খুলনা গিয়ে পৌঁছায় তারা প্রায় সোয়া একটায়। খুব একটা উন্নত না জায়গাটা। ঢাকা শহরের তুলনায় এখানটায় হোটেল নেই বললেই চলে। কষ্টশিষ্ট করে একটা ছোট্ট লজ পাওয়া গেল, কিন্তু দুই রুম নেয়া সম্ভব না! তারান্নুমকে একটা রুম নিয়ে দিয়ে সে রুমের বাইরের বেঞ্চিতেই বাকি রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু মেয়েটা রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আবারো বের হয়ে আসল। সাফায়েত তো ভূত দেখার মতো করে চমকে উঠল।-"তুমি রুমে গিয়ে ঘুমাও। এখানে কি করছো? রাত হয়েছে তো অনেক।"
-"হোক না! আপনিও তো ঘুমোচ্ছেন না।"খুব একটা মশা নেই এখানে। কিন্তু কি যেনো কামড়ে দিয়েছে। আহত জায়াগাটায় চুলকাতে চুলকাতে সাফায়েত হেসে বলল,
-"রুম একটাই তো! আর আজকের রাতটাই শুধু। কাল তো কাজ হলে চলে যেতে পারব আমরা।"
তারান্নুম দু'হাত এক করে দরজায় হেলান দিয়ে বলল,
-"হ্যা! এইটাই রাত। আর মাত্র কয়েক ঘন্টা। ঘুমিয়ে সময় নষ্ট করে লাভ আছে বলুন?"
চিন্তার রেখা স্পষ্ট সাফায়েতের কপালে। দাঁড়িয়ে গিয়ে বলল,
-"সে কি! না ঘুমোলে করবে কি?"
-"আজ সারারাত আমরা গল্প করব এখানে বসে। রাস্তায় গিয়ে হাঁটতেও পারি। এসময় রাস্তায় কেউ নেই!"তারান্নুমের প্রস্তাবটা সাফায়েতের মনে ধরল খুব। বাধ্য ছেলের মতো হ্যা বলতেই হল তাকে। এই মেয়ের সাথে সময় কাটানোর লোভ সে একটুও যে সামলাতে পারেনা! পিচঢালা রাস্তা শেষ হয়ে যায় হাঁটতে হাঁটতে। নুড়ি পাথরের রাস্তায় একসময় এসে পা ব্যাথা হতে শুরু করে। কিন্তু তাদের কথার অন্ত নেই! উচ্ছ্বাসিত দু'টো মন এলোপাথারি ছুটে বেড়াচ্ছে রাস্তার এদিক সেদিক। বলছে অহেতুক কথাবার্তা। উড়ছে কথামালারা হাওয়ায়, অনুভূতিরা চড়ে বেড়াচ্ছে মেঘের ভেলায়।
সেদিন সাফায়েত আর তারান্নুম সকালের নাস্তা সেরেই বেরিয়ে যায় শিহাবকে খোঁজার উদ্দেশ্য। প্রথমে অফিসে যায় যেটার ঠিকানা আগের অফিস থেকে এনেছিল সাফায়েত। সেখান থেকে বাড়ির ঠিকানা পায় অনেক হাতেপায়ে ধরে। তারা কি না আবার কর্মচারীদের ঠিকানা দিতে চান না। শুক্রবার না হলে অফিসেই দেখা হতো শিহাবের সাথে। কিন্তু ঠিকানায় খুঁজতে গিয়ে ও তারান্নুম আর সাফায়েত ঝামেলায় পড়ে গেল। নতুন শহর, নতুন অলিগলি, নতুন সবকিছু! অনেকের থেকেই জিজ্ঞেস করে। কিন্তু কেউ ঠিকঠাক বলেনা। খুঁজতে খুঁজতে বিরক্ত হয়ে তারান্নুম একসময় গাছের নিচে বসে পড়ে। সূর্য তখন মাথার ওপর আকাশের বুক চিরে দাঁড়িয়ে আছে। নিজের একহাত কপালে রেখে বলল,
ESTÁS LEYENDO
দুই মঞ্জিলের গল্প(completed ✅)
Romanceসময়কাল ২০০০ সনের আশে পাশেই। কিছু সুখবতীদের গল্পের মাঝে ঢাকা পড়ে যায় দুঃখবতীদের গল্পগুলো। দুই দুঃখবতীর আপ্রাণ চেষ্টা এক হওয়ার। কিন্তু হায়, কেউ কি এটুকু ও বুঝেনি যে সমাজ ভালোবাসাকে খুনের মত পাপ বানিয়ে দেয়? যতদিন ঘনায়, ততই কেন দুঃখদের ভেলা চেপে বসে দুঃ...