক করে দিয়ে তার এক হাত ধরে সটানে চলে এলো বাড়ির উল্টোদিকে থাকা কুরচি ফুলের গাছ নিচে। ভয় পেয়ে ছেলেটা এক ঝটকায় নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে হাতটাকে বুকের কাছে নিয়ে গেলো।
BẠN ĐANG ĐỌC
দুই মঞ্জিলের গল্প(completed ✅)
Lãng mạnসময়কাল ২০০০ সনের আশে পাশেই। কিছু সুখবতীদের গল্পের মাঝে ঢাকা পড়ে যায় দুঃখবতীদের গল্পগুলো। দুই দুঃখবতীর আপ্রাণ চেষ্টা এক হওয়ার। কিন্তু হায়, কেউ কি এটুকু ও বুঝেনি যে সমাজ ভালোবাসাকে খুনের মত পাপ বানিয়ে দেয়? যতদিন ঘনায়, ততই কেন দুঃখদের ভেলা চেপে বসে দুঃ...