পর্ব ১২

140 6 0
                                    

গোটা একটা দিন সাফায়েতের সাথে কাটিয়ে সন্ধ্যা নাগাদ ঘরে ফিরলো তারান্নুম। কিন্তু ঘরের দরজা খুলতেই চমকে না গিয়ে পারলোনা সে। ভর সন্ধ্যাবেলা ঘরের সবকটা বাতি নেভানো। কখনো এমনটা হয়না। জ্বলছে শুধুমাত্র রান্নাঘরের বাতিটা আর মা বাবার রুমের টিমটিমে বাতিটা। কিছু বুঝে উঠার আগেই সেকেন্ডের মধ্যে ছুটে এলো তৃণা। বোনের হাত ধরে হাঁপাতে হাঁপাতে বললো,

-"আপা! তুই ছিলি কোথায়?"
-"কেন?"
-"ইশ! বলনা?"
-"সাফায়েত ভাইয়ের সাথে ছিলাম।"
-"কাণ্ড ঘটে গেছে রে। বিরাট কান্ড।"
-"কি হয়েছে?" শান্ত গলায় জানতে চাইলো তারান্নুম।

-"অফিসে যাওয়ার সময় আমাদের পাশের বিল্ডিংয়ের লীলা আন্টির সাথে দেখা হয়েছিলো বাবার। উনি আজ সকালে তোকে আর সাফায়েত ভাইকে একসাথে দেখে ফেলেছিলো এক রিক্সায় যেতে। বাবাকে বলে দিয়েছে।"
-"হায় আল্লাহ!" মাথায় হাত দিয়ে বললো।

আলতো করে ঢোক গিলে বললো,

-"বাবা এসেছে?"
-"বাবা সেই সকাল থেকে ঘরে। অফিসে যায়নি আজ, রাস্তা থেকেই ফিরে এসেছে। কিচ্ছু মুখে নেয়নি সকাল থেকে।"
-"এখন কি অবস্থা রে?"
-"দেখেই বোঝা যাচ্ছে ভীষণ রেগে আছে। কি হবে কে জানে!"

সারাদিন ঘুরাঘুরির পর ক্লান্তিতে তার চোখের পাতা গুলো বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম প্রায়। শাওয়ারের নিচে দাঁড়াতেই চোখ দুটো বুজে ফেললো। নল দিয়ে ঝড়ঝড় করে বেরিয়ে আসা পানি তার চুলের সাথে রোমাঞ্চকর আলিঙ্গনে মেতে আছে। মতার মাথার ওপর তলোয়ার ঝুলছে, কিন্তু তার মাথায় শুধু আজকের দিনটাই ঘুরছে। সাফায়েত কি যেনো বলছিলো? ভেবেই মুচকি হেসে সে পূণরায় ফিরে গেলো সাফায়েতের সাথে কাটানো মূহুর্তদের আসরে।

-"তুমি কি আমার উপর রেগে আছো?"

গহীন অরণ্যের দিকে তাকিয়ে তারান্নুম নাক টানলো। গালে আবির্ভূত হওয়া নয়ননীর আলতো করে মুছে খানিক্ষণ চুপ করে রইলো। হাতের অঙ্গুলি নিয়ে হেলাফেলা করতে করতে বললো,

-"আপনি ভালোই জানেন আমার কি হয়েছে।"
-"হয়তো।"
-"হয়তো বলবেন না। হয় হ্যা বলবেন, অথবা না।"
-"আচ্ছা।"
-"আচ্ছা আচ্ছা করবেন না তো সাফায়েত ভাই। তখন আপনাকে আমার আহম্মক ও মনে হয়।"

দুই মঞ্জিলের গল্প(completed ✅)Onde histórias criam vida. Descubra agora